বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণ উদ্যোক্তা, লেখক ও বক্তা সাবিরুল ইসলাম প্রতি মাসে লিখছেন প্রথম আলোয়।
প্রথমেই আমি ‘স্বপ্ন নিয়ে’র সব পাঠককে ধন্যবাদ জানাই, আমার লেখাগুলো তাঁরা যেভাবে গ্রহণ করেছেন ও সাড়া দিয়েছেন, সে জন্য।
প্রাচীন প্রবাদে আছে, একজন মানুষকে চিনবে তার আশপাশের মানুষদের দিয়ে, যাদের সঙ্গে সে মেশে। এটাই তার সামাজিক অবস্থান ও তার জীবনযাত্রা প্রকাশ করে। তুমি এই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবো আর না-ই ভাবো, কিন্তু তোমার ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর এর অনেক বড় একটা প্রভাব আছে; সেটা ভালো ও খারাপ যেকোনো রকমই হতে পারে।
তুমি তোমার চারপাশে তাকাও! তোমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, যাদের সঙ্গে তুমি গভীরভাবে সম্পর্কিত; তারা কীভাবে তোমার প্রতিদিনের জীবনে ভূমিকা রাখে, তোমার চিন্তাভাবনা-সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করে! এ সবকিছুরই একটা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া তোমার জীবনে থাকবে। তুমি হয়তো ভাবছ, এসব আমি কেন বলছি? এর কারণ হলো সেই পুরোনো কথা, ‘রতনে রতন চিনে’। তোমার অভ্যাস, দৃষ্টিভঙ্গি, তোমার চাহিদাই তোমার প্রয়োজনীয় মানুষগুলোকে তোমার জীবনে নিয়ে আসবে।
জীবনে বড় স্বপ্ন দেখা কিংবা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়াটা দোষের কিছু নয়। তুমি যত তোমার জীবন নিয়ে ভাববে, তোমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে, ততই তোমার জীবনের ঘটনাগুলো একটি সুতায় গাঁথা হয়ে তোমাকে তোমার স্বপ্নের কাছে নিয়ে যাবে। সেই ঘটনাগুলো হতে পারে এমন সব মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, যারা তোমার স্বপ্নে পৌঁছাতে তোমাকে সাহায্য করবে অথবা ছোট একটি সিদ্ধান্ত, যেটা তোমার জীবনকেই পালটে দেবে। আমাদের আকর্ষণগুলো আসলে আমাদের ভাবনার জগৎকে জড়িয়ে থাকে। আমরা যেসব সিদ্ধান্ত নিই বা যেসব আবেগ অনুভব করি, সেগুলোর সমষ্টিই হলো আমাদের জীবন। এ জন্য আমাদের কখনোই হতাশায় ডুবে যাওয়া অথবা ব্যর্থতাকে মেনে নিয়ে হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। আমাদের উচিত আশাবাদী ও উদ্যমী হওয়া। কেবল তখনই আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন আমরা বুঝতে পারব, আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়বে এবং জীবনকে নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারব।
আমি এই ভাবনামূলক লেখাটি লিখছি এই কারণে যে আমাকে অনেকেই তাঁদের ব্যর্থতার গল্পগুলো শোনান, যা আমাকে খুব কষ্ট দেয়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত তীব্র ব্যর্থতার মধ্যেও সাফল্যের ছোট ছোট ফুলকি খুঁজে নেওয়া, যেগুলো আমাদের মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে। জীবনে ‘কিন্তু’ এবং ‘যদি’ এই শব্দগুলো নিয়ে খুব বেশি সময় নষ্ট করা উচিত না। চ্যালেঞ্জ নেওয়া ও সেটার বাস্তবায়ন করাটাই আমাদের লক্ষ্য। ব্যর্থতা যদি আসেও সেটা নিয়ে সময় নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।
এ সপ্তাহে আমি আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাতে চাই যে আমাকে এন্টারপ্রাইজ কম্পিটিটিভনেস ইনস্টিটিউট এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আমন্ত্রণ জানিয়েছে আগামী ৪ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য। ৬ মার্চ আমি ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছি।
নিজ দেশে ফিরে আসার মতো আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে সাহায্য করার জন্য। আপনারা সবাই নিজেদের মধ্যে সাফল্যের ফুলকি খুঁজে নিন এবং আশাবাদী হন। সবার জন্য রইল শুভেচ্ছা।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
0 comments:
Post a Comment