Md. Afrooz Zaman Khan

Afrooz
Md. Afrooz Zaman Khan. Powered by Blogger.
RSS

লিখতে শুরু করে দাও


সাবিরুল ইসলাম, মার্চে বাংলাদেশ সফরে। ছবি: মুন রহমান


বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণ উদ্যোক্তা, লেখক ও বক্তা সাবিরুল ইসলাম লিখছেন প্রথম আলোয়। ‘স্বপ্ন নিয়ে’তে প্রকাশিত হচ্ছে তাঁর কলাম
জীবনের ভালো লাগার মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখতে চাইলে, কিংবা মনের সবচেয়ে খাঁটি অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে হলে সেগুলো লিখে রাখার কোনো বিকল্প নেই। আবার সুখের পাশাপাশি সবার জীবনে অনেক কঠিন সময় আসে, যখন বাস্তবতার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়, অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। বিগত বছরগুলোতে আমি শিখেছি কীভাবে আমার সুখ-দুঃখের অনুভূতিগুলোকে ভাষায় প্রকাশ করা যায়। লিখতে লিখতে আমি নিজেকে নতুনভাবে চিনতে পেরেছি, নিজের সম্পর্কে এমন অনেক কিছু আবিষ্কার করেছি, যা আগে জানতামই না। সাহস করে মুখে যা সবার সঙ্গে বলতে পারতাম না, লেখার মাধ্যমে আমি তা প্রকাশ করতে পেরেছি। 
সবার জীবনের গল্পই অনন্য, একজনের গল্পের সঙ্গে অন্য কারও গল্পের মিল পাওয়া যায় না। তাই সে গল্পকে কাগজে লিখে ফেলায় যথেষ্ট সার্থকতা রয়েছে। একবার দ্বিধা ঝেড়ে লিখতে শুরু করলে দেখবেন চিন্তার ধরনটাই বদলে যাচ্ছে, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠছে, আপনি এক নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছেন। লিখতে লিখতেই আমি জেনেছি নিজের কাছে সৎ থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। 
আমরা অনেক কিছু গোপন রাখি, কাউকে জানাতে চাই না। অন্যে কী ভাববে এই ভয়ে আমরা প্রায় মরে যাই। আমরা ধরেই নিই আমাদের ভুলের কথা, ব্যর্থতার ইতিহাস জানলে গোটা পৃথিবী হাসবে। এভাবে আমাদের মধ্যে দ্বৈত সত্ত্বার সৃষ্টি হয়, একটি সত্ত্বা আমরা সত্যি যা তাই, আর অন্য সত্ত্বাটি হলো অন্যদের সামনে আমরা যা সেজে থাকি। কিন্তু এভাবে নিজেদের আসল পরিচয় হারিয়ে ফেলা উচিত নয়।

লেখালেখি একটি শিল্প; নিজেকে জানার জন্য হলেও এই শিল্পের চর্চা করা প্রয়োজন। ভালো-মন্দ সব মিলিয়ে জীবনের টুকরো অভিজ্ঞতাগুলো লেখার মাধ্যমে ধরে রাখতে হবে। দু-একবার লিখে ছেড়ে দিলে হবে না, লেখা চালিয়ে যেতে হবে। অনেকে ব্যক্তিগত ডায়েরি লেখে, আবার কেউ কেউ অন্যদের মাঝে নিজের চিন্তাগুলোকে ছড়িয়ে দিতে তা বই হিসেবে প্রকাশ করে। কেউ গল্প লেখে, কেউ কবিতা। আপনি যেভাবেই লিখুন না কেন, তা সম্পূর্ণ আপনার নিজস্ব ব্যাপার। এখানে কোনো ঠিক-বেঠিক, ভালো-খারাপ নেই। যখন বুকে জমে থাকা কষ্টগুলোকে নিয়ে লিখবেন, তখন আপনার চোখ থেকে অশ্রু ঝরবে ঠিকই, কিন্তু লিখতে লিখতে একসময় আপনি আগের চেয়ে শত হাজার গুণ ভালো বোধ করবেন। জীবনকে এক অন্য আলোয় আবিষ্কার করবেন। 

আমার জীবনের গল্প হয়তো সম্পূর্ণ ভিন্ন হতো যদি আমি লিখতে শুরু না করতাম। মুখচোরা, লাজুক আর দ্বিধাগ্রস্ত এক ছেলে থেকে আজ আমি পরিণত হয়েছি এক ভিন্ন ব্যক্তিত্বে। আপনাদের হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে, তবু আমি বলব, একবার লিখতে শুরু করেই দেখুন না কী হয়! আপনার জীবনের গল্প আপনি না লিখলে লিখবে কে? আমার প্রথম বইটি বের হওয়ার পর সাত বছর পেরিয়ে গেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই আমি শিগগিরই আমার তৃতীয় বই লিখতে যাচ্ছি, যা হবে আমার আত্মজীবনী। আমি ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন’-এর পথচলার গল্প বলব সেখানে। আগামী বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করার ইচ্ছা আছে। তবে তার আগেই আপনাদের সঙ্গে আমার দেখা হচ্ছে আগামী মাসে, বাংলাদেশের ১০টি জেলায় ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন’-এর অনুষ্ঠান করতে আসছি আমি। তত দিন পর্যন্ত ভালো থাকুন।

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

0 comments:

Post a Comment