Md. Afrooz Zaman Khan

Afrooz
Md. Afrooz Zaman Khan. Powered by Blogger.
RSS

গ্যারেজ থেকে শুরু!




স্টিভ জবস (১৯৫৫–২০১১) অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতাঅ্যাপল কম্পিউটার
১৯৭৬ সালে শুরু হয় অ্যাপলের গল্প। ২১ বছরের তরুণ স্টিভ জবস আর ২৬ বছরের স্টিভ ওজনিয়াক। দুই স্টিভ মিলে অ্যাপল ওয়ান নামের কম্পিউটার বিক্রি শুরু করেন। প্রতিটি কম্পিউটারের দাম পড়ত ৬৬৬.৬৬ মার্কিন ডলার, যা কিনা বর্তমানে দুই হাজার ৭৬৩ ডলারের সমমূল্য। ক্যালিফোর্নিয়ার কাপারটিনোর এক গ্যারেজেই তৈরি হতো কম্পিউটারগুলো। সেই গ্যারেজের কোম্পানিটিই বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি প্রযুক্তি কোম্পানি। বর্তমানে অ্যাপলের বার্ষিক আয় ১৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।
গ্যারেজের ঠিকানা: ২০৬৬ ক্রিস্ট ডিআর, লস আলটোস, ক্যালিফোর্নিয়া।
সূত্র: রিটায়ার অ্যাট২১ ডট কম।

জেফ বেজোস (১৯৬৪–) প্রতিষ্ঠাতা, আমাজন ডট কমআমাজান ডট কমপ্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ করে মার্কিন শেয়ারবাজারে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ শুরু করেন জেফ বেজোস। হঠাৎই একদিন ইন্টারনেট নিয়ে সামনে পড়ে একটা ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন। ১৯৯০ দশকের সেই প্রতিবেদনে লেখা ছিল, ভবিষ্যতে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসার জগৎ ২৩০০ শতাংশ বিস্তৃতি লাভ করবে। এক প্রতিবেদন পড়েই মাথা ঘুরে যায় জেফের। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন অনলাইন বুকস্টোর আমাজন ডট কম। ওয়াশিংটনের বেলেভিউর গ্যারেজেই ছিল প্রথম অফিস তাঁর। গ্যারেজ থেকেই যাত্রা শুরু হয় আমাজনের। যদিও প্রথম বই বিক্রি হয় এক বছর পরে ১৯৯৫ সালে। কিন্তু মাত্র দুই বছরের মধ্যে ১৯৯৭ সালে আমাজনের আইপিও শেয়ার বাজারে আসে। বর্তমানে আমাজন ডট কমের কর্মী সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার এবং বার্ষিক আয় প্রায় ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
গ্যারেজের ঠিকানা: ১০৭০৪ এনই, ২৮ বেলেভিউ, ওয়াশিংটন।

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

এশিয়ার মেয়েরা দুর্বল নয়



বন্ড-কন্যা মিশেল ইয়ো

নাচ শিখতে গিয়ে ছোটবেলায় স্পাইনালকর্ডে আঘাত পান। ব্যালেরিনা হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে যায়। মজার ব্যাপার হলো, সেই মেয়েটিকেই পৃথিবী আজ তাঁকে চেনে মার্শাল আর্টের রানি হিসেবে। তিনি বন্ড-কন্যা মিশেল ইয়ো। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় তাঁকে এখানে নিয়ে এসেছে। মিশেলের জন্ম ১৯৬২ সালের ৬ আগস্ট৷ চীনা বংশোদ্ভূত এই অভিনেত্রী চার বছর বয়সে নাচ শেখা শুরু করেন, আর ১৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে যান লন্ডনের রয়েল একাডেমি অব ড্যান্সেব্যালেতে নাচের উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে। পরবর্তী সময়ে তিনি লন্ডন থেকে কোরিওগ্রাফি ও নাটক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

১৯৮৪ সাল থেকে মার্শাল আর্ট নিয়ে কাজ করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন মিশেল। এ জন্য তিনি প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে প্রশিক্ষণ নেন। অ্যাকশন ছবি তাঁকে কুংফু, কারাতে ও জুডোর মতো শারীরিক শক্তির কসরত আয়ত্তে আনতে হয়। ১৯৯২ সালে তিনি অভিনয় করেন জ্যাকি চেনের ছবি পুলিশস্টোরি, সুপারকপ-এ। ছবিটির ব্যবসায়িক সাফল্য মিশেলকে এনে দেয় অ্যাকশন ছবির জগতে শক্ত অবস্থান। জ্যাকি চেন ও জেট লির মতো কুংফু মাস্টারদের সঙ্গে তিনি সমান্তরালে অভিনয় করে গেছেন। জেমস বন্ডখ্যাত ব্রুসনান মিশেলের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘তিনি অন্য সব বন্ড গার্লদের মতো নন। তিনি আমাকে একজন লেডি বন্ডের কথা মনে করিয়ে দেন।’
সিনেমার জগতে মিশেলের সবচেয়ে বড় সাফল্য আসে ২০০০ সালে, যখন তিনি অ্যাং লি পরিচালিত ক্রাউচিং টাইগার হিডেন ড্রাগন ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিটি যে কেবল ব্যবসায়িক দিক থেকেই সফল তা নয়, বরং এর শিল্পগুণ ও মার্শাল আর্টসের চমৎকার ব্যবহার জয় করে নেয় সমালোচকদেরও মন।

হলিউডে মিশেল মেমোয়্যার অফ অ্যাজেইশা, দ্যামামি, টুম্ব অফ দ্য ড্রাগন রাইডার এবং কুংফু পাণ্ডা ছবিতে কাজ করেন। মিশেল ইয়ো স্বীকার করেন, তাঁর ক্যারিয়ারের পথচলাটা মোটেও মসৃণ ছিল না৷ সব সময়ই তাঁকে শুনতে হয়েছে এশিয়ার মেয়েরা দুর্বল, তারা পারে না। তিনি মনে করেন, এশিয়ার মেয়েদেরই এই ভুল ধারণা দূর করতে কাজ করতে হবে। প্রমাণ করতে হবে, এশিয়ার মেয়েরা দুর্বল নন।

সূত্র: বায়ো ডট কম অবলম্বনে

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

সফল ড্রপ আউট!

ডাস্টিন মস্কোভিৎজ
ডাস্টিন মস্কোভিৎজ
ডাস্টিন মস্কোভিৎজ ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতাদের একজন ডাস্টিন মস্কোভিৎজ। হাইস্কুলের পড়াশোনা শেষে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। কিন্তু ‘সঙ্গদোষে সর্বনাশ’ হয়ে মার্ক জাকারবার্গের সঙ্গে ফেসবুক নির্মাণে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ফলাফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট হন ডাস্টিন। আর ড্রপআউটের কারণেই পৃথিবী সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ারের তকমা তাঁর কাঁধে। ডাস্টিনের চেয়ে জাকারবার্গ আট দিনের ছোট বলে তকমাটি তাঁর দখলেই রয়েছে। 
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ

ব্র্যাড পিট

ব্র্যাড পিট 
ব্র্যাড পিট অভিনেতা


যুক্তরাষ্ট্রের ছোট্ট এক শহর স্প্রিংফিল্ড। সেই শহরের হাইস্কুলের পরিচিত মুখ ছিল কিশোর পিট। গলফ থেকে শুরু করে স্কুলের টেনিস দলের সদস্য ছিল সে। খেলাধুলা আর পড়াশোনা দুটোই চলত সমান তালে। এমনকি স্কুলের গানের অনুষ্ঠানেও তার ঝলক দেখা মিলত। সেই কিশোর হাইস্কুলের পড়াশোনা শেষে ভর্তি হয় মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাংবাদিকতা ও বিজ্ঞাপন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে সে। পিট বুঝল পড়ালেখার দিকে তার একটু মন নেই, মন বসে না পড়ার টেবিলে। সব মনোযোগ তার সিনেমার প্রতি। মন যা বলল তা-ই শুনল পিট। পড়ালেখা ছেড়ে নাম লেখালেন অভিনয়ের ক্লাসে। মিসৌরি ছেড়ে লস অ্যাঞ্জেলেস ভাগলেন কাজের জন্য। বছর খানেকের মধ্যে টেলিভিশনে ডাক পড়ে আজকের হলিউড তারকা ব্র্যাড পিটের।

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

বিদেশে পড়তে যাওয়ার আগে




বৃষ্টি শিকদার এ বছর ১৪টি বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি), স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ক্যালটেক, কর্নেল ইউনিভার্সিটি, ডিউক ইউনিভার্সিটি এবং ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি অন্যতম। বৃষ্টি শিকদার এই লেখায় জানিয়েছেন কীভাবে তিনি সুযোগ পেলেন এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, আর সেই সঙ্গে দিয়েছেন নতুনদের জন্য পরামর্শ।
বৃষ্টি শিকদার

ছোটবেলা থেকেই বিদেশের বড় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার শখ ছিল আমার। আমি আমার লক্ষ্য চূড়ান্ত করি, কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়েই পড়ব।
দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই শুরু করি ইন্টারনেট নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি। জানতে পারি, এ লেভেল/এইচএসসি শেষ করে বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য আবেদন করা যায়। এ ছাড়া লাগে টোয়েফল এবং স্যাট, স্যাট টু-এর ভালো স্কোর। এ ছাড়া আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করতে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, বিজ্ঞান/গণিত শিক্ষক এবং ইংরেজি/সমাজবিজ্ঞান শিক্ষকের ‘রিকমেন্ডেশন লেটার’। আর সবচেয়ে জরুরি, অন্যের কাছে নিজেকে চেনাতে নিজের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত একটি নিবন্ধ। ভালো জিপিএর চেয়েও এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। তাই কেউ যদি গান-নাচ বা খেলাধুলায় ভালো হও এবং কোনো পুরস্কার পেয়ে থাকো, সেগুলো উল্লেখ করতে ভুলো না। তবে সবকিছুরই প্রমাণপত্র থাকতে হবে। আমার ক্ষেত্রে ছবি আঁকা এবং ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে ব্রোঞ্জ পদক প্রাপ্তিও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে আমার দারুণ কাজে লেগেছিল।
একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই একাউন্ট খুলে যোগাযোগ শুরু করা যায়। আমি ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি। পরীক্ষার সনদ ও প্রশংসাপত্র আমি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দিই। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিভিন্ন কাগজপত্র স্ক্যান করে অনলাইনে আপলোড করে দিই। অনলাইন ফরম পূরণের সময় বাবা-মায়ের ইনকাম ট্যাক্সসংক্রান্ত কাগজপত্র ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগে। এসব কাগজপত্র পরবর্তী সময়ে ভিসা আবেদনের কাজেও লাগবে। তাই এগুলো আগে থেকেই জোগাড় করে রাখা ভালো।
আমার ক্ষেত্রে এমআইটির রেজাল্ট দিয়েছিল মার্চের ১৫ তারিখ এবং অন্যান্য সব ভার্সিটির রেজাল্ট দিয়েছিল ২৭ মার্চ থেকে ১ এপ্রিলের মধ্যে। সার্বিক সুযোগ বিবেচনায় আমি এমআইটিকেই বেছে নিই।
নতুনদের জন্য পরামর্শ
এসএসসি/ও–লেভেল পরীক্ষার পর থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করা উচিত। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি-সংক্রান্ত সব তথ্য সহজ ভাষায় লেখা থাকে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা নির্ধারণ করে ফেলা উচিত। স্যাট আর টোয়েফল পরীক্ষার মাধ্যমে যতটা সম্ভব ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। স্যাট পরীক্ষায় গণিত, ক্রিটিক্যাল রিডিং ও রাইটিং বিভাগে পরীক্ষা দিতে হয়। প্রতি বিষয়ে ৮০০ করে মোট ২৪০০ নম্বর পরীক্ষা। আমি গণিতে ৮০০, ক্রিটিক্যাল রিডিংয়ে ৬৯০ আর রাইটিংয়ে ৭৬০ নম্বর পাই। কেউ যদি ক্রিটিক্যাল রিডিংয়ে ৬০০ নম্বরের বেশি পায় এবং মোট ২০০০-এর বেশি নম্বর পায়, তাহলে তা ভালো স্কোর। স্যাটে গণিত একটু সহজ হলেও ইংরেজির অংশ কিছুটা কঠিন। ইংরেজিতে ভালো করতে নিয়মিত ইংরেজি অনুশীলন, প্রচুর শব্দ শেখা আর ইংরেজি বই পড়তে হবে। 
স্যাট টুতে গণিতসহ রসায়ন, পদার্থ, জীববিজ্ঞানের যেকোনো দুই বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়। আমি স্যাট টু পরীক্ষায় ২৪০০ নম্বরে পুরো ২৪০০ পাই। বছরের অক্টোবর থেকে মার্চ মাসে স্যাট পরীক্ষা হয়। একই সঙ্গে স্যাট আর স্যাট টু পরীক্ষা দেওয়া যায় না। শিক্ষাবর্ষে ডিসেম্বর মাসের আগে স্যাট, স্যাট টু এবং টোয়েফল পরীক্ষা শেষ করা ভালো। কারণ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে জানুয়ারির ফলাফল গ্রহণ করে না। পরীক্ষার নিবন্ধনের জন্য স্যাটের অফিশিয়াল সাইটে নাম নিবন্ধন করে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি জমা দেওয়া যায়। স্যাটের জন্য বই: Official SAT Blue Book। Barrons, Princeton Review, Kaplan
শব্দ শেখার জন্য Direct Hits Vocabulary, Barrons High Frequency, Barrons 3500 Word list গুরুত্বপূর্ণ।
টোয়েফল
টোফেলের সব তথ্য অনলাইনেই পাওয়া যায়। প্রতি মাসেই টোফেল পরীক্ষা দেওয়া যায়। টোফেল পরীক্ষায় চারটি ভাগ আছে-রিডিং, রাইটিং, লিসেনিং ও স্পিকিং। ৩০ নম্বর করে মোট ১২০ নম্বর পরীক্ষা হয়। আমি টোয়েফলে ১১৬ নম্বর পেয়েছিলাম। এমআইটিতে আবেদন করতে টোয়েফলে ন্যূনতম ৯০ নম্বর থাকতে হয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে ন্যূনতম ১০০ নম্বর পেতে হয়।
অন্যান্য কাগজপত্র
স্কুল/কলেজ থেকে প্রশংসাপত্র, সনদ ও নম্বরপত্র তুলতে হবে। অল্প কথায় নিজেকে নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখতে হবে। তোমার নিবন্ধ পড়ে যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোঝে তুমি কেমন মানুষ, তোমার কী করতে ভালো লাগে।
তোমার যদি ছবি আঁকতে কিংবা ফুটবল বা ক্রিকেট খেলতেও যদি ভালো লাগে, তাও তোমার নিবন্ধে লিখবে। সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রচণ্ড গুরুত্ব দেয়।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হয়। এমআইটির জন্য MyMit (my.mit.edu/uaweb/login.htm) তে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় আর যুক্তরাষ্ট্রের বাকি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য Common Application (www.commonapp. org/Login) এ অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। Cambridge , Oxford সহ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ইউনিভার্সির জন্য (www.ucas.com) আলাদা আবেদন করতে হয়।
নতুন শিক্ষার্থীরা, এ ছাড়া আরো কোনো তথ্য জানতে আমাতে লিখতে পারো আমার ইমেইলে।
বৃষ্টি শিকদার: bristy1588@gmail.com

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

সফল ড্রপ আউট!



নিকোল কিডম্যান

নিকোল কিডম্যান
মাত্র তিন বছর বয়সে ব্যালে ক্লাসে যাওয়া শুরু হয় মেয়েটির। মা–বাবা মেয়ের শখকে গুরুত্ব দিতেন বলেই কলেজ পর্যন্ত ব্যালে ক্লাসে যাওয়া সম্ভব হয় নিকোলের। নিকোলের বয়স সতেরোতে পড়তেই মায়ের ক্যানসার ধরা পড়ে। মায়ের চিকিৎসার জন্য কলেজ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। বিউটি পার্লারে পরিশ্রমের কাজ শুরু করেন নিকোল। বিউটি পার্লারে কাজ করা সেই পরিশ্রমী মেয়েটিই আজকের হলিউড কাঁপানো অস্ট্রেলীয় অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যান। 
সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ।



রিচার্ড ব্র্যানসন

রিচার্ড ব্র্যানসন

ভার্জিন গ্রুপের কর্ণধার হিসেবে সারা বিশ্বে আলোচিত উদ্যোক্তা ও ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন। তাঁর দাদা ছিলেন বিচারক। প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হিসেবে অর্থকড়ির অভাব ছিল না। কিন্তু পড়াশোনায় অমনোযোগী ছিলেন ব্র্যানসন। তিনি পড়াশোনায় এতটাই খারাপ ছিলেন যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁকে বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, ‘ব্র্যানসনের জীবন হয় জেলে গিয়ে শেষ হবে নতুবা সে হবে কোটিপতি!’ বাজে ফলাফলের জন্য পড়াশোনা শেষ না করতে পারলে কী হবে, ঠিকই কোটিপতি হয়েছেন ব্র্যানসন।
সূত্র: ফোর্বস অনলাইন।





  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

স্বপ্ন হোক আকাশে ওড়ার


এ পি জে আব্দুল কালাম


ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের জন্ম তামিলনাড়ুতে, ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর। তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ ছাড়াও ‘পদ্মভূষণ’ ও ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবে ভূষিত। সম্প্রতি ঢাকা সফরে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) ১১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ১৭ অক্টোবর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এই বক্তব্য দেন।
বন্ধুরা, প্রথমত ধন্যবাদ জানাই আমাকে এখানে কিছু বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে ধন্যবাদ জানাই যারা আমাকে এখানে নিয়ে এসে তোমাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দিল। বাংলাদেশকে আমার দুটি কারণে অনেক ভালো লাগে। এক, এ দেশের বিস্তৃত জলরাশি। আজও যখন দিল্লি থেকে উড়ে এলাম তখন দেখছিলাম দেশজুড়ে কত নদী! আসলে তোমাদের নাম হওয়া উচিত ‘ওয়াটার পিপল’। তোমরা খুব সৌভাগ্যবান। আর দুই, এ দেশের তৈরি পোশাকশিল্প। তোমরা নিজেরাও হয়তো জানো না তৈরি পোশাকশিল্পে তোমরা কতটা উন্নত। আর হ্যাঁ, অবশ্যই আমার ভালো লাগার একটা বড় অংশজুড়ে আছ তোমরা, এ দেশের তরুণ যুবসমাজ। এ দেশের জনসংখ্যা অনেক হতে পারে। কিন্তু মনে রাখবে এর অর্ধেকই তোমরা। তোমাদের ধ্যানধারণা, চিন্তাভাবনা ও কাজকর্মের ওপরই দেশের উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করছে। বাংলাদেশেরও উচিত তোমাদের শক্তিমত্তার কথা মাথায় রেখে তোমাদের যথাযথ ব্যবহার করা। আর তাই আমার একটি পরামর্শ রইল তোমাদের প্রতি। এখন থেকে সবকিছুতে দেশের কথা মাথায় রাখবে। কোনো স্বপ্ন দেখলে নিজের সঙ্গে বাংলাদেশকে নিয়েও দেখবে, কোনো চিন্তা করলে বাংলাদেশকে নিয়ে করবে আর কোনো কাজে মগ্ন হলে বাংলাদেশের জন্য করবে।
ভারতের তরুণদের সঙ্গে তোমাদের অনেক মিল আছে। যেমন মিল আছে দুই দেশের ইতিহাস থেকে শুরু করে শিল্প-সংস্কৃতি আর সম্পদে। অর্ধশত নদী আমাদের দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবহমান। বিশ্বের সব থেকে সুন্দর এবং সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনও এই দুই দেশজুড়ে রয়েছে। তাই এই দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক অটুট। আমার ৮৩ বছরের জীবদ্দশায় গত দুই দশক ধরে দেশে এবং দেশের বাইরে প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ তরুণের সংস্পর্শে এসেছি শুধু তাঁদের স্বপ্ন কী সেটা জানতে। তাই যখন তোমাদের কাছে আসার সুযোগ পেলাম সে সুযোগটি হাতছাড়া করতে চাইনি।
তোমাদের যখন পেলামই তখন আমার জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে মূলত চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি আমি আজ আলোকপাত করব। সেগুলি হল: জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ, জ্ঞান আহরণ, অনেক বড় সমস্যায় পড়লেও লক্ষ্য থেকে সরে না আসা এবং কোনো কাজে সাফল্য ও ব্যর্থতা দুটোকেই নেতৃত্বগুণে সামাল দিতে পারা।
প্রথমেই তোমাদের আমার একটা ছোট্ট গল্প শোনাতে চাই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমার এক স্কুলশিক্ষক ছিলেন শিব সুব্রমনিয়াম আয়ার, যাঁকে দেখলে ‘জ্ঞানের বিশুদ্ধতা’ কথাটার মানে বোঝা যায়। সেই শিক্ষক একদিন একটি পাখির ছবি এঁকেছিলেন। অনেকক্ষণ ধরে শিখিয়েছিলেন পাখি কীভাবে আকাশে ওড়ে। বলেছিলেন, কালাম কখনো কি উড়তে পারবে এই পাখির মতো? সেই থেকে আমার আকাশে ওড়ার স্বপ্নের শুরু। 
ঠিক উড়তে গেলে কী করতে হবে সেটা আমি বলব না। সেটা তোমরা নিজেরাই ঠিক করে নেবে। তবে আমি তোমাদের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতে পারি। কথাগুলো তোমরা আমার সাথে বল, ‘সব সময় জীবনের অনেক বড় লক্ষ্য রাখব। মনে রাখব ছোট লক্ষ্য অপরাধের সমান। আমি অব্যাহতভাবে জ্ঞান আহরণ করে যাব। সমস্যা সমাধানের অধিনায়ক হব। সমস্যার সমাধান করব। সমস্যাকে কখনো আমার ওপর চেপে বসতে দেব না। যত কঠিন সময়ই আসুক না কেন কখনোই হাল ছেড়ে দিব না। এভাবেই আমি একদিন উড়ব।’
সবাইকে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতে হবে। সর্বদা চিন্তা করবে, আমাকে যেন মানুষ মনে রাখে। কিন্তু মানুষ কেন মনে রাখবে, সেটি ঠিক করতে হবে। এই যে চারপাশে এত আলো দেখছ, বাতি দেখছ, বলো তো এই বাতি দেখলেই প্রথমে কার কথা মনে পড়ে? ঠিক, টমাস আলভা এডিসন। এই যে যোগাযোগের জন্য টেলিফোন, এটা দেখলে কার কথা মনে পড়ে? আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। একইভাবে এই বাংলাদেশের কথা চিন্তা করলে প্রথমেই কার কথা মাথায় আসে বলো তো? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সবাই তাঁকে মনে রেখেছে। এভাবে সবাইকে স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে। এমন কিছু করে যাবে, যাতে তোমার অনুপস্থিতিতেও পৃথিবী তোমাকে মনে রাখে।
ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কথা যখন এল তখন বলি, সফল হলেও প্রথমে কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছিলাম। আর ওই ব্যর্থতাই আমাকে সফল হতে উজ্জীবিত করেছিল। চ্যালেঞ্জ হলো এই ব্যর্থতাকে দূর করে সফল হওয়ার পথ খুঁজে নিতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন নেতৃত্বের গুণের। সবার মধ্যে যে গুণটি অবশ্যই থাকা প্রয়োজন। মনে রাখবে, একজন যোগ্য নেতার একটি সুনির্দিষ্ট গন্তব্য, পরিকল্পনা ও যেকোনো অবস্থা সঠিকভাবে উপলব্ধি করার ক্ষমতা থাকতে হবে। তাঁকে হতে হবে সৎ ও উদার মনের। সফলতাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে কিন্তু ব্যর্থতাকে নিজের করে নেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় হতে হবে। 
সমস্যাকে কখনো এড়িয়ে যেতে চাইবে না। বরং সমস্যা এলে তার মুখোমুখি দঁাড়াবে। মনে রাখবে, সমস্যাবিহীন সাফল্যে কোনো আনন্দ নেই। সব সমস্যার সমাধান আছেই। জ্ঞান আহরণ থেকে কখনো বিরত থেকো না। কারণ এই জ্ঞানই তোমাকে মহানুভব করে তুলবে। অন্য গুণাবলি অর্জনে সাহায্য করবে। নিজেকে অনন্য সাধারণ করে তোলার চেষ্টা করো। মনে রাখবে, তোমার চারপাশের পৃথিবী সর্বদা তোমাকে সাধারণের কাতারে নিয়ে আসার চেষ্টায় লিপ্ত। হতাশ না হয়ে নিজেকে স্বপ্নপূরণের কতটা কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারছ সেদিকে নজর রাখবে। কখনোই সাহস হারাবে না। নিজের একটি দিনও যাতে বৃথা মনে না হয় সে চেষ্টা করো। 
তোমরা সবাই ভালো থাকবে। সবাই কোনো না কোনো দিন উড়বে। তোমাদের সবার জন্য শুভকামনা। 
মূল বক্তৃতার নির্বাচিত অংশ অবলম্বনে

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

শূন্য থেকে শীর্ষে




বন জোভি
ছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মী থেকে গায়ক

গানপাগল এক কিশোর। গানের জন্য স্কুলের পড়াশোনা সব লাটে ওঠে। গান দিয়ে তো পেট ভরে না, তাই পেট চালানোর জন্য চাচাতো ভাইয়ের কাছে কাজের সন্ধানে যান তিনি। চাচাতো ভাই আবার এক গানের রেকর্ডিং স্টুডিওর মালিক। তাই আত্মীয় বলেই রেকর্ডিং স্টুডিওর মেঝে পরিষ্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে টানা এক বছর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মী আর স্টুডিওর রেকর্ডিং তত্ত্বাবধায়কের কাজ করেন তিনি। সেই মেঝে পরিষ্কার করা কিশোরটিই আজকের রকসংগীত তারকা বন জোভি।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি



সব অডিশনে ফেল
মাত্র ১৬ বছর বয়সে সিনেমায় অভিনয় করার লক্ষ্য ঠিক করে এক কিশোরী। এ জন্য তাকে হাজির হতে হয় অনেক অডিশনে। কিন্তু কপাল মন্দ ওই কিশোরীর। কোনো একটি অডিশনের বাধাও উতরাতে পারে না সে। বোনের এত আগ্রহ দেখে বড় ভাই জেমস হ্যাভেন তাঁর শিষ্যদের সিনেমায় তাকেও টুকটাক অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। বয়স কুড়ি পেরোনোর আগেই গোটা পাঁচেক সিনেমা আর মিউজিক ভিডিওতে কাজের সুযোগ আসে ওই কিশোরীর। সেই অডিশনে বাদ পড়ে যাওয়া মেয়েটিই আজকের তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।
সূত্র: হাফিংটন পোস্ট

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

শুরুটা হোক এখনই : এমা ওয়াটসন

২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘হি ফর শি’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমা ওয়াটসন



শিশুতোষ সিনেমা সিরিজ হ্যারি পটার-এ অভিনয়ের জন্য সারা বিশ্বে জনপ্রিয় ব্রিটিশ অভিনেত্রী এমা ওয়াটসন। জন্ম: প্যারিসে, ১৯৯০ সালের ১৫ এপ্রিল। ২০১৪ সালের মে মাসে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এমা। তিনি জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের শুভেচ্ছাদূত।
উপস্থিত সবাইকে স্বাগতম। আমরা ‘হি ফর শি’ নামের কর্মসূচি শুরু করার জন্য আজ একত্র হয়েছি। আমি আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি কারণ, বড় কিছু করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সমাজ বদলের জন্য আমাদের বেশি সংখ্যায় মানুষের উৎসাহিত করার চেষ্টা করতে হবে। আমরা শুধু কথাই বলতে চাই না। আমরা চেষ্টা করতে চাই, বাস্তবে সমাজে বদলটা দেখতে চাই।
মাস ছয়েক আগে আমি জাতিসংঘের নারী সংস্থার শুভেচ্ছাদূত হিসেবে মনোনীত হই। আমি যত বেশি ফেমিনিজম বা নারীবাদ নিয়ে নিয়ে কথা বলি, তত বেশি বুঝতে পারি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারীর অধিকারের লড়াইকে পুরুষবিদ্বেষী ভাবা হয়। আমি একটা কথাই বিশ্বাস করি, সব ধরনের বিদ্বেষ রুখতে হবে। নারী ও পুরুষের সমঅধিকার ও সমান সুযোগই নারীবাদের ভাবাদর্শ। এটি আসলে নারী–পুরুষ নির্বিশেষে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমতার তত্ত্ব। 
আমার বয়স যখন আট, ওই বয়সে নাটকের নিদের্শনা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করায় আমাকে সবাই ‘বসি’ বলে ডাকত। ১৪ বছর বয়সে আমাকে গণমাধ্যমে লিঙ্গগত বৈরী আচরণের মুখোমুখি হতে হয়। ১৫ বছর বয়সে আমি আমার অনেক মেয়েবন্ধুকে খেলার দল থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে দেখেছি। ১৮ বছর বয়সে এসে দেখেছি, নারীর বিরুদ্ধে অসুস্থ আচরণের বিষয়ে আমার ছেলেবন্ধুদের মুখ বন্ধ রাখতে। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নিই, আমি নারীবাদী হয়ে কাজ করব। এটা আমার জন্য কঠিন কোনো বিষয় মনে হয়নি। কিন্তু আমার নিজের বেশ কিছু গবেষণায় আমি দেখি, নারীবাদ শব্দটি নিজেই পৃথিবীর কাছে অজনপ্রিয় একটি শব্দ। নারীরা তার অধিকার আদায়ে আন্দোলন করবে, এটা পৃথিবী মেনে নিতে চায় না। আমার মতো নারীদের অভিব্যক্তিকে বাড়াবাড়ি, আক্রমণাত্মক, নিঃসঙ্গ, পুরুষবিদ্বেষী এমনকি অনাকর্ষণীয় হিসেবে ধরা হয়। কেন পৃথিবী এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করবে? 
আমি তো মনে করি, আমার পুরুষ সহকর্মীর মতো সমান পারিশ্রমিক পাওয়া আমার অধিকার। নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়া আমার অধিকার। নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্তগ্রহণে নারীদের সিদ্ধান্ত নেওয়া তার অধিকার। সামাজিকভাবে আমি আরেকজন পুরুষের মতো সমান সম্মান অর্জন করেছি। কিন্তু বাস্তবতা আরও কঠিন। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়নি। আমি ভাগ্যবান বলেই অধিকারগুলো পেয়েছি। বাবা-মায়ের কাছ থেকে আমি পরিপূর্ণ আদর পেয়েছি। কন্যা হয়ে জন্মানোর জন্য তাঁরা আমাকে কম ভালোবাসেননি। আমার স্কুল আমাকে মেয়ে বলে আটকে রাখেনি। আমি ভবিষ্যতে কন্যাসন্তানের মা হব বলে শিক্ষকেরা বৈষম্য দেখাননি। তাঁরা হয়তো না জেনেই আমার সঙ্গে এমন আচরণ করতেন। আমাদের এমন মানুষই দরকার বেশি করে, যারাই পৃথিবীতে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। লিঙ্গভিত্তিক সমঅধিকার প্রতিষ্ঠাই নারীবাদের মূল লক্ষ্য।
বেইজিংয়ে ১৯৯৭ সালে হিলারি ক্লিনটন নারীর অধিকার নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি যে সব বিষয়ে পরিবর্তনের প্রত্যাশা করেছিলেন, বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবীতে তার উপযোগিতা এখনো বিদ্যমান। আমি জেনে অবাক হয়েছি, সেই সম্মেলনে ৩০ শতাংশের কম অংশগ্রহণকারী ছিলেন পুরুষ। সম্মেলনে মোট অংশগ্রহণকারীর অর্ধেকের কমসংখ্যক পুরুষকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আমরা কীভাবে পৃথিবীতে পরিবর্তন আনতে পারব? নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সাধারণ মানুষ পুরুষবিদ্বেষী হিসেবে দেখে থাকেন। শুধু নারীদের একার পক্ষে অধিকারের জন্য লড়াই করা সম্ভব নয়। পুরুষদেরও নারীর সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। 
নারী–পুরুষের সমঅধিকার নারীর মতো পুরুষেরও ভাবনা। সমাজ আমার বাবাকে বাবা হিসেবে তেমন সম্মান দেয়নি। আমি দেখেছি ছেলেরা নানা ধরনের মানসিক অসুস্থতার শিকার হয়, নানা ভয়ে তারা তাদের সমস্যা কাউকে বলতে পারে না। যুক্তরাজ্যে ২০ থেকে ৪৯ বছরের পুরুষেরা বেশি আত্মহত্যা করেন। পুরুষেরাও নানা কারণে অধিকারবঞ্চিত। সমতার সুযোগ থেকে তাঁরা অনেকেই অনেক দূরে।
নানা কারণে নারীর মতো পুরুষেরাও নির্যাতনের শিকার। আমরা একজন আরেকজনের জন্য দাঁড়িয়ে এমন বৈষম্য বিলোপ করার চেষ্টা করতে পারি। এটা স্বাধীনতার প্রশ্ন। বৈষম্য বিলোপে পুরুষদেরই এগিয়ে আসতে হবে আগে। আমার প্রত্যাশা, একজন পুরুষ যেমন তাঁর কন্যা, বোন আর মায়ের জন্য কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যেমন কথা বলেন, তেমনি তিনি তাঁর ছেলের পাশে দাঁড়াবেন।
আপনি হয়তো ভাবছেন, হ্যারি পটার-এর এই মেয়েটা কে? সে কেন জাতিসংঘে, কী করছে? আমি নিজেও নিজেকে এমন প্রশ্ন করেছি। আমি নারী-পুরুষের অধিকারবিষয়ক নানা সমস্যা নিয়ে ভাবছি। আমি অবস্থার পরিবর্তন চাই, বদলাতে চাই। আমার কর্তব্য সমস্যার বিরুদ্ধে কথা বলা।
আমি দ্বিধাগ্রস্ত। আমি নিজেকে প্রশ্ন করি, আমি যদি না শুরু করি, তাহলে কে করবে? যদি এখন না করি, তাহলে কখন? সামনে যখন সুযোগ আছে তাহলে আমি কেন দ্বিধাগ্রস্ত হব। আমার কথাগুলো নিশ্চয়ই একসময় কাজে দেবে। বাস্তবতা হলো, আমরা যদি কিছু না করি, তাহলে হয়তো ৭৫ বছর পরে কিংবা তারও বেশি ১০০ বছর পরে নারীরা পুরুষের মতো সমান পারশ্রমিকের অধিকার নিয়ে পথে নামবে। 
সমতার পৃথিবীর জন্য আমরা সব সময় কাজ করতে চাই। ‘হি ফর শি’ এমনই এক উদ্যোগ। আমি সবাইকে সামনে পা বাড়ানোর অনুরোধ করছি। নিজেকে আমার মতো প্রশ্ন করুন, আমি যদি না শুরু করি, তাহলে কে শুরু করবে? এখন যদি শুরু না করি, তাহলে কখন শুরু হবে? 
সবাইকে ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্র: ইউএন ওয়েবকাস্ট। ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত


  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

চাকরি নিয়ে বিদেশ যাবেন ?


মডেল: তনয় ও তাসফি। ছবি: স্বপ্ন নিয়ে

বাংলাদেশের কত লোক এখন বিদেশে থাকেন, সেই সংখ্যাটি কি আপনার জানা আছে? সংখ্যাটি প্রায় এক কোটি। শুনে হয়তো চমকে উঠতে পারেন। কিন্তু ভালো করে ভেবে দেখুন, আপনারই কোনো না কোনো স্বজন বিদেশে আছেন। এই পৃথিবীর এমন কোনো দেশ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে বাংলাদেশিরা নেই। অল্প কিছু মানুষ লেখাপড়া বা স্থায়ীভাবে আবাস গড়তে গেলেও অধিকাংশই গেছেন চাকরি নিয়ে। 
বৈদেশিক এ কর্মসংস্থান কেবল যে বেকারত্ব দূর করছে তা-ই নয়, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বা বৈদেশিক মুদ্রাই এখন সচল রাখছে দেশের অর্থনীতি। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর গড়ে ১০ থেকে ১৫ লাখ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। এর মধ্যে প্রতিবছর পাঁচ থেকে ছয় লাখ লোকের কর্মসংস্থানই হচ্ছে বিদেশে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার বাংলাদেশি চাকরি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। 
আপনিও যদি বিদেশে গিয়ে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর চিন্তা করে থাকেন, সেটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে আপনার অভিবাসন যেন অবশ্যই নিরাপদ হয়। আর সে কারণেই বিদেশে যাওয়ার আগে ভালো করে জেনে নিন কিছু তথ্য। অন্যথায় প্রতারণার শিকার কিংবা বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকে। 
যাঁরা চাকরি নিয়ে বিদেশে যান তাঁরা সাধারণত সুনির্দিষ্ট সময় পর চলে আসেন। জটিলতা আর দালাল এড়িয়ে একজন মানুষের স্বল্প খরচে বিদেশে যাওয়া, নিরাপদে সেই দেশে পৌঁছানো, ঠিকমতো কাজ পাওয়া এবং ভালোভাবে আবার দেশে ফিরে আসাই নিরাপদ অভিবাসন।
আপনি যদি নিরাপদে বিদেশে যেতে চান তাহলে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নিন। প্রথমত, আপনি সরকারের বৈধ কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই বিদেশে যাচ্ছেন কি না? যে কাজে যাচ্ছেন সেই কাজে আপনি দক্ষ কি না। কোন দেশে যাচ্ছেন, কত টাকা বেতনে? খরচের সেই টাকা কত দিনে তুলতে পারবেন? এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব পেলে তবেই বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিন।
নাম নিবন্ধন করুন
নতুন যে আইন করা হয়েছে তাতে সরকারিভাবে নিবন্ধন করা ছাড়া এখন আর কারও বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আপনাকে শুরুতেই ঢাকার জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) কিংবা আপনার জেলার জনশক্তি কার্যালয়ে গিয়ে নাম নিবন্ধন করতে হবে। গত বছর সরকার মালয়েশিয়ায় এবং পরে অন্যান্য দেশে কর্মী নেওয়ার জন্য সারা দেশের ইউনিয়ন ও নগর তথ্য সেবাকেন্দ্রে নাম নিবন্ধন করে। এখনো চাইলে কেউ নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। ৮০ টাকা খরচ করে বিএমটির ডাটাবেজে নাম নিবন্ধন করা যাবে। 
নাম নিবন্ধনের পর আপনি দালাল এড়িয়ে বৈধ যেকোনো রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি প্রায় এক হাজার রিক্রুটিং এজেন্সি আছে, যাদের প্রত্যেকের একটি করে লাইসেন্স নম্বর আছে। www.hrexport-baira.org এ তালিকায় গিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর নাম জানা যাবে। 
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সভাপতি আবুল বাসার বলেন, বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি ছাড়া আর কারও চাকরির জন্য বিদেশে লোক পাঠানোর সুযোগ নেই। কাজেই কেউ অন্য কোথাও টাকা দিয়ে প্রতারিত হবেন না।
কোথায় যাবেন, কত খরচ? 
প্রশ্ন হলো, বিদেশে যেতে কত টাকা খরচ হয়? এর কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই। আপনি কোন দেশে যাচ্ছেন, কী কাজে যাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। তবে যত বেশি দালালদের এড়িয়ে চলতে পারবেন, ততই খরচ কমবে। ঢাকায় এসে সরাসরি যদি কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি বা বোয়েসেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন, তাহলে খরচ কম পড়বে। তবে খরচ কত পড়বে তার চেয়েও বেশি জরুরি আপনি কত টাকা বেতনে যাচ্ছেন। একটি বিষয় মাথায় রাখুন, যত টাকা খরচ করে যাচ্ছেন, সেই টাকা যেন তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে তুলতে পারেন। আর টাকা লেনদেন অবশ্যই ব্যাংক বা রসিদের মাধ্যমে করবেন। পারলে কয়েকজন সাক্ষী রাখবেন। রসিদ না রাখতে পারলে যত টাকাই দিন না কেন তার কোনো বৈধতা থাকে না।
এবার সিদ্ধান্ত নিন কোন দেশে যাবেন? বাংলাদেশ থেকে যাঁরা বিদেশে যান, তাঁদের একটি বড় অংশই হুট করে বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা ভাবেন, বিদেশে গেলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, ঘুরে যাবে ভাগ্যের চাকা। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। ঠিকমতো ভেবেচিন্তে না গেলে আপনার লাভের চেয়ে সংকটই বেশি হতে পারে। কাজেই বিদেশে যাওয়ার আগে সময় নিয়ে ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে। কখনোই কোনো দালালের সহায়তা নেবেন না। 
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার ১৮৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ২৬ লাখ সৌদি আরবে আর ২৩ লাখই গেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে এ দুই বাজারেই এখন মন্দা চলছে। কয়েক বছর ধরে সবচেয়ে বেশি কর্মী যাচ্ছেন ওমান, কাতার আর সিঙ্গাপুরে। এর বাইরেও মালয়েশিয়া, বাহরাইন, মরিশাস, ইরাক, লিবিয়া, লেবানন, জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রুনেই, ইতালি ও ইউরোপে কিছু লোক যাচ্ছে।
বায়রার মহাসচিব মনসুর আহমেদ কালাম জানালেন, বাংলাদেশ থেকে যাঁরা বিদেশে যেতে চান তাঁদের বেশির ভাগই অদক্ষ শ্রমিক। কিন্তু তাঁরা একটু প্রশিক্ষণ নিলেই দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। আর দক্ষতা বাড়লে তাঁদের বেতনও অনেক বেড়ে যাবে। কাজেই যাঁরা বিদেশে যেতে চাইছেন, তাঁদের উচিত কোনো একটা কাজে দক্ষতা অর্জন করা।
নতুন গস্তব্য
সরকারিভাবে যেতে পারেন মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া। শিক্ষিত তরুণেরা ভাষা শিখে উচ্চ বেতনে যেতে পারেন দক্ষিণ কোরিয়া। এ জন্য খরচ হবে ৬০ হাজার টাকা। এক মাসেই এই টাকা বেতন পাবেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে হলে সরকারি একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়াও বাংলাদেশ থেকে আবার কর্মী নিচ্ছে। এ জন্য দুই দেশের সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতাও হয়েছে, যাকে জি টু জি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) বলে। এর ফলে মাত্র ৩২ হাজার টাকায় কর্মী যাচ্ছে মালয়েশিয়ায়। কাজেই মালয়েশিয়াও যেতে পারেন। তবে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য গত বছরের জানুয়ারি মাসেই সারা দেশে নাম নিবন্ধন করা হয়ে গেছে। আবার কবে নাম নিবন্ধনের সুযোগ দেয় সরকার সেই অপেক্ষায় থাকতে হবে। কিন্তু কোনোভাবেই সাগরপথে কিংবা অন্য কোনো অবৈধ উপায়ে মালয়েশিয়া যাবেন না। এর পরিণতি হয় মৃত্যু, নইলে জেল।

শিক্ষিত তরুণেরা ভাষা শিখে উচ্চ বেতনে বিদেশে যেতে পারেন। মডেল: সিরাজিস ও মুন। ছবি: খালেদ সরকার

মেয়েদের জন্য সুযোগ
মেয়েরা যেতে পারেন জর্ডান ও লেবাননে। ১৯৯০ সাল থেকে পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও বিদেশে চাকরি নিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছেন জর্ডান আর লেবাননে। সম্প্রতি হংকং সরকারিভাবে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নিচ্ছে। এর বাইরে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। 
একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কোনো নারী চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে পারবেন না। তবে গৃহকর্মী ও পোশাকশ্রমিকদের ক্ষেত্রে বয়স ২৫ হতে হবে। সরকারি একমাত্র জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল বিনা খরচে মেয়েদের বিদেশে পাঠানোর সহায়তা দেয়। কাজেই কোনো প্রতিষ্ঠান বা দালাল এড়িয়ে বোয়েসেলে যান এবং সেখান থেকে সঠিকভাবে তথ্য জেনেই কেবল মেয়েদের বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

নিতে পারেন ব্যাংক ঋণবিদেশগামীদের অনেককেই বিদেশে যাওয়ার জন্য জমিজমা বিক্রি করতে হয়। অনেককে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়। তবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য সরকার প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক চালু করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে বিদেশগামীরা ঋণ নিতে পারবেন। এ জন্য তাঁকে বিদেশে চাকরির নিয়োগপত্র দেখালেই চলবে। এ ছাড়া সোনালী, অগ্রণী, জনতাসহ সরকারি-বেসরকারি আরও অনেক ব্যাংকই এখন বিদেশে যাওয়ার জন্য স্বল্পসুদে ঋণ দিচ্ছে।
আরও যা জানতে হবে
আপনি যে দেশেই যেতে চান না কেন, প্রথমেই দরকার নিজের পাসপোর্ট। এখন আর দালাল ধরে পাসপোর্ট করা যায় না। তাই নিজেই পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে এমআরপি পাসপোর্ট করুন। বিদেশে যাওয়ার আগে আপনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। যে দেশে যাবেন সেই দেশের অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন।
বিদেশে যে কোম্পানিতে চাকরি করতে যাচ্ছেন সেখানকার চাকরির শর্ত জেনে নিন। চুক্তির শর্তে বেতন-ভাতা, থাকা–খাওয়া, ছুটি, চিকিৎসাসহ কোম্পানির সব সুযোগ-সুবিধা জেনে নিন। যেই দেশে যাচ্ছেন পাসপোর্টে সেই দেশের ভিসা আছে কি না দেখে নিন। চাকরি নিয়ে যেতে হলে ‘এমপ্লয়মেন্ট ভিসা’ লাগবে। ভিসা ছাড়া কেউ বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিমানবন্দরেই আটক হতে পারেন।
বিদেশে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিট করতে হয়। টিকিট করার সময় অবশ্যই প্লেন ছাড়ার সময় ও এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর সময় জেনে নিন। পথে কোথাও যাত্রাবিরতি বা ট্রানজিট আছে কি না সেটিও জানুন।
বিদেশে যাত্রার কয়েক দিন আগে ভিসা সিলসহ পাসপোর্ট, মেডিকেল সনদ, বিএমইটির বহির্গমন ছাড়পত্র, স্মার্ট কার্ড, চাকরির চুক্তি, যে দেশে যাবেন সেই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের ঠিকানা এগুলো যত্ন করে রাখুন। প্রয়োজনে এগুলোর ফটোকপি পরিবারের কাছে দিয়ে যান। 
বিদেশে যাওয়ার সব বিষয় চূড়ান্ত হয়ে গেলে বাড়ির কাছে সুবিধাজনক কোনো ব্যাংকে দুটি হিসাব খুলুন। একটি নিজের নামে এবং অন্যটি পরিবারের কারও নামে খুলুন। একটি অ্যাকাউন্টে পরিবারের বা সংসারের খরচের অর্থ পাঠান। আর নিজের হিসাবে টাকা জমাতে পারেন। 
বিদেশে থাকা অবস্থায় একটি বড় সমস্যা টাকা পাঠানো। মনে রাখবেন, শুধু সরকার অনুমোদিত ব্যাংক প্রতিষ্ঠান বা মানি একচেঞ্জের মাধ্যমেই টাকা পাঠানো বৈধ। কখনোই হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন না।
বিদেশে থাকা অবস্থায় অবশ্যই সে দেশের প্রচলিত আইন-কানুন মেনে চলুন। সে দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের নম্বর রাখুন। কোনো প্রয়োজন হলে দূতাবাসে যোগাযোগ করুন।
কখনোই যা করবেন না
বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আপনি কখনোই দালালদের কাছে যাবেন না। কখনো কোনো অবস্থাতেই অগ্রিম অর্থ লেনদেন করবেন না। বিনা রসিদে কাউকে টাকা দেবেন না। রিক্রুটিং এজেন্সি বাদে কারও কাছে পাসপোর্ট দেবেন না। যে কাজ পারেন না সেই কাজ করতে যাবেন না। ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দেবেন না। মাদকাসক্ত অবস্থায় বিদেশে যাবেন না।
প্রয়োজনীয় কিছু নম্বর ও ঠিকানা
প্রবাসীকলাণ ভবন, ৭১-৭২, পুরোনো এলিফ্যান্ট রোড, ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকা। www.probashi.gov.bd
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) : ৮৯/২, কাকরাইল ঢাকা, www.bmet.org.bd
বোয়েসেল: ৭১-৭২ এলিফ্যান্ট রোড, ইস্কাটন গার্ডের ঢাকা। ৯৩৬১৫১৫,৯৩৩৬৫৫১ www.boesl.org.bd 
বায়রা: বায়রা ভবন, ১৩০ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা। টেলিফোন: ৮৩৫৯৮৪২, ৯৩৪৫৫৮৭ www.hrexport-baira.org




  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

হতে হবে আশাবাদী: বিল গেটস



বিল গেটস

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের অন্যতম। তাঁর জন্ম ১৯৫৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দেন এবং মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মাইক্রোসফটের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে জনকল্যাণমূলক নানা কাজে যুক্ত আছেন।
অভিনন্দন, ২০১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ মেলিন্ডা ও আমি আজ এখানে উপস্থিত হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত৷ তোমাদের এই ক্যাম্পাস অনেক দিক থেকেই অসাধারণ৷ তবে আমাদের যদি একটি শব্দে বলতে হয় স্ট্যানফোর্ডের কোন বিষয়কে আমরা সবচেয়ে ভালোবাসি, তা হবে আশাবাদী মনোভাব৷
১৯৭৫ সালে এই আশা নিয়েই আমি বোস্টনের এক কলেজ ছেড়ে এসে কাজে নেমে পড়েছিলাম৷ আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, কম্পিউটার ও সফটওয়্যার পৃথিবীজুড়ে মানুষের জীবনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করতে পারবে, পৃথিবীকে আরও অনেক উন্নত করে তুলবে৷ কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে৷ আমরা যা শিখেছি, আজ সেসব তোমাদের বলতে চাই৷ আর জানাতে চাই, কীভাবে আমরা সবাই আরও অনেক মানুষের জন্য অনেক কিছু করতে পারি৷

যখন পল অ্যালেন আর আমি মাইক্রোসফট শুরু করেছিলাম, তখন আমদের লক্ষ্য ছিল কম্পিউটার ও সফটওয়্যারের ক্ষমতাকে সাধারণ মানুষের কাজে লাগানো৷ ১৯৯৭ সালে আমি ব্যবসার কাজে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় যাই৷ একদিন আমি কৌতূহলবশত শহরের একটু দূরে সোয়েটো নামে একটা জায়গায় যাই; এমন জায়গা আমি জীবনে কখনো দেখিনি৷ মাইক্রোসফট সেখানে একটি কমিউনিটি সেন্টারে কম্পিউটার ও সফটয়্যার বিতরণ করেছিল, যেভাবে আমেরিকায় আমরা কাজ করতাম৷ কিন্তু আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমি বুঝে গেলাম, এটা আমেরিকা নয়৷ এর আগে আমি দারিদ্র্যকে দেখেছিলাম পরিসংখ্যানে, নিজের চোখে নয়৷ সেখানে গিয়ে আমি দেখলাম, কীভাবে মানুষ বিদ্যুৎ, পানি, টয়লেট ছাড়াই বস্তিতে থাকছে৷ বেশির ভাগের পায়েই কোনো জুতা ছিল না, জুতা পায়ে হাঁটার মতো রাস্তাও ছিল না৷ যে কমিউনিটি সেন্টারে আমরা কম্পিউটার দান করেছিলাম, সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা ছিল না৷ তাই তারা ২০০ ফুট লম্বা তার দিয়ে ডিজেলচালিত একটি জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে কম্পিউটার চালিয়ে রেখেছিল৷ অবস্থা দেখে আমি ভালোভাবেই বুঝলাম, যে মুহূর্তে আমি আর আমার সঙ্গের লোকজন চলে যাব, তৎক্ষণাৎ এই জেনারেটরও অন্য কোথাও চলে যাবে৷ আর কমিউনিটি সেন্টারের লোকেরাও তাদের জীবনের অন্য হাজার সমস্যা সমাধানে ব্যস্ত হয়ে পড়বে; সেসব সমস্যা কখনো কম্পিউটার দিয়ে সমাধান করা যায় না৷
গণমাধ্যমের সামনে এসে আমি আগে থেকে তৈরি করে রাখা বক্তৃতা পড়ছিলাম৷ বলছিলাম, ‘সোয়েটো প্রযুক্তির বিভাজনকে ঘুচিয়ে দেওয়ার যাত্রায় একটি মাইলফলকের নাম৷’ কিন্তু মুখে যা-ই বলি, আমি বুঝতে পারছিলাম, এসব কথার কোনো অর্থ নেই৷ 
সোয়েটোতে যাওয়ার আগে আমি ভাবতাম, আমি পৃথিবীর সমস্যা বুঝি, কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলো নিয়েই আমার কোনো ধারণা ছিল না৷ আমার এত অসহায় লেগেছিল যে আমি নিজের বিশ্বাসকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলাম, আদৌ কি উদ্ভাবনের মাধ্যমে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব? আমি প্রতিজ্ঞা করলাম, দ্বিতীয়বার আফ্রিকায় পা দেওয়ার আগে আমাকে বুঝতে হবে দারিদ্র্য আসলে কী৷
অনেক পরে দক্ষিণ আফ্রিকায় আমি একটি যক্ষা হাসপাতাল দেখতে গিয়েছিলাম৷ সেটি একটি বিশেষ ধরনের যক্ষা রোগীদের জন্য, যাদের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫০ ভাগেরও কম৷ গোটা হাসপাতাল রোগীদের ভিড়ে উপচে পড়ছে৷ রোগীদের মধ্যে আমি এক নারীর সঙ্গে কথা বললাম, তার বয়স মাত্র ত্রিশের কোঠায়৷ সে আগে এক যক্ষা হাসপাতালে কাজ করত, একদিন তার নিজেরও যক্ষা ধরা পড়ে, সঙ্গে এইডস৷ সে জানত, তার দিন ফুরিয়ে এসেছে৷ আর তার মৃত্যুর পর যখন সেই বিছানা খালি হয়ে যাবে, সেখানে জায়গা করে নিতেও রোগীদের এক বিশাল লাইন অপেক্ষা করে আছে৷ তারা অপেক্ষা করছে সেই দিনের৷
আমি গাড়িতে উঠে সেখানকার এক ডাক্তারকে বললাম, ‘হ্যাঁ, আমি জানি এ ধরনের যক্ষা সারিয়ে তোলা মুশকিল৷ কিন্তু কোনো না কোনো উপায় নিশ্চয়ই আছে৷ এসব মানুষের জন্য আমাদের কিছু করতেই হবে৷’
আমি আজ আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি এ বছর আমরা যক্ষার এক নতুন ধরনের ওষুধের পরীক্ষা করতে যাচ্ছি৷ আগে যেখানে ১৮ মাস ধরে প্রায় দুই হাজার ডলার খরচের পরও শতকরা ৫০ জনের বেশি রোগীকে সুস্থ করা যেত না, এখন সেখানে ছয় মাসের চিকিৎসায় ১০০ ডলারের কম খরচেই শতকরা ৮০ থেকে ৯০ জন রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হবে৷ এখানেই আশাবাদের শক্তি নিহিত৷ কে বলেছে আমরা দারিদ্র্য কিংবা রোগব্যাধিকে মির্মূল করতে পারব না? আমরা অবশ্যই পারব৷ সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে অনুপ্রেরণা জোগায়৷ কিন্তু সমস্যাকে নিজের চোখে না দেখলে শুধু আশা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যায় না৷

আমি হতাশাবাদীদের দলে নই৷ কিন্তু আমাদের স্বীকার করতে হবে যে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে যদি আমরা বৈষম্য দূরীকরণের কাজে না লাগাই, তাহলে ভবিষ্যতে আমরা এমন সব উদ্ভাবন নিয়ে বসে থাকব, যা পৃথিবীকে আরও বিভক্ত করে ফেলবে৷ উদ্ভাবন দিয়ে কী হবে, যদি তা স্কুলে শিক্ষার মান না বাড়ায়? যদি ম্যালেরিয়া নির্মূল করা না যায়, দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব না হয়, দরিদ্র কৃষকের অন্নের নিশ্চয়তা না থাকে?
তোমরা স্নাতকেরা অসংখ্য উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দেবে, পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ তোমাদের বয়সে আমি পৃথিবীকে যতটা চিনতাম, আমি বিশ্বাস করি, আজ তোমরা তার চেয়ে অনেক বেশি জানো৷ আমি যা করেছি, তোমরা তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু করতে পারবে, যদি তোমরা এতে তোমাদের মনপ্রাণ ঢেলে দাও৷ আমি সেই প্রত্যাশায় রইলাম৷
সূত্র: স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট। 
১৫ জুন, ২০১৪ যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দেওয়া বিল গেটসের বক্তব্যের নির্বাচিত অংশের ..



  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

শূন্য থেকে শীর্ষে


ওয়ারেন বাফেট
ওয়ারেন বাফেট
মুদি দোকা​নি থেকে ধনকুবের

ব্যবসাতেই ছিল তাঁর সব আগ্রহ। ছোটবেলা থেকে কীভাবে টাকা কামানো আর সঞ্চয় করা যায়, তা-ই মাথায় ঘুরত তাঁর। ওয়ারেন বাফেট টাকা আয়ের জন্য বাড়ি বাড়ি চুইংগাম, কোল্ড ড্রিংকস এমনকি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনও বিক্রি শুরু করেন। আরও টাকা আয়ের জন্য দাদার মুদি দোকানে কাজ শুরু করেন তিনি। একদিকে দোকানে কাজ অন্যদিকে পত্রিকা হকারি, গলফ বল বিক্রি। সেই মুদি দোকানে কাজ করা ছেলেটিই আজকের পৃথিবীর ধনাঢ্য ব্যক্তিদের শিরোমণি ওয়ারেন বাফেট।
জনি ডেপ
জনি ডেপ
কলম বিক্রেতা থেকে অভিনেতা


পাইরেটস অব ক্যারিবিয়ানখ্যাত ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো নামেই পরিচিত অভিনেতা জনি ডেপ। জনির সিনেমা মানেই বক্স অফিসে আলোড়ন। সেই জনি ডেপের প্রথম চাকরি ছিল টেলিমার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কলম বিক্রি করা। প্রথম জীবনে চাকরির পাশাপাশি গান লেখালেখি করেও পেট চালাতেন জনি।

সূত্র: বিজনেজ ইনসাইডার ও বাজফিড



  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

আগে চাই নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া




সেরেনা উইলিয়ামস


৭ সেপ্টেম্বর ইউএস ওপেনের শিরোপা জিতে ১৮তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় করেন টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস। তাঁর জন্ম ১৯৮১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে। বর্তমানে তিনি নারী টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে র‌্যাংকিংয়ে প্রথম।

অনেকেই বলে আমি সুপারস্টার, সব সময় জয়ই যেন আমার লক্ষ্য। কিন্তু আসলে আমি নিতান্তই এক সাধারণ মানুষ। মহামানবী নই। একজন খেলোয়াড়মাত্র, টেনিস খেলেই দিন কাটে আমার। অন্যদের মতো আমিও কথা বলি, হাসি, চিন্তা করি। কেউ কেউ বাড়িয়ে কিংবদন্তিতুল্য অনেক টেনিস খেলোয়াড়ের সঙ্গে আমার তুলনা করেন। কিংবদন্তি? আমি জানি না, আমি শুধুই সেরেনা।
টেনিস কোর্টে আসলে আমি একজন অভিনয়শিল্পীমাত্র। সেখানে রাগ, অভিমান, হাসিকান্না দেখানো বিলাসিতা। দৌড়ে দৌড়ে টেনিস বলে আঘাতের পর আঘাত করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে যাই। প্রতিযোগিতায় সেরা হয়ে পদক হাতে তুলে আমি অভিনয়-দক্ষতা দেখাই। নিজের সঙ্গে বোঝাপড়াটাই আসলে যেকোনো কাজের সাফল্য কিংবা পরিশ্রমের মূল সূত্র। মুখে হাসি রেখে কাজ করে যান, সাফল্য দরজার বাইরে আপনার জন্য অপেক্ষা করবে।
পথে নামলে অন্য মানুষের সমালোচনা আসবেই। তাই বলে থেমে থাকা বোকামি। নিজের কাছে সৎ থাকাটাই সবচেয়ে বড় শক্তি তখন। সমালোচনা আসবে আবার ফিরে যাবে, কিন্তু বিভ্রান্ত হওয়া চলবে না। সাফল্য আসবে কি না তা নিয়ে হতাশ হবেন না। নিজের পথে হেঁটে চলাই তো আনন্দের, গর্বের।
আমার শৈশবটা ছিল দারুণ। বোন ভেনাসের সঙ্গে খেলতে পারাই ছিল আমার ভীষণ আনন্দের। খেলায় আমি থাকতাম রাজকন্যা আর ভেনাস ছিল জাদুকর। আমাদের বেড়ে ওঠা ছিল ক্যালিফোর্নিয়া আর ফ্লোরিডা শহরে। বাবা-মা আর বোনদের নিয়েই ছিল আমার রঙিন ছোটবেলা। সেই সব দিনের কথা ভাবলে আবার ছোট হয়ে যেতে ইচ্ছে করে। টেনিসের সঙ্গে সঙ্গে তখন জিমন্যাস্টিক্স আর ব্যালেতেও আমার আগ্রহ ছিল। আমি সব সময় ভেনাসকে অনুসরণ করতাম। ভেনাস যদি গণিতবিদ হতো তাহলে আমিও সম্ভবত তা-ই হতাম।
আমি পড়াশোনায়ও বোনকে অনুসরণ করতাম। আমার বাবার জন্যই আজ আমরা এখানে। একজন মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় তার পরিবার। পরিবারের কারণেই মানুষ সামান্য থেকে অসামান্য হয়ে ওঠে। আমার বাবার কথা ভাবলে আমারই হিংসা লাগে। তিনি এমনই এক বাবা, যাঁর দুই মেয়েই যখন উম্বলডনের ফাইনালে খেলে আর তিনি কাউকেই সমর্থন করতে পারেন না। এটা তাঁর জন্য যতটা হতাশার, তারচেয়ে বেশি আনন্দের ঘটনা নিশ্চয়ই।
আমার বয়স যখন ১৭ তখন বাবা-মায়ের পরামর্শ ছিল ‘খুশি থাকো, নিজের মতো চলো’। এখনো সেই কথা মনে রেখেছি এবং সেভাবেই চলার চেষ্টা করি। নিজের মতো চলা আর নিজেকে খুশি রাখাই মানুষ হিসেবে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জকে জয় করার নামই জীবন! সফল হবেন কি না তার উত্তর দেবে ভবিষ্যৎ কিন্তু তার আগে মাঠে নামতেই হবে। চ্যালেঞ্জ নিতে হবে নিজেকেই। কাউকে প্রতিপক্ষ ভেবে নয়, নিজের সঙ্গে নিজের চ্যালেঞ্জ নিতে হয়।
আমি অনেক ছোটবেলা থেকে টেনিস খেলা শুরু করি। কখনোই মনে হয় না টেনিসই হবে আমার সব। ১৭ বছর বয়সে আমি যখন প্রথম কোনো প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করি, তখনই আমার ভাগ্য আর লক্ষ্য বদলে যায়। তার আগে পর্যন্ত আমার বিশ্বাস হতো না আমি পারব। কিন্তু মাঠে নামার পরেই সব বদলে গেছে। এর পরের গল্পটা সবার জানা। সেই ১৭ বছরের সেরেনা এখন টেনিস খেলতে পারে।
কিশোর বয়স থেকে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম ফ্রেঞ্চ ওপেন টেনিস প্রতিযোগিতায় আমি আর আমার বোন বিজয়ী হলে ফরাসি ভাষায় কথা বলব। তখন ফরাসি শিখেছিলাম, এখন নিয়মিত ফরাসি বলতে হয় আমাকে। লক্ষ্য ঠিক রাখলে কোনো স্বপ্নই বৃথা যায় না।
আমার বাবার কথা ছিল, ‘তুমি যদি পরাজয়ের কথা ভাব, তাহলে পরাজয় আসন্ন’। এটা কিন্তু সত্যি। আপনি যা ভাববেন তা-ই আপনাকে পৃথিবী দেবে। নিজেকে সাধারণের মধ্যে অনন্য করে তুলতে চাইলে আপনার পরিশ্রমের বিকল্প নেই। ঘাম ঝরালেই আপনার নাম পৃথিবী মনে রাখবে।
ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন থাকবেই। জয়ের স্বাদ আসলে মিষ্টি। কিন্তু জয়কে ধরে রাখাই টক! আমি সাফল্য পেলেও খারাপ সময়গুলোর কথা ভুলে যাই না। আমি প্রশংসার জোয়ারে গা ভাসাই না। সেরা হওয়ার জন্য মাঠে নামি আমি। কোনো প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়া কিন্তু সহজ কোনো কাজ নয়। তার ওপর যদি প্রতিপক্ষের কেউ নিজের বোন হয়। কিন্তু তার পরেও আমি লড়তে মাঠে নামি। লড়াই করার মানসিকতা জীবনকে অনেক দূর নিয়ে যায়।
জীবনের লক্ষ্য একবার ঠিক করে ফেললে তাকে অনুসরণ করতেই হবে। কিশোর বয়সে পাহাড় ডিঙানোর স্বপ্ন দেখলে বৃদ্ধ হলেও সেই স্বপ্ন দেখার শক্তি নিজের মধ্যে রাখতে হবে। আর তাতেই জীবন উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
সিএনএন–এর ২০১২ সালের ২৫ নভেম্বরের সাক্ষাৎকার অবলম্বনে

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

সফল ড্রপআউট!



অপরাহ উইনফ্রে

অপরাহ উইনফ্রে
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

মাত্র ১৩ বছর বয়সে ঘর থেকে পালিয়ে যান অপরাহ উইনফ্রে। পরিবার থেকে দূরে সরে ভর্তি হন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের লিংকন হাইস্কুলে। মেধার জোরে বাগিয়ে নেন রাষ্ট্রীয় এক বৃত্তি। ভর্তি হন নিকোলেট হাইস্কুলে। পরে মায়ের কঠোর ইচ্ছার জন্য অপরাহ ভর্তি হন ইস্ট ন্যাশভিল হাইস্কুলে। আবারও স্কুলে সেরা বক্তার পুরস্কার পেয়ে জিতে নেন আরেক বৃত্তি। স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হন টেনেসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। যোগাযোগ বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৭ বছর বয়সে মিস ব্ল্যাক টেনেসি খেতাব জয় করেন অপরাহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার পাশে এক বেতারে কাজ শুরু করেন তিনি। বেতারে সংবাদপাঠকের কাজ থেকে তাঁর ডাক পড়ে বাল্টিমোরের এক টেলিভিশনে। আর তাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয় তাঁকে। বিশ্ববিদ্যালয় পালানো সেই অপরাহ ২০১৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বক্তব্য দেন।


জন গ্লেন

জন গ্লেন
নভোচারী ও সিনেট সদস্য


স্কুল পালিয়ে মানুষ কত দূর যেতে পারে, তার অনন্য এক উদাহরণ জন গ্লেন। এই ভদ্রলোক স্কুল পালানো প্রথম মানুষ, যিনি কিনা মহাকাশে পা রাখেন। মাসকিংগাম কলেজে প্রকৌশলে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হন তিনি। পদার্থবিজ্ঞানে ভালো ফলের জন্য ব্যক্তিগত বিমান চালানোর লাইসেন্স লাভ করেন তিনি। তখন চারদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা চারদিকে। জাপান যুক্তরাষ্ট্রের পার্ল হারবার আক্রমণ করলে গ্লেন স্কুল পালিয়ে যোগ দেন বিমানবাহিনীতে। ১৯৪২ সালে ২১ বছর বয়সে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন মার্কিন বিমান বহরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে তাঁর সামনে আসে কোরিয়ান যুদ্ধ। তারপরে মহাকাশ গবেষণার জন্য নাসায় যোগ দেন তিনি। ১৯৬২ সালে প্রথম মার্কিন হিসেবে তিনি পৃথিবী আবর্তন করেন। মহাকাশ জয় শেষে পৃথিবীতে ফিরে ২০ বছর আগে ছেড়ে দেওয়া কলেজের কোর্সে আবারও ভর্তি হন তিনি। ৪১ বছর বয়সে অর্জন করেন ব্যাচেলর ডিগ্রি।


ক্যাথেরিন



ক্যাথেরিন 

জেটা-জোন্স
অভিনেত্রী

চকলেট ফ্যাক্টরির মালিক বাবার মেয়ে ক্যাথেরিন। হলিউডে মিষ্টি মেয়ে আর অনন্য সৌন্দর্যের জন্য খ্যাতি তাঁর। অভিনেত্রী ক্যাথেরিন জেটা-জোন্সও স্কুল পালানো দলের সদস্য। ওয়েলশের ডাম্বারটন হাউস স্কুলে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু স্কুলের পড়াশোনার চেয়েও অভিনয়ে আগ্রহ ছিল তাঁর। তাই তো বয়স পনেরো হওয়ার আগেই স্কুল ছেড়ে দেন। ও লেভেল পরীক্ষার আগেই স্কুল থেকে পালান তিনি। যোগ দেন স্থানীয় এক নাটকের দলে।

সূত্র: টাইম মাগাজিন অনলাইন


  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

কৈশোরে কোটিপতি

ম্যাডিসন রবিনসন


স্যান্ডেলের নকশা করেই কোটিপতি

ম্যাডিসন রবিনসন
উদ্যোক্তা


২০১৩ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সেই ১০ লাখ ডলার আয় করে চমকে দেয় টেক্সাসের কিশোরী ম্যাডিসন রবিনসন। আমরা যে স্পঞ্জের স্যান্ডেল পরি, তার জন্য বৈচিত্র্যময় নকশা করেই এখন কোটিপতি ম্যাডিসন। তার প্রতিষ্ঠিত রবিনসন কোম্পানির স্পঞ্জের স্যান্ডেল ব্র্যান্ড ফিস ফ্লপস। এই ব্র্যান্ডের জন্য নানা রঙের স্যান্ডেল নকশা করে সে। প্রতি স্যান্ডেল বিক্রি হয় ২৫ ডলার করে। আর এই বিক্রির লভ্যাংশ দিয়েই এখন সফল উদ্যোক্তা ম্যাডিসন। বর্তমানে তার আয় ১০ লাখ ডলার (প্রায় ৮ কোটি টাকা) ছাড়িয়ে গেছে।





জাস্টিন বিবার


এক গানেই বাজিমাত
জাস্টিন বিবার 
গায়ক


ইউটিউবে আপলোড করা এক ভিডিও থেকেই শুরু বর্তমান সময়ের আলোচিত গায়ক জাস্টিন বিবারের। ২০০৭ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে স্থানীয় এক সংগীত প্রতিযোগিতায় জাস্টিন অংশ নেয় নে-ইয়োর ‘সো সিক’ গানটি নিয়ে। তার মা প্রতিযোগিতায় গাওয়া গানের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে দেন। সেই ভিডিও দেখেই তাকে খুঁজে বের করেন এক রেকর্ড স্টুডিওর মালিক স্কুটার ব্রাউন। আর সেই থেকে যাত্রা শুরু বিবারের। ২০০৯ সালে বিবারের প্রথম একক গান ‘ওয়ান টাইম’ মুক্তি পায়। সে থেকে তার জয় রথ ছুটেই চলছে। এরই মধ্যে ১০ লাখ ডলার আয়ের মাইলফলক ছুঁয়েছে এই টিন সেনসেশন। ইতিমধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর স্টার্টআপ স্ট্যাম্পড, স্পটিফাই, শটস, গেমস নির্মাতা সোজো স্টুডিওতে লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে সে। বর্তমানে তার আয় ১০ দশমিক ৮ লাখ ডলারের (প্রায় ৮.৮ কোটি টাকা) কিছু বেশি।



  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS