আমরা অনেক সময় বাঁকা হয়ে, কুঁজো হয়ে, গুটিসুটি মেরে বা কখনো উপুড় হয়ে ঘুমাই। কখনো টিভি দেখতে দেখতে সোফায় শুয়ে পড়ি, সেখানেই ঘুমিয়ে যাই। এগুলো কি আদৌ ঠিক?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব প্রাত্যহিক কর্ম বেঠিক হলে তার জন্য বেশ চড়া মাশুলই দিতে হয়। বেশির ভাগ মেরুদণ্ড ও পেশিজনিত ব্যথা-বেদনার মূল কারণ হলো আমাদের শোয়া-বসাসহ দৈনন্দিন কাজকর্মের কিছু মন্দ অভ্যাস।
আমেরিকান চিরোপ্র্যাকটিক অ্যাসোসিয়েশন দুই ধরনের ঘুমানোর পদ্ধতিকে ভালো বলছে। চিত হয়ে শোয়া এবং কাত হয়ে যেকোনো একদিকে ফিরে শোয়া। তবে এর মাঝেও অনেক কিন্তু আছে। আসুন, জেনে নিই ঘুমানোর কিছু সঠিক কায়দাকানুন।
ঘুমানোর জন্য মোটামুটি শক্ত বিছানা বা গদিই ভালো। বেশি নরম তুলতুলে বিছানায় শুলে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক ‘কার্ভ’ বা বক্রতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বালিশের পুরুত্ব হতে হবে স্বাভাবিক। খুব মোটা নয়, খুব পাতলাও নয়। বালিশের সঠিক পুরুত্ব বুঝতে চাইলে বালিশে মাথা দিয়ে পাশ ফিরে শোবেন, দেখুন মুখটা বিছানার সঙ্গে সোজা বা সমান্তরাল আছে, নাকি উঁচু বা বেশি নিচু হয়ে গেছে। যে বালিশে মুখ বিছানার মোটামুটি সমান্তরাল থাকবে, সেটি আপনার জন্য সঠিক বালিশ।
চিত হয়ে শোবার কারণে অনেকে নাক ডাকে, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে; বিশেষ করে মোটা মানুষদের। চিত হয়ে ঘুমানো মেরুদণ্ডের জন্য ভালো হলেও, তাঁদের তা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। পাশ ফিরে শোবার ফলে পাকস্থলীর ওপর চাপ পড়ে ও গলা জ্বলে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যায়। যাঁদের এমন হয় তাঁরা বেশি সময় বা শুরুতেই ডান দিকে শোবেন না। যাঁরা পাশ ফিরে ঘুমাতে অভ্যস্ত, তাঁরা দুই হাঁটুর মাঝে একটা কোলবালিশ নিতে পারেন। বিজ্ঞানীদের মতে, শোবার সবচেয়ে খারাপ পদ্ধতি হলো গুটিসুটি ও গোল হয়ে শোয়া।
ঘুমানোর জন্য সব সময় আপনার শোবার ঘর, বিছানা ও বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। সোফায় বা যেখানে-সেখানে শুয়ে পড়াটা কোনো ভালো অভ্যাস নয়। শুয়ে অথবা আধশোয়া হয়ে টিভি দেখা, লেখালেখি, কম্পিউটারে কাজ করা এড়িয়ে চলুন। এগুলোর জন্য চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করুন। অভ্যাসগুলো রপ্ত করতে পারলে হাড় ও পেশিজনিত ব্যথা অনেকটাই দূর হয়ে যেতে পারে।
সূত্র: লিভস্ট্রং ডটকম।
পরামর্শ:
১. যাঁরা পিঠের ব্যথায় ভুগছেন, তাঁরা গদির নিচে একটা শক্ত বোর্ড রাখতে পারেন।
২. উপুড় হয়ে ঘুমানো মেরুদণ্ড ও স্নায়ুরজ্জুর জন্য খারাপ। এতে পাকস্থলীর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়।
৩. রাতে কয়েকবার পাশে ফেরা ভালো। এতে একদিকের হাত ও পায়ের ওপর চাপ কমে।
৪. গর্ভবতী মায়েদের বাঁ কাত হয়ে শোয়া ভালো। এতে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে রক্তসঞ্চালন বাড়ে।
0 comments:
Post a Comment