বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণ উদ্যোক্তা, লেখক ও বক্তা সাবিরুল ইসলাম লিখছেন প্রথম আলোয়। ‘স্বপ্ন নিয়ে’তে প্রকাশিত হচ্ছে তাঁর কলাম
হ্যালো বাংলাদেশ! ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন’ ক্যাম্পেইন নিয়ে আমি আবার বাংলাদেশে পা রেখেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য এক মাসে সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় এর প্রচারণা চালানো। নিজের কাজ নিয়ে পূ্র্বপুরুষের দেশে আবার ফিরে আসতে পেরে আমার ভীষণ ভালো লাগছে।
দ্য ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন বাংলাদেশ-এর মিশন ২৬ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে রোটারি ক্লাব অব ঢাকা রেডিয়ান্টের সহযোগিতায়। ঢাকায় আমাদের লক্ষ্য অন্তত ২০টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। ঢাকা ছাড়াও আমরা আমাদের প্রচারণা অনুষ্ঠানকে ছড়িয়ে দিতে চাই খুলনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ সারা দেশে। এবারের ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন’ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, এই অভিযানটি এক মিলিয়ন অর্থাৎ ১০ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করার গৌরবময় মাইলফলক ছুঁতে যাচ্ছে ১৮ সেপ্টেম্বর আয়োজিত অনুষ্ঠানে।
সব অনুষ্ঠানের খবরই আমার ফেসবুক পেজে পাওয়া যাবে: www.fb.com/sabirulislam123

ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়নের প্রচারণা চালাতে গিয়ে আমি গুরুত্বপূর্ণ দুটি জিনিস শিখেছি। প্রথমটি হলো, নিজের স্বপ্নকে বড় করা। যত পাগলাটে কিংবা আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভবই মনে হোক না কেন, আমাদের স্বপ্নগুলো বড় হওয়া চাই। আমার বয়স তখন ছিল মাত্র ১৯, যখন নাইজেরিয়া ভ্রমণে গিয়ে ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়নের চিন্তাটি আমার মাথায় আসে। অনেক পরিকল্পনা, আত্মনিবেদন ও নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে উপলব্ধির পরে আমি শিখলাম, নিজের উপস্থিতি দিয়ে কীভাবে হাজারো মানুষকে অনুপ্রাণিত করা যায়। আর এটিই বিশ্বজুড়ে হাজারো মানুষকে আমার স্বপ্নে উজ্জীবিত করেছে, তাদের অনুপ্রাণিত করেছে দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে। এই মানুষগুলোই আমাকে শিখিয়েছে, মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার মতো দরকারি কাজ কোনোটি নেই। এই মহৎ প্রাণগুলোই ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন ক্যাম্পেইনকে সফল করে তুলেছে।
দ্বিতীয়টি, ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়নের মাধ্যমেই আমি নিজের প্রশংসা করতে শিখেছি এবং নিজের সত্তাকে বুঝতে পেরেছি। কীভাবে? আমি সব সময়ই মনে করেছি, আমার জীবনটা অনেক কঠিন ছিল। আমার জীবন ছিল যুক্তরাজ্যের অন্যতম অনগ্রসর একটি সমাজে বড় হয়ে ওঠার কষ্টকর জীবন। কিন্তু, এখন আমি বিশ্বের ২৬টিরও অধিক দেশে গিয়েছি এবং গত তিন বছরে ৭০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। বিশ্বের নানা প্রান্তে বিচিত্র কর্মজগতের মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। তাদের কেউ কেউ নিজেদের জীবনে অনেক সফল, কারও মত আমার মতের সঙ্গে বেশ মিলে যায়, আবার তাদের অনেকে এমন পরিবেশে বড় হয়েছে, যেটা আমার বেড়ে ওঠার পরিবেশের চেয়েও অনেকগুণ প্রতিকূল। এই বিচিত্র সব পরিচিতি আমার চোখ খুলে দিয়েছে এবং শিখিয়েছে নিজের জীবনের কীভাবে প্রশংসা করতে হয়। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে একটা ভ্রমণ হিসেবে উপভোগ করা উচিত, তাহলে সে জীবনের গল্প সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।
যখন আমরা জীবনে কোনো কিছু করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, তখন শুধু অন্তিম ফলটাই মুখ্য নয়। কারণ, পাহাড়ে আরোহণের সময় চূড়ায় ওঠাটা মূল গল্প নয়। শীর্ষে একজন কী করল তা কাউকে অনুপ্রাণিত করে না, কিন্তু চূড়ায় ওঠার যে কষ্টকর যাত্রা, প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে প্রাণান্তকর যে লড়াই করে চূড়ায় ওঠার সাধনা—সে গল্পটাই সবাই আগ্রহ নিয়ে শুনতে চায়। এ কারণে জীবনে যাত্রাপথটাকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দাও এবং এর প্রশংসা করো।
পাঠকদের অনেককেই মূল আয়োজনে দেখার আশা রাখি। ভালোবাসি প্রিয় বাংলাদেশকে।
0 comments:
Post a Comment