জ্বর-ব্যথায় প্যারাসিটামল, ব্যথানাশক
জ্বর-সর্দি হলে, কী ব্যথা-বেদনায় প্যারাসিটামল খেয়ে নিলেই হয়—এ কথা সবাই জানে৷ প্যারাসিটামলের আসল নাম এসিটামিনোফ্যান, এমনিতে এর বড় ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই৷ কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে এটি যকৃৎ অকার্যকর পর্যন্ত করে দিতে পারে৷ যাঁদের আগে থেকে যকৃতে সমস্যা আছে (হয়তো তিনি নিজেই জানেন না), মদ্যপান করেন যাঁরা বা নানা ধরনের ওষুধ খান, তাঁদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে এই সাধারণ ওষুধটি৷ না বুঝে প্রায়ই খাওয়া হয় নানা ধরনের ব্যথানাশকও৷ বিশেষ করে বাত ব্যথার রোগীরা এগুলো খেতেই থাকেন৷ বিশ্বব্যাপী কিডনি বিকল হওয়ার একটি বড় কারণ হলো ব্যথানাশক ওষুধ৷ ব্যথানাশকে পাকস্থলীর আলসারও হয় অনেকের৷ হতে পারে এ থেকে রক্তক্ষরণ৷
গ্যাস হয়েছে?
গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়েই চলেছেন দিনের পর দিন৷ না খেলে পেটে গ্যাস হয়, ঢেকুর ওঠে, খারাপ লাগে৷ কিন্তু জানেন কি, সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ওমিপ্রাজল এক বছরের বেশি টানা খাওয়ার কারণে অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে বলে প্রমাণিত হয়েছে৷ এ ছাড়া এটি পাকস্থলীতেও সমস্যা করতে পারে, যা থেকে হতে পারে আলসার, ডায়রিয়ার মতো সমস্যা৷
অ্যাসিডিটি হলে এ ছাড়া খাওয়া হয় অ্যান্টাসিড-জাতীয় বড়ি বা সিরাপ৷ অ্যান্টাসিডের উপাদান ভেদে কয়েকটি সমস্যা তৈরি করতে পারে৷ যেমন: রক্তচাপ বাড়াতে পারে, অন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজের শোষণ কমে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, কিডনি পাথরের ঝুঁকি৷ মিল্ক অব ম্যাগনেিশয়াম ডায়রিয়ার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তা ছাড়া বয়স্ক ও হৃদরোগীদের জন্য বেশি ম্যাগনেশিয়াম ভালো নয়৷ যেকোনো অ্যান্টাসিডই অন্য ওষুধের কার্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে৷
হাড় মজবুত করতে ক্যালসিয়াম
বয়স হলে হাড় ক্ষয় হবে, আর হাড় মজবুত করতে খেতে হয় ক্যালসিয়াম—এ ধারণা থেকে মধ্যবয়স্ক ও বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতিদিন ক্যালসিয়াম বড়ি খাওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি৷ কিন্তু এটি বেশি ও দীর্ঘদিন খাওয়ার কারণে হৃদরোগ-স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে৷ এ ছাড়া কিডনি পাথরের ঝুঁকিও বাড়ায়৷ হাড় ক্ষয় প্রতিরোধে দৈনন্দিন খাবার থেকে যথেষ্ট ক্যালসিয়াম গ্রহণের দিকে মনোযোগ দিন৷
মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল

0 comments:
Post a Comment