Md. Afrooz Zaman Khan

Afrooz
Md. Afrooz Zaman Khan. Powered by Blogger.
RSS

A Short Story About Hercules





A Short Story About Hercules
 Md. Afrooz Zaman Khan

This Short Story Hercules is quite interesting to all the people. Enjoy reading this story.

Hercules was a strong and brave man. He lived in Greece. The King was jealous of Hercules. People might make Hercules the King. Therefore he wanted to get rid of Hercules. He set difficult tasks for Hercules to keep him away from the country so that he would not be a possible threat to him (the King).

Once he asked Hercules to get three golden apples. Some trees were said to bear golden apples. These trees were said to be in a place called Hesperides. But no one knew the way to Hesperides. So the King thought of Hesperides. Hercules would be away for a longer period.

Hercules set out on the journey. At first he met three maidens during the journey. Hercules asked them the way to Hesperides. They told him to ask the old man of the sea. But they also warned him, “Hold the old man of the sea tightly. Otherwise he will escape. No one else knows the way.”

Hercules saw the old man. He was sleeping on the shore. He was looking strange. He had long hair and a beard. Hercules walked to him without making any noise. Then he seized him very firmly.




The old man of the sea opened his eyes. He was surprised. He changed himself into a stag. He tried to free himself from the grip of Hercules. But Hercules held him tight. Then the old man changed himself into a sea-bird and then to other animal forms. But he could not free himself from the clutches of Hercules, because Hercules was making his clutches tighter and tighter. Finally the old man said to Hercules, “Who are you? What do you want from me?”

Hercules replied, “I am Hercules. Tell me the way to Hesperides.”

The old man said, “It is an island. Go along the sea-shore. You will meet a giant. He will show you the way to Hesperides.”

Hercules continued his journey. He met the giant. The giant was very huge and strong. He was sleeping on the shore. Hercules woke him up. The giant was angry. He struck Hercules with a club. Hercules charged at the giant. He lifted the giant and threw him down. But the giant got up immediately. He had become ten times stronger. Hercules threw him down again and again. But each time the giant rose up much stronger. Then Hercules lifted the giant high up in the air. But he did not throw him down. The giant slowly lost all his strength. He now pleaded with Hercules to put him down on the earth. Hercules asked him to tell the way to Hesperides. The giant asked Hercules to meet Atlas. He told him the way to the place where Atlas was.

Hercules continued his journey. He, at last, met Atlas.

“Why do you want the golden apples?” asked Atlas.

“My King has ordered me to get him these three golden apples,” said Hercules.

“It is a long way from here to that place. Only I can go there. Hold this sky for me. I shall get them for you,” said Atlas.

Hercules agreed. He held the sky on his shoulders. Atlas walked away. He was back in a short time. He put down the three golden apples at the foot of Hercules. Hercules thanked Atlas. He requested Atlas to take back the sky from him.

“Take back the sky!” said Atlas cunningly. “I have held it for a thousand years. I shall come back after another thousand years!”

Hercules was astonished at what Atlas told him. But he did not express his astonishment. He recovered his senses and replied, “Oh! In that case, will you please hold the sky for a little while? I shall make a pad for my shoulders to support the sky. Then I shall take back the sky from you.” Thus Hercules talked very quietly.

Atlas agreed. Atlas took back the sky from Hercules. Hercules immediately collected the three golden apples. He bid Atlas goodbye with a mischievous smile on his face. The he walked away towards Greece leaving Atlas speechless and surprised.

Hercules reached his homeland Greece after many days of travel. He gave the three golden apples to the King. The King was surprised to have got the golden apples from Hercules. He was happy. But he pretended not to have been satisfied. But he secretly, he was planning to send away Hercules away on another perilous adventure.







  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

সবাইকে ছাড়িয়ে উর্মিতা


উর্মিতা দত্ত তিন পেশাগত পরীক্ষাতেই প্রথম। ছবি: নাসের সায়েম


     
কিছুটা মন খারাপ হয়েই ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে, সেই উর্মিতা দত্তই কিনা মেডিকেলের তিনটি পেশাগত পরীক্ষাতেই প্রথম স্থান অধিকার করলেন। (পেশাগত পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে ‘প্রফ’ নামেই বেশি পরিচিত।)
২০০৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স (ইইই) বিভাগে পড়ার সুযোগ পান উর্মিতা। পরিবারের সদস্যরা চেয়েছিলেন মেয়ে ঢাকা মেডিকেলে পড়ুক আর উর্মিতা চেয়েছিলেন বুয়েটে পড়তে। শেষ পর্যন্ত মা-বাবার ইচ্ছাতেই ভর্তি হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ‘প্রথম দিকটায় কষ্ট হতো খুব। তবু পরিবারের কথা ভেবে মেনে নেই। প্রথম টার্ম পরীক্ষায় প্রথম হলাম। পরেরগুলোতেও ভালো করলাম। ধীরে ধীরে ডাক্তারিবিদ্যাকে যেন আপন করে নিলাম। তবে ভাবিনি যে পেশাগত পরীক্ষায়ও প্রথম হব।’ বলেন উর্মিতা।
তিনটি পেশাগত পরীক্ষায় সাফল্যের মধ্যে কোনটি কেমন ছিল? প্রশ্নের উত্তরে উর্মিতা,‘মা-বাবার কাছে প্রথম সন্তান যেমন, তিনটি পেশাগত পরীক্ষার মধ্যে প্রথমটিতে প্রথম হওয়ার অনুভূতিটাও অনেকটা সে রকম।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৬৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী উর্মিতা শুধু তিনবার প্রথমই হননি, প্রতিবারই পেয়েছেন অনার্স। প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় অনার্স পেলেন ফিজিওলজি আর বায়োকেমিস্ট্রিতে। দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় অনার্স পেয়েছেন মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি, ফরেনসিক মেডিসিন আর কমিউনিটি মেডিসিনে। শেষ পেশাগত পরীক্ষায়ও মেডিসিন আর গাইনি ও অবস বিষয়ে পেয়েছেন অনার্স মার্কস।
বাবা উত্তম দত্ত একজন ব্যবসায়ী, মা শিখা দত্ত গৃহিণী। একমাত্র ছোট ভাই উচ্ছ্বাস দত্ত দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
১ জুন থেকে শুরু হচ্ছে উর্মিতার এক বছরের ইন্টার্নশিপ। কঠিন সে জীবনটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছেন উর্মিতা। ইন্টার্নশিপের সময়টাকে কাজ শেখার এক সুবর্ণ সুযোগ বলে মনে করেন তিনি।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়েছেন ১২ বছর। ভালো ফলাফল করতেন সেখানেও। এসএসসি আর এইচএসসি দুটোতেই ছিল সব বিষয়ে জিপিএ ৫। ভবিষ্যতে শল্যচিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন যশোরের মেয়ে উর্মিতা। বড় হয়েছেন ঢাকায়। এখন সিদ্ধেশ্বরীর বাসার বারান্দায় ফুল গাছের যত্নআত্তি করে অবসর কাটান। গল্পের বইও পছন্দ তাঁর। সময় পেলে এখনো রবীন্দ্রনাথের ‘গল্পগুচ্ছ’ পড়েন। মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখাও পছন্দ তাঁর। শল্যচিকিৎসায় গবেষণার ব্যাপারেও রয়েছে আগ্রহ। অনিরাময়যোগ্য রোগ নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা আছে। রাস্তার পাশে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে বেড়ে ওঠা অসহায় শিশুদেরও সাহায্য করতে চান। সুযোগ পেলে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে চান। তবে সরকারি চাকরি দিয়ে কাজ পেশাজীবন শুরু করে দেশের মানুষের পাশেই থাকার ইচ্ছা উর্মিতার।

















  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

বড় স্বপ্ন দেখতে হবে


সালমা হায়েক মেক্সিকান-আমেরিকান অভিনেত্রী। ডেসপারাডো, ডগমা, ফ্রিদা তাঁর বিখ্যাত চলচ্চিত্র। নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সালমা সব সময়ই সোচ্চার। নারী অধিকার রক্ষায় ২০১৩ সাল থেকে তিনি ‘চাইম ফর চেঞ্জ’ নামে একটি প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।
 
সালমা হায়েক
 
আমি বড় হয়েছি বাবা-মা এবং ছোট ভাইয়ের সঙ্গে, মেক্সিকোর ছোট একটা শহরে। আমাদের বাসা ছিল সমুদ্রের ধারেই। সারা দিন প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতাম, রাস্তায়-সাগর পাড়ে ফুটবল খেলতাম। এর চেয়ে ভালো শৈশব একজন শিশু আর কোথায় পাবে?
আমাকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করে, আমার নিজের কোনো রোল মডেল আছে কি না, বা অভিনেত্রী হিসেবে আমি কাউকে অনুসরণ করি কি না। জীবনের অনেকটুকু সময় আমি এর উত্তর নিয়ে সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু দেরিতে হলেও আমি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়েছি। আমি বুঝতে পেরেছি, আমার পরিবারের সেই সব নারী যাঁরা প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও সেটাকে বিকশিত করার সুযোগ পাননি, তাঁদের স্বপ্নগুলোকে পূর্ণতা দিতে পারেননি—তাঁরাই আমার জীবনের অনুপ্রেরণা।
আমার মাকে তাঁর স্বপ্নের পথ থেকে সরে আসতে হয়েছিল। তিনি একজন সংগীতশিল্পী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় সমাজে এটাকে ছোট করে দেখা হতো। তিনি নিজেকে মিথ্যা সান্ত্বনা দিতেন যে তাঁর হয়তো সেই যোগ্যতা নেই। সংগীতের সাধনা করার বদলে তিনি বিয়ে করলেন, তাঁর সন্তানেরা জন্ম নিল। এর অনেক বছর পরে সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে তিনি আবার সংগীতের চর্চা শুরু করলেন এবং অসাধারণ সাফল্য পেলেন।
এরপর মা আমাদের শহরে গান শেখার স্কুল খুললেন। শিশুদের অপেরা শেখাতে শুরু করলেন, অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। মেক্সিকো সিটি থেকে ভালো শিক্ষক নিয়ে এলেন। তাঁদের অনেক ছাত্র এখন পেশাদার শিল্পী হিসেবে খ্যাতিমান হয়েছেন।
বাবা-মাকে দেখে আমি সব সময়ই মানুষকে সাহায্য করতে শিখেছি। বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকার রক্ষায় ‘চাইম ফর চেঞ্জ’ যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে, তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুপ্রেরণা তাঁদের কাছ থেকেই আমি পেয়েছি। পৃথিবীর যেখানে জনগণ নিপীড়নের শিকার হয়েছে, সেখানে নারীরাই সবচেয়ে নিগৃহীত হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে আমরা দেখতে পাব, সমগ্র আমেরিকাজুড়ে মানব পাচার একটি লাভজনক ব্যবসা। এখানে নারীরা এখনো পারিবারিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছে এবং তাঁদের সাহায্য করার জন্য পর্যাপ্ত বিচারিক ব্যবস্থা নেই।
আমার দাদি মারিয়া লিসা লোপেজ, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। একাধারে তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান কবি, গীতিকার, বিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ। ইতিহাস ও চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়েও তিনি অনেক কিছু জানতেন।
তিনি নিজেই বিউটি ক্রিম বানাতেন এবং বাজারজাত করতেন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এসব তিনি করতেন তাঁর রান্নাঘরে। তিনি তাঁর সময়ের চেয়ে অনেকটুকুই এগিয়ে ছিলেন এবং যেকোনো কিছুই করতে পারতেন। কিন্তু সময়টা তখন ছিল ১৯৩০। তাই তাঁকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে তিনি তাঁর স্বামীকে ত্যাগ করেন এবং মেক্সিকো সিটিতে চলে এসে নিজের ব্যবসা শুরু করেন।
নিজেকে একজন মা ভাবতে আমি গর্ব বোধ করি। কিছু মানুষের জন্য মাতৃত্ব একটা কাজের বোঝা। কিন্তু আমার জন্য তা নয়, এটার কারণ হতে পারে আমি আমার মেয়ে ভ্যালেন্তিনা’কে পেয়েছি জীবনের ৪১তম বছরে এসে।
আমার অনেক বন্ধু, যাদের কোনো সন্তান নেই তারা বলে, আমার সঙ্গে থাকা অসম্ভব। কারণ, আমার সব কথাই মাতৃত্বকে কেন্দ্র করে। কিন্তু একজন মা হওয়া হাজারো কাজের চেয়ে ক্লান্তিকর। মা হওয়া ছাড়া আমি এখন কোনো কাজ করছি না। আমি এখন যে কাজটি করছি সেটি টাকার জন্য নয়। এটা মানুষ হিসেবে আমার নিজের উন্নতির জন্য।
আমি যখন অভিনয় শুরু করি, আমাকে বারবার বলা হয়েছিল, আমি যথেষ্ট ভালো না। কিন্তু আমি প্রতিবার নিজেকে বলেছি, আমাকে লেগে থাকতে হবে। আমি এখন বুঝতে পারি, আমার মা ও দাদির অভিজ্ঞতাগুলো আমাকে কতটুকু সাহায্য করেছিল। ভ্যালেন্তিনাকেও আমি একইভাবে বড় করতে চাই। তার ওপরে আমি কোনো স্বপ্ন বা চাহিদা চাপিয়ে দিতে চাই না। আমি চাই, সে বড় স্বপ্ন দেখবে এবং নিজের যোগ্যতায় সেটা অর্জন করে নেবে।
একজন অভিনেত্রী হিসেবে, একজন মা হিসেবে আমি সব সময়ই সেরা কিছু করতে চেয়েছি। কারণ, আমি সেই সব মহান নারীকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে চেয়েছি, যাঁরা নিজেদের প্রতিভার প্রাপ্য সম্মানটুকু পাননি।
আমি নিজেকে একজন নারীবাদী হিসেবে ভাবি। কারণ, আমি নারীদের ভালোবাসি এবং তাঁদের জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত। আমি চাই পৃথিবীটাকে নারীদের জন্য নিরাপদ করে গড়ে তুলতে। আমি নারীবাদী কারণ, বন্ধু হিসেবে, সহকর্মী হিসেবে আমি প্রতিদিনই নারীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হচ্ছি। অনেক অসাধারণ নারী আমাকে আজকের আমি হিসেবে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করেছেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান। ২৯ মার্চ, ২০১৩ সালে দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকার অবলম্বনে




  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

হার্ভার্ডের সমাবর্তনে

     
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে লেখক (বাম থেকে তৃতীয়)


চার বছরের পথচলা। শেষ? না, শেষের শুরু? প্রতিদিন ক্লাসে যাওয়ার দৌড়াদড়ি, নানা দেশের নানা মতের বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা। পড়াশোনা, গবেষণা, ঘুরে বেড়ানো, জানাশোনার চেষ্টায় জাদুঘর-লাইব্রেরি এখানে-সেখানে বই নিয়ে আর পড়তে হবে না। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, এলিয়ট হাউসের ডাইনিং, বারান্দায় বৃষ্টি, তুষার আর রৌদ্রঝলক দেখার সমাপ্তের ঘণ্টা বেজে গেছে। হাউস মাস্টার ডাগ মেল্টনের নিয়মকানুনের কথা সব সময় মনে থাকে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২৮ মে। বাংলাদেশের একমাত্র গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী হিসেবে এই সমাবর্তনে আমি অংশ নিই। আমি ছাড়াও পিএইচডি পর্যায়ে রেজওয়ান হক নামের আরেকজন বাংলাদেশিও অংশ নেন। ১৬ মে আমার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি। দেশ থেকে আমার পুরো পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে এসে হাজির। শুধু আমিই নই, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সব শিক্ষার্থীর পরিবার-পরিজনদের মেলা বসে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টারসেন্টেনারি থিয়েটারে শুরু হয় সমাবর্তন–যজ্ঞ। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে হার্ভার্ডের ম্যাসাচুসেটস অ্যাভিনিউ, কুইন্সি স্ট্রিট, ব্র্যাটেল স্ট্রিট, ব্রডওয়ে, কেমব্রিজ স্ট্রিটে কালো গাউন আর হ্যাট পরে ২০১৫ সালের গ্র্যাজুয়েটদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে। ক্লাস ডে স্পিকার হিসেবে এ বছর বক্তব্য দেন হলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী নাটালি পোর্টম্যান। পোর্টম্যান হার্ভার্ড কলেজে সাইকোলজি বিষয়ে ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি সমাবর্তন বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৯৯ সালে আমি ফ্রেশম্যান হিসেবে হার্ভার্ডে পা রাখি। এখানে আসার আগে আমি কোনো দিন ১০ পাতা লেখার চর্চা করিনি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েই আমি সপ্তাহে এক হাজার পাতা পড়ার চর্চা করতাম, আর তাতেই শেষ পর্যন্ত ৫০ পাতার থিসিস নিজে লিখেছিলাম। আমার বিশ্ববিদ্যালয়জীবন ছিল দারুণ অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। আজ সব মনে পড়ছে।’ নাটালির মতোই অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার সব শিক্ষার্থীর মনে যেন গেল চার বছরের সব ঘটনার টুকরো টুকরো ফ্ল্যাশব্যাক চলছিল।

২৭ মে আয়োজন করা হয় ক্লাস ডে পিকনিক। সেদিনে বিকেলে ছিল ক্লাস ডে এক্সারসাইট। এখানে এমেস অ্যাওয়ার্ড, হার্ভার্ড ও আইভি ওরেশনস ও ক্লাস ওড হিসেবে ‘ফেয়ার হার্ভার্ড’ গাওয়া হয়। ২৮ মে সকালে ছিল মর্নিং এক্সারসাইজ। গ্র্যাজুয়েটরা ক্যাপ আর গাউন পরে ছিল ছবি তোলায় মহা ব্যস্ত। ৩২ হাজারের বেশি মানুষ হাজির ছিল এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব হাজির হয়েছিল এই রঙিন আয়োজনে। ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকেও এদিন দেখা গিয়েছিল হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে। মার্ক জাকারবার্গ-পত্নী প্রিসিলার বোন মিশেলও এবারের সমাবর্তনে অংশ নেন বলে জাকারবার্গকে ক্যাম্পাসে দেখা যায়।

আমরা বন্ধুরা ছিলাম ভীষণ উত্তেজিত। সামনে নতুন জীবন, পেছনে আলোকিত স্মৃতি। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল লাৎসকি, কার্ল গাও, ভারতের রিষভ মুখার্জি, অ্যান্ড্রু লিও, অর্পন রাকসিতসহ অনেক বন্ধুর সঙ্গে ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমি ইবেতে ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে যোগদান করছি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আর হয়তো শিক্ষার্থী হিসেবে আসা হবে না। এখানকার শিক্ষা আর শক্তি নিজ কর্মক্ষেত্রে প্রমাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্থকতা প্রমাণ করতে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করি।







  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

চাকরিপ্রার্থী নই, চাকরিদাতা


ইউনূস সেন্টারের সামাজিক ব্যবসা দিবসের অনুষ্ঠানে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা এসেছিলেন তাঁদের পণ্য নিয়ে। ছবি: সাইফুল ইসলাম
 
২৮ মে ছিল সামাজিক ব্যবসা দিবস। দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘আমরা চাকরিপ্রার্থী নই, আমরা চাকরিদাতা—বেকারদের উদ্যোক্তায় রূপান্তর’। এ উপলক্ষে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনূস সেন্টার আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৩০টি দেশের আড়াই শ অতিথি এসেছিলেন। অনুষ্ঠানে ‘আমরা চাকরিপ্রার্থী নই, চাকরিদাতা’ শীর্ষক আলোচনায় ছয়জন উদ্যোক্তা নিজেদের সামাজিক ব্যবসার মডেল উপস্থাপন করেন। তাঁরা হলেন লাভলী বেগম, মাফিয়া পারভীন, নাজনীন আক্তার, রেজাউল করিম, জান্নাতুল আফরিন ও ইব্রাহিম হোসেন। ‘গ্রামীণ কল্যাণ’-এর নবীন উদ্যোক্তা বিনিয়োগ কর্মসূচির আওতায় তাঁরা ঋণ নিয়ে কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এঁদের মধ্যে স্বপ্ন নিয়েকে চারজন জানান তাঁদের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা।


প্রযুক্তির পথিক
ইব্রাহিম হোসেন, যশোর

২০০০ সালে এসএসসি পাস করার পর পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে থেমে যায় পড়াশোনা। টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ শুরু করেন একটি কম্পিউটার মেরামত প্রতিষ্ঠানে। যদিও ইব্রাহিম হোসেনের তখন প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ডিগ্রি ছিল না। তিনি জানান, ‘আমি কাজ করতে গিয়েই কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছি। ব্যবসা সম্পর্কে শিখেছি।’
এরপর লিংক কম্পিউটার নামে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন ইব্রাহিম। তিনি কম্পিউটারের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ বিক্রিসহ সার্ভিসিং করেন নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে।
বর্তমানে তিনজন স্থায়ী ও কয়েকজন অস্থায়ী কর্মী রয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠানে। ইব্রাহিম স্বপ্ন দেখেন নিজের ব্যবসার পরিসর বাড়িয়ে দেশের বাইরে থেকে সরাসরি যন্ত্রাংশ আমদানি করার।


বিনা পয়সায় ব্যবসা শুরু

লাভলী বেগম, চাঁদপুর

লাভলী বেগম তখন কাজ করতেন স্থানীয় এক বুটিকসের দোকানে। কাজ করতে গিয়ে বুঝলেন তাঁর প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। কিন্তু প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজন পাঁচ হাজার টাকা। যে অর্থের সংস্থান করা লাভলী বেগমের জন্য ছিল অকল্পনীয়। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে আগ্রহের কথা বললে তাঁকে কাজের বিনিময়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয়। ২০০৪ সালে নিজেই গড়ে তোলেন একটি বুটিকস হাউস। এলাকার গণ্ডি পেরিয়ে বুটিকস পণ্য সরবরাহ শুরু করেন ঢাকায়। এখন প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়ছে। পরবর্তী সময়ে ঋণ নেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পুঁজি। এরপর গড়ে তোলেন বিউটি পারলার। সব মিলে লাভলী বেগমের অধীনে এখন কাজ করেন ১২ জন নারীকর্মী। তিনি স্বপ্ন দেখেন, নারীদের স্বাবলম্বী করার, মাথা উঁচু করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।

চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা

রেজাউল করিম, ময়মনসিংহ

২০১২ সালে সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে রেজাউল করিম যোগ দিয়েছিলেন একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু চাকরিতে মন টেকেনি। চাকরি ছেড়ে তখন তিনি গ্রামে। নিজেই স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আত্মীয়স্বজনেরা আবার চাকরিতে যোগ দিতে বলেন। চাকরির প্রস্তাবও পেয়ে যান কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে। কিন্তু তিনি যোগ দেননি কোথাও। এর মধ্যেই গ্রামীণ ব্যাংকের স্থানীয় এক কর্মীর কাছে গ্রামীণ কল্যাণের বিনিয়োগ প্রকল্প সম্পর্কে জানতে পারেন। একদিন একটি প্রকল্প নিয়ে হাজির হন ঢাকার ইউনূস সেন্টারে। অনুমোদন পায় তাঁর প্রকল্প। ২০১৪ সালে শুরু করে এরই মধ্যে তাঁর প্রকল্পে রয়েছে চারটি গাভি। নিজের ব্যবসার মানোন্নয়নসহ এলাকায় কয়েকটি ডেইরি ফার্ম করার চিন্তা তাঁর। পাশাপাশি একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও গড়ে তুলতে চান তিনি।

প্রাথমিক পুঁজি মাত্র ১০ হাজার টাকা

মাফিয়া পারভীন, রংপুর

মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে মাফিয়া পারভীন শুরু করেন ছোঁয়া বুটিকস।
বুটিকসের কাজটি তাঁর ছোটবেলার শখ। নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো তিনি নিজেই বানাতেন। আবার প্রতিবেশী বা পরিচিত অনেকে আগ্রহ নিয়ে তাঁর কাছ থেকে বুটিকের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে নিতেন। মাফিয়া পারভীন একসময় দেখলেন, কাজটি তিনি বাণিজ্যিকভাবে শুরু করতে পারেন। সেটা ২০০০ সালের কথা। ধীরে ধীরে আয়তন বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানের। পরবর্তী সময়ে ‘গ্রামীণ কল্যাণ’ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় গতি আনেন। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মীসংখ্যা ১৩। আর মূলধন বেড়ে হয়েছে প্রায় চার লাখ টাকা। পারভীন ভবিষ্যতে তাঁর পণ্য দেশের বাইরেও রপ্তানি করতে চান।


  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

শুধু প্রতিভা দিয়েই সাফল্য লাভ করা যায় না


এবি ডি ভিলিয়ার্স
     
 
 
দক্ষিণ আফ্রিকার আলোচিত ক্রিকেটার আব্রাহাম বেনজামি ডি ভিলিয়ার্স, এবি ডি ভিলিয়ার্স নামেই ক্রিকেট বিশ্ব যাকে চেনে। জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়াতে ১৯৮৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। এক দিনের ক্রিকেটে দ্রুতগতির অর্ধশতক (১৬ বল), দ্রুতগতির শতক (৩১ বল), দ্রুতগতির ১৫০ রানের মালিক (৬৪ বল) এবি ডি ভিলিয়ার্স।
আমি মনে হয় দুর্ঘটনাবশত ক্রিকেটার হয়ে গেছি। কিশোর বয়সে স্বপ্ন দেখতাম ক্রিকেট খেলব। সেই স্বপ্নের জোরেই আমি এখন ক্রিকেটার। প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে পৃথিবীসেরা খেলোয়াড় হওয়া। যদি এই স্বপ্ন না থাকে, তাহলে বলতে হবে, সেই ক্রিকেটার ভুল কোনো কারণে ক্রিকেট খেলে। আমি অবসরে গিয়ে শুনতে চাই, ‘আমি ভালো ক্রিকেটার ছিলাম।’ আমি চাপ নিয়ে খেলতে ভালোবাসি। খেলার মাঠে প্রবল উত্তেজনার সময় আমি নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলি। সব চাপ নিজের মধ্যে নিয়ে সামনে তাকাই। লক্ষ্যের দিকে ছুটে যাই। হাফ সেঞ্চুরি থেকে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। স্বপ্নের সীমানাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কোন বাধার সামনেই আমি পরাস্ত হতে চাই না। নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যেতে চেষ্টা করি। নিজের পিছে নিজে তাড়া করে বেড়াই। নিজেই হয়ে উঠি নিজের সবচেয়ে ভয়ানক প্রতিদ্বন্দ্বী।
গত কয়েক বছরে আমার খেলার ধরন বেশ বদলেছে। কিন্তু আমার বিশ্বাস একটুও বদলায়নি। আমি সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করি। আমি সব ধরনের পরিবেশে খেলতে চাই, নিজেকে সেভাবে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। আমার লড়াই বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে নয়, নিজের সঙ্গে। আমি নিজে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করি, আর সেই চ্যালেঞ্জের পিছে ছুটে যাই। আমি বড় পরিসংখ্যান আর রেকর্ড করা কোনো ক্রিকেটার নই, কিন্তু আমি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সর্বোচ্চ রান করেছি। এটা আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। স্বপ্নের মতো অবিশ্বাস্য সেই রেকর্ডের মালিক আমি। রেকর্ড করার পরে রেকর্ড দেখতে বেশ ভালো লাগে। কিন্তু মাঠে রেকর্ডের জন্য নামা বোকাদের কাজ।

আমি যখন কিশোর ছিলাম, তখন গ্যারেজে ক্রিকেট খেলতাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করতাম। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ নিজেই তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সে মানুষ। আমি ক্রিকেট খেলায় হারতে ঘৃণা করি। ভীষণভাবে ঘৃণা করি। আমি রান করার পরেও আমার দল হারলে আমি ভীষণ হতাশ হই।

ক্রিকেট ছাড়াও আমি টেনিস আর গলফে ভালো ছিলাম একসময়। কিশোর বয়সে আমি সব খেলাই খেলতাম। হাইস্কুলে পড়ার সময় আমি বুঝতে পারি, ক্রিকেটই আমার সব। টেনিস খেলার কারণে আমার বল দেখতে বেশ সুবিধা হয় ক্রিকেটে। ১৬ বছর বয়স থেকে আমি নিয়মিত ক্রিকেট খেলা শুরু করি। ১৭ বছর বয়সে আমি এসএ কোল্ট দলে খেলার সুযোগ পাই। আর ১৮ বছর বয়সে আমি অনূর্ধ্ব ১৯ দলে সুযোগ পাই। যেদিন প্রথম আমি জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাই, সেদিনের কথা এখনো আমার মনে আছে। আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। আমার মনে হয়েছিল, পরের দিনই কোনো হাই ভোল্টেজ ম্যাচ আছে। আমি সকালে ঘুম থেকে উঠেই নেট প্র্যাকটিসে চলে গিয়েছিলাম। সেই দিনের রোমাঞ্চ এখনো অনুভব করি। অবসরে আমি গান আর মাছ ধরা নিয়েই ব্যস্ত থাকি। আমি তো গিটারও বাজাতে পারি। আমি বেশ কটি গানও লিখেছি। আমি অবসরে গেলে গান-বাজনার জগতে ঢুকে যাব। ক্রিকেটের খ্যাতি গানের দুনিয়াতে কাজে লাগবে তখন।

আমি নিজেকে নিজের লক্ষ্য ঠিক করে দিই। আমার কাছে জীবনটা হলো দৌড়। সব সময় দৌড়াতে হবে। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে থাকলেও দৌড়াতেই হবে। ইনজুরিতে পড়লেও আমাদের দৌড়াদৌড়ি করেই সেই ইনজুরি কাটাতে হয়। মানুষ মাত্রই যোদ্ধা, সংগ্রাম ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা সবাই নিজ নিজ ভুবনে যোদ্ধা। আমাদের নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে সামনে এগিয়ে যেতে হয়।

শুধু প্রতিভা দিয়েই মানুষ সাফল্য লাভ করতে পারে না। নিজের ওপর বিশ্বাস, আর কঠিন শ্রমই পারে আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। বড় কিছু করার জন্য সুযোগ এলেই তা ধরে কাজে লাগাতে হবে। অন্য কেউ আপনার হয়ে কাজ করে দেবে না, নিজের কাজ নিজেই করতে হবে। নিজের ওপর দৃঢ় বিশ্বাসই মানুষকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। পথে নামলে বাধা আসবেই। ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই আমরা সামনে এগিয়ে যাই। সাময়িক বাধায় হতাশ না হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল আয়ত্ত করতে পারলেই সবকিছু সহজ হয়ে যায়। প্রতি মুহূর্তকেই নিজের জন্য কাজে লাগাতে হবে। সব বল যে ব্যাটে লাগাতে হবে—এমন কোনো কথা নেই। ছুটে যাওয়া বল দেখাও একধরনের কৌশল। সময় নিয়ে বলের গতি বুঝে বলে আঘাত করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আমাদের জীবনটাই এমন। সময় আর ধৈর্য নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। নিজের শক্তি আর সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস রেখে খেলে যাওয়াই প্রথম কাজ। সুযোগ প্রতীক্ষা বসে থাকার সময় নিজের শক্তি বাড়ানো যোদ্ধাদের সত্যিকারের কাজ।

সূত্র: ইএসপিএন-ক্রিকইনফো ও স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকার অবলম্বনে লিখেছেন জাহিদ হোসাইন খান














  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

ডিনস অ্যাওয়ার্ড সেরাদের সেরা



সম্মাননা হাতে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাওয়া মেধাবীদের তিনজন

‘একদিন ক্যাম্পাসে হাঁটতে হাঁটতে সিনেট ভবনের সামনে থমকে গেলাম। নাহ, আর সামনে এগোব না। যেদিন এখানে অনুষ্ঠিত ডিনস পুরস্কারের খাতায় থাকবে আমার নাম, সেদিনই প্রবেশ করব এখানে।’ অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অর্পিতা আদিত্যের এই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্নাতক (সম্মান) ফলাফল এবং গড় উপস্থিতির ভিত্তিতে জীববিজ্ঞান অনুষদের ১০টি বিভাগের যে ৫৪ জন মেধাবী মুখ অর্জন করেছেন সম্মানসূচক ডিনস পুরস্কার, তাঁদের মধ্যে রয়েছে অর্পিতার নামটিও।
মূলত মেধাবীদের অনুপ্রেরণার জন্যই প্রতি শিক্ষাবর্ষে প্রদান করা হয় সম্মানজনক ডিনস অ্যাওয়ার্ড। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জীববিজ্ঞান অনুষদের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ৫৪ জনকে ডিনস পুরস্কার দেওয়া হয়। এই সৌভাগ্যবানদের মধ্যে রয়েছেন মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ছয়জন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ছয়জন, জীববিজ্ঞান বিভাগের ১৫ জন, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞানের চারজন, সাইকোলজি বিভাগের একজন, ফিশারিজ বিভাগের একজন, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তির চারজন এবং অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ১৭ জন।
মজার ব্যাপার হলো, এই ৫৪ জনের মধ্যে ৪০ জনই ছাত্রী! এই তথ্যই প্রমাণ করে যে আমাদের দেশের মেয়েরা ছেলেদের থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নয়, বরং উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, এ পুরস্কার পেতে হলে প্রথম থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত সব বর্ষে গড় উপস্থিতি থাকা চাই কমপক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ, আর সিজিপিএ কমপক্ষে ৩.৭৫ এবং তা পেতে হবে কোনো মানোন্নয়ন পরীক্ষা ছাড়াই। কাজেই এ কোনো নিছক পুরস্কার নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে মেধা, অধ্যবসায় আর কঠোর পরিশ্রমের বাস্তবতা। মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেশকাত জাহান যেমন এ সম্মাননা পাওয়ার লক্ষ্যে শুরু থেকেই ভালো ফলাফলের দিকে মনোযোগী ছিলেন। ‘আমার পরিবার এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় আমি গর্বিত। ভবিষ্যতেও এই স্বীকৃতিকে ধরে রাখব।’ পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললেন তিনি।


উপচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের হাত থেকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড নিচ্ছেন এক শিক্ষার্থী

এ বছর অনুষদের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ছিল ৩.৯৬, যা অর্জন করেছেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের সারওয়ার হোসেন এবং প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞানের তাসনিন আক্তার। অথচ সারওয়ার নাকি ভাবতেই পারেননি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাবেন! ‘ভাবতে অবাক লাগে যে এই আমি একদিন স্বপ্ন দেখতাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার! তবে এই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেখেছিলাম আরও বড় স্বপ্ন, ডিনস পুরস্কার পাওয়ার স্বপ্ন। এই পুরস্কার তাই আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণা,’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের বক্তব্যে বলছিলেন সারওয়ার।
তবে তাসনিন এ সাফল্যের জন্য বাবা-মায়ের পাশাপাশি তাঁর বন্ধুদেরই দিলেন বেশির ভাগ কৃতিত্ব, ‘ছাত্রজীবনে বন্ধুরা হলো রসায়নের ভাষায় ক্যাটালিস্টের মতো। বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ স্টাডি এবং বিভাগের সেশনজট মুক্ত পরিবেশ আমার ভালো ফল অর্জনে অনেক সহায়ক হয়েছে।’
তবে পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংখ্যার ভিত্তিতে সব বিভাগকে ছাপিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ। এ বিভাগ থেকে মোট ১৭ জন পেয়েছেন এই সম্মাননা। বিভাগের শিক্ষার্থী রামপ্রসাদ চক্রবর্তী এই সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরা অত্যন্ত স্নেহ সহকারে আমাদের পাঠদান করেছেন এবং সব বিষয় মুখস্থ না করে বুঝে পড়তে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আমরাও তাঁদের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। এই সমন্বিত প্রয়াসেরই ফলাফল আমাদের বিভাগের এই সাফল্য।’
পুরো অনুষ্ঠানকে ঘিরেই চলছিল ছবি তোলার মহোৎসব। এই স্বীকৃতিকে কেবল ছবির ফ্রেমে ধরে খলেই চলবে না, একে অতিক্রম করে যেতে হবে বহুদূর—পুরস্কারপ্রাপ্তদের চোখে-মুখে এই প্রতিজ্ঞাই দৃঢ় হয়ে রইল।






  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

গুল মাকাই থেকে মালালা হয়ে ওঠা


পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার অচেনা এক কিশোরী কীভাবে হয়ে উঠলেন আজকের মালালা? সেই অজানা কাহিনি শোনাচ্ছেন বিবিসির এক সময়ের দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়া বিভাগের নির্বাহী সম্পাদক নাজেস আফরোজ

মালালা ইউসুফজাই

গুল মাকাই ডায়েরি লিখত, প্রতিদিন। মাত্র তিন-চার স্তবক, কখনো একটি-দুটি। নিতান্ত বালিকাসুলভ ভাষায়, অতি সহজ-সরল জবানে লেখা সেই ডায়েরি। স্কুলে যেতে তার কতটা ভালো লাগে, তা লিখত। পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকা মিনগোরা থাকে সে। শহরে তালেবানি ফতোয়ার জন্য আর স্কুল যেতে পারবে কি না, সে বিষয় নিয়ে তার আশঙ্কার কথা বারবার ফুটে উঠেছে সেই রোজনামচাতে। রেডিওর মাধ্যমে বা পরিবারের বড়দের কাছ থেকে বাইরের পরিস্থিতি গুল মাকাই জানতে পারত। সে নিজের কাছেই জানতে চাইত, কেন ওর ভাই স্কুলে যেতে পারবে আর ও পারবে না। লিখত গোলাগুলির শব্দে রাতে ঘুম না হওয়ার বা দুঃস্বপ্নের কথা। বিবিসির উর্দু ওয়েবসাইটে শহরের কোনো মেয়ের এমন একটি ডায়েরি প্রকাশিত হচ্ছে আর তা নিয়ে বাজার-হাটে আলোচনা হচ্ছে, বাবার কাছে শুনে গুল মাকাই খুবই খুশি আর উত্তেজিত।
২০০৮ সালে মাওলানা ফজলুল্লাহর নেতৃত্বে পাকিস্তানি তালেবানের একটি শাখা দেশের উত্তর-পশ্চিমের সোয়াত উপত্যকা দখল করে। পশতু জাতি-অধ্যুষিত এই উপত্যকা চিরকালই শিক্ষার দিকে থেকে পাকিস্তানের বাকি অংশের থেকে এগিয়ে। মেয়েদের শিক্ষার হার বরাবরই খুব উল্লেখযোগ্য। পাকিস্তানি রাষ্ট্রের নীরব দর্শকজনিত ভূমিকার সুযোগ নিয়ে তালেবান সোয়াত উপত্যকাকে তাদের একটি মুক্তাঞ্চলে পরিণত করে তোলে এবং কট্টর ইসলামি শরিয়াহ আইন প্রণয়নের নামে মেয়েদের লেখাপড়া নিষিদ্ধ করে। একই সঙ্গে তারা প্রায় ১৫০টি স্কুল বোমা মেরে ধ্বংস করে দেয়, যেখানে মেয়েরা লেখাপড়া করতে যেত।
এই পরিস্থিতি মেয়েদের শিক্ষার ওপরে কী প্রভাব ফেলছে, সেটি জানার জন্য বিবিসির উর্দু ওয়েবসাইট একটি উদ্যোগ নেয়। সে উদ্যোগ থেকেই গুল মাকাইয়ের রোজনামচা শুরু। বিবিসির তৎকালীন দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়া বিভাগের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে এই বিশেষ সম্পাদকীয় উদ্যোগের পেছনে আমার কিছুটা ভূমিকা ছিল। সেই সময় বিবিসি উর্দু বিভাগের পেশোয়ার সংবাদদাতা তাঁর স্কুলশিক্ষক এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ১৩ বছরের মেয়েকে দিয়ে একটি ডায়েরি লেখানোর ব্যবস্থা করেন। যেহেতু একটি বালিকা এই ডায়েরির সঙ্গে যুক্ত, তাই বিবিসির নিয়ম অনুযায়ী সযত্নে তার পরিচয় গোপন রাখা হয়। সেই বালিকার ছদ্মনাম দেওয়া হয় গুল মাকাই। নামটি যে তার খুব পছন্দ, সেটাও বালিকাটি ডায়েরিতে জানাতে ভুল করেনি। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া সারবস্তু এবং বিবিসির ইংরেজি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হওয়ার কারণে অচিরেই বিশ্বের সংবাদমাধ্যমে সেই ডায়েরি সংবাদ হিসেবে জায়গা করে নেয়। বহু সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইট সেই ডায়েরি নিয়মিত পুনঃপ্রকাশ করে। তিন মাস ধরে প্রকাশ করার সময় এই ডায়েরি পড়ে বুঝতে কোনো অসুবিধে হয়নি যে সে অতি বুদ্ধিমতী, সপ্রতিভ ও উৎসুক একটি কিশোরী।
এর পরে ২০১১ সালে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাই, মালালা ইউসুফজাই নামের এক কিশোরী নিয়মিত সাক্ষাৎকার দিচ্ছে, নানান অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে আর জানাচ্ছে যে সে-ই ছিল বিবিসি ডায়েরির গুল মাকাই। গুল মাকাইয়ের মালালা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের প্রচারের আলো ওর ওপর প্রবলভাবে এসে পড়ে। ওর এই আত্মপ্রকাশ দেখে চিন্তিত হয়েছিলাম এই ভেবে যে কেন ওর পরিবার এমন সিদ্ধান্ত নিল। ওই ডায়েরি পাকিস্তানে বা বাইরে যে আলোড়ন ফেলেছিল, তাতে ওই পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ ছিল। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। স্কুল থেকে ফেরার পথে মালালা আর তার দুই বান্ধবী তালেবানের গুলিতে জখম হয়।

স্কুলের পথে

সুস্থ হয়ে উঠে ক্রিস্টিনা ল্যাম্বের সহযোগিতায় মালালা ওর আত্মজীবনী প্রকাশ করার পর আবার প্রচারের প্রখর আলোয় এসে পড়ে। প্রেসিডেন্ট ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেলের আমন্ত্রণে মালালা হোয়াইট হাউসে গেছে; নিমন্ত্রণ পেয়েছে ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের কাছ থেকেও। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে মালালা মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে ভাষণ দিয়েছে; পৃথিবীর এমন কোনো টিভি চ্যানেল নেই, যেখানে ওর সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়নি।

হাসপাতালে মালালা

অন্যদিকে, পাকিস্তানে চলছে মালালা এবং তার ওপর আক্রমণের ঘটনার পেছনে ষড়যন্ত্র খোঁজা। মালালাকে নাকি পশ্চিমি কোনো দেশের গুপ্তচরেরা শিশুবয়সে মিনগোরাতে রেখে গিয়েছিল ভবিষ্যতে পাকিস্তানের দুর্নাম করার জন্য। এমনকি এও বলা হচ্ছে যে ওই ঘটনা আদতেই ঘটেনি, মাথায় গুলি লাগা থেকে অস্ত্রোপচার—গোটাটাই সাজানো! পাকিস্তানি সমাজের এমনই করুণ অবস্থা যে এ ধরনের চরম আজগুবি সব গুজব আপাতনির্ভরযোগ্য প্রধান সংবাদপত্রে জায়গা পাচ্ছে। কিছু পাকিস্তানি সাংবাদিক মালালার বাবার উচ্চাশার কথাও উল্লেখ করে চলেছেন।
১৬ বছরের এক কিশোরীকে ঘিরে পশ্চিমি দেশগুলোর এই কাড়াকাড়ি উদ্দেশ্য নিয়ে গত বছর থেকেই বিতর্ক উঠেছে। এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর সেই বিতর্ক আরও বাড়ল। এরা ‘পিছিয়ে’ থাকা সমাজের একটি মেয়ের ‘মহান রক্ষাকর্তা’র ভূমিকা নিচ্ছে কি না, সেটা বিতর্কের একটি দিক। অন্যদিকে আছে অতি আলোচিত প্রসঙ্গ, পশ্চিমের সঙ্গে ইসলামের সংঘাতের ভৌগোলিক রাজনীতি। মালালা এখন বিশ্বরাজনীতির খেলায় একটি ঘুঁটিতে পরিণত হয়ে গেল কি না, তাও অনেককে ভাবাতে বাধ্য করছে।
ধর্মীয় মৌলবাদের মোকাবিলায় পাকিস্তান রাষ্ট্রের ব্যর্থতা নতুন কিছু নয়। একই সঙ্গে ১৯৮০-র দশক থেকে পাকিস্তান-আফগানিস্তানে পশ্চিমের দেশগুলোর অতি সংকীর্ণ বিদেশ ও নিরাপত্তানীতি গোটা অঞ্চলকে অস্থির করে তুলেছে; শয়ে শয়ে মানুষকে কট্টর মৌলবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি শুধু মালালা নয়, আরও অনেক কিশোর-কিশোরীকে জীবন-মরণের মুখে এনে দাঁড় করাচ্ছে প্রতিদিন। বিশদে তো দূরস্থ, পাদটীকা হিসেবেও এরা কোনো প্রতিবেদনে স্থান পায় না। যেমন মালালার সঙ্গে ওর আরও যে দুই বান্ধবী তালেবানের গুলিতে জখম হয়েছিল, তাদের কোনো খবর কারও কাছে নেই।
কেন মালালাকে গুল মাকাই হিসেবে জনসমক্ষে আসতে হলো, আর কীভাবে ওই অঞ্চলের সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যাধি দূর করা যায়, তা নিয়ে বিশেষ কোনো প্রয়াস চোখে পড়ে না। এটা না করে শুধু মালালাকে ধরেই পশ্চিমি জগতের প্রগতিশীল অংশ নিজেদের বিবেক দংশনের জ্বালা প্রশমন করছে, আর রাজনীতির হোতারা ‘ইসলাম বনাম পশ্চিমি সভ্যতা’র লড়াইয়ের যৌক্তিকতা খুবই সূক্ষ্মভাবে প্রতিষ্ঠা করে চলেছেন।









  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

নোবেলে শান্তি সন্ধান


     
মালালা ইউসুফজাই


চির বৈরী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান। তাদের বিরোধপূর্ণ সীমান্তে চরম উত্তেজনা, গোলাগুলি, বারুদের ঝাঁজাল গন্ধ। উভয় পক্ষে প্রায় এক কুড়ি প্রাণহানির মধ্যেই নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই ও ভারতের কৈলাস সত্যার্থীকে যৌথভাবে চলতি বছর শান্তিতে নোবেল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অনেকের এখন প্রশ্ন, এই নোবেল পুরস্কার দেশ দুটির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কী ভূমিকা রাখবে? জবাব দেওয়াটা বেশ কঠিন।
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার বৈরিতার ইতিহাস দীর্ঘ। ১৯৪৭ সালে জন্মের পর থেকেই তাদের মধ্যে সীমান্তসহ নানা বিষয়ে চরম বিরোধ ও মতপার্থক্য বিরাজ করছে। তারা একাধিক যুদ্ধেও জড়িয়েছে। শত চেষ্টায়ও দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটির মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা টানা সংঘর্ষে ভারতের অন্তত আটজন নিহত ও ৬০ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের ১২ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত কিছুটা শান্ত। তবে দুপক্ষের মধ্যে আরও রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ভারতের পক্ষ থেকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ার করে বলা হয়েছে, সীমান্তে গুলি ছুড়ে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। এ জন্য দেশটিকে চরম মূল্য দিতে হবে। জানমালের ক্ষতি স্বীকার করে হলেও পাকিস্তানকে উচিত জবাব দিতে ভারত পিছ-পা হবে না বলেও শোনা যাচ্ছে।
প্রতিপক্ষকে শাসাতে পাকিস্তানও কম যায়নি। অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের জন্য উল্টো ভারতকেই দুষছে ইসলামাবাদ। একই সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিজেদের সক্ষমতা সম্পর্কে উভয় দেশই অবগত। যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুই দেশের নেতাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলার যেকোনো চেষ্টার জবাব পূর্ণ শক্তিতেই দেবে ইসলামাবাদ। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী প্রস্তুত।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বৈরিতার এই গুরুতর নাজুক পর্যায়ে মালালা ও কৈলাসের যৌথভাবে শান্তির নোবেলপ্রাপ্তি অনেকের কাছে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন, এই পুরস্কারের সুবাদে বরফ গলবে। দুই দেশ শান্তি প্রতিষ্ঠায় উৎসাহী হবে। অন্তত নোবেল কমিটি তেমনটা ভাবতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো শুভ লক্ষণ দেখা যায়নি।
মালালা ও কৈলাস যৌথভাবে শান্তির নোবেল পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁদের অবদানের ক্ষেত্র শিশু, শিক্ষা ও শৈশব। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ঐতিহাসিক সংঘাত বন্ধে তাঁরা কোনো অবদান রাখেননি। তাই দেশ দুটির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই পুরস্কার খুব একটা কাজে দেবে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ নেই।
১৭ বছর বয়সী মালালা নারীশিক্ষা আন্দোলনের কর্মী হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার এই কিশোরী তালেবানের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মেয়েদের শিক্ষালাভের অধিকারের পক্ষে কাজ করায় ২০১২ সালের অক্টোবরে তার মাথায় গুলি করে জঙ্গিরা। যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠে সে। এখন বার্মিংহামে থেকে পড়ালেখা করছে মালালা। তার আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়েছে। বিখ্যাত টাইম সাময়িকীর বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় তার নাম উঠেছে। অনেক সম্মানজনক পুরস্কার তার ঝুলিতে জমা হয়েছে। বিশ্বের কাছে নারীশিক্ষা আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছে এই কিশোরী।

কৈলাস সত্যার্থী

৬০ বছর বয়সী কৈলাস কাজ করেন শিশু অধিকার নিয়ে। তিনি ২৬ বছর বয়সে শিশু অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নামেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘বাচপান (শৈশব) বাঁচাও আন্দোলন’ নামের সংস্থাটি শিশুশ্রম নিরসন, শিশু অধিকার আদায় ও মানব পাচার অবসানের লক্ষ্যে কাজ করে। তাঁর নেতৃত্বে ভারতের ৮০ হাজার শিশু শ্রম-দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছে। মহাত্মা গান্ধীর এই অনুসারী বৈশ্বিক শিক্ষা অভিযান ও শিশুশ্রমবিরোধী বৈশ্বিক পদযাত্রারও প্রধান।
নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির কাছ থেকে গত সপ্তাহে মালালা ও কৈলাসকে যৌথভাবে শান্তির পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণাটি আসে। কমিটি বলে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষার জন্য ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে একই লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন একজন মুসলিম ও একজন হিন্দু, একজন পাকিস্তানি ও একজন ভারতীয়।
মালালা ও কৈলাস নোবেল পাওয়ার পর গণমাধ্যমে যেসব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, তা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য উৎসাহব্যঞ্জক।
শান্তিতে নোবেল গ্রহণের উপলক্ষকে কাজে লাগিয়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এক ছাদের নিচে মিলিত করার ভাবনা মালালার। সেই ভাবনা থেকেই লন্ডনে গণমাধ্যমকে মালালা বলেছে, ‘আমাদের পুরস্কার নেওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
দুই দেশের সীমান্তের সর্বশেষ পরিস্থিতিও মালালার নজর এড়ায়নি। এ প্রসঙ্গে এই কিশোরী বলেছে, ‘পাকিস্তান ও ভারতের সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। শান্তি, উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য আমরা লড়াই করতে চাই।’
শান্তির জন্য কৈলাসও উন্মুখ। তিনি মালালাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের দুজনকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
মালালার উদ্দেশে কৈলাসের উদার আহ্বান, ‘চলো, আমরা শান্তির জন্য হাত মেলাই।’
মালালার সঙ্গে নোবেল ভাগাভাগির বিষয়টি শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুই দেশকে উৎসাহিত করবে বলে এনডিটিভির কাছে মত ব্যক্ত করেছেন কৈলাস। তবে কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে সময় লাগবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে আরও অনেকে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা ও এফ ডব্লিউ ডি ক্লার্ক (১৯৯৩) কিংবা উত্তর আয়ারল্যান্ডের জন হিউম ও ডেভিড ট্রিমবেলের (১৯৯৮) কথা বলা যায়। দীর্ঘ সংঘাত অবসানে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁদের ওই পুরস্কার দেওয়া হয়। কিন্তু মালালা-কৈলাসের অবদান ভিন্ন। জন্ম থেকে এ অবধি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলা সংঘাত নিরসনে তাঁদের কোনো অবদান নেই। কাজের ধরনের (নারীশিক্ষা ও শিশু অধিকার) কারণে এ বিষয়ে ভবিষ্যতে তাঁরা কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন বলেও খুব একটা আশাবাদী হওয়া যায় না।
এখন দ্বিপক্ষীয় শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগটি দুই দেশের অন্য কোনো জুটি শুরু করতে পারেন। সেই উদ্যোগ সফল হলে শান্তিতে নোবেল ভাগাভাগির আরেকটি ঘোষণা প্রত্যাশা করাই যায়।
 
 
 
 
 
 
 

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর




ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
আবুল মোমেন
প্রচ্ছদ: কাইয়ুম চৌধুরী
প্রকাশক: প্রথমা প্রকাশন
৬৫ পৃষ্ঠা
দাম: ১৫০ টাকা।
ব্যক্তির কীর্তি ও মহত্ত্ব সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলে তাঁর প্রকৃত নামটি চাপা পড়ে যায়, উপাধির আলোকচ্ছটায়। বাঙালি সমাজেই নয়, সমগ্র পৃথিবীতে এমন নজির সত্য ও প্রমাণিত, যদিও আজকের দিনে তা বিরলও। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নামের মানুষটি যেমন মহৎ ও বিদ্যান, উদার মনের নমস্য বাঙালিও। তাঁর নাম কে না জানে! তাঁর প্রকৃত নাম যে ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধির আড়ালে সেটি ঢাকা পড়ে গেছে। ‘বিদ্যাসাগর’ আদতে সেকালের একটি উপাধি, নির্দিষ্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পাওয়া যেত। কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্বান ও বিদ্যা বিতরণে নিবেদিত মানুষ হিসেবে এমনই খ্যাতিমান হয়েছেন যে এই উপাধি তাঁরই একচেটিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি ছাড়া, আর দ্বিতীয় কোনো বিদ্যাসাগর উপাধিধারীর কথা শোনা যায় না। তাঁর প্রয়াণের সোয়া শ বছর পরেও এই পরিচয়টিই যথার্থ।

এই বই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে নিয়ে। সরল জীবনীটুকুই নয়, তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা, স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব গড়ে নিয়ে সমাজ ও কালকে অতিক্রম করে মনন-নৈতিকতা-ওজস্বিতা এবং নেতৃত্বে তিনি কীভাবে কালজ হয়ে উঠলেন, সবকিছুর সুনিপুণ আর তথ্যনিষ্ঠ বিবরণ পাওয়া যাবে এতে।

বিদ্যাসাগরের জীবন কেটেছে বাংলার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ক্রান্তিকালে। দারিদ্র্য ও শোষণ বাঙালির সমাজজীবনকে ক্ষয় করে ফেলেছিল। শিক্ষা, ইংরেজ শাসন ও সামাজিক কুসংস্কার ইত্যাদি বিষয়ে রামমোহন রায় থেকে শুরু করে অনেকেই বাংলার নবজাগরণে ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন শহুরে বণিক পরিবারের। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন বিদ্যাসাগর। তিনি ছিলেন গ্রামের ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। সাত ভাই আর তিন বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি।

জীবনী রচনার প্রকরণে এখন বদল ঘটেছে। বংশপরিচয়, বাল্যজীবন, শিক্ষাজীবন, কর্মজীবনের গড্ডলিকা এড়িয়ে তাই এই বইটির লেখক আবুল মোমেন বেছে নিয়েছেন সুন্দরতর এক ভঙ্গি। বলা যেতে পারে, প্রায় আত্মজীবনীর পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি বিদ্যাসাগরকে তুলে ধরেছেন, বিচার করেছেন দেশকালের পরিমণ্ডলে। সমগ্র জীবনের কথাই এতে উঠে এসেছে তথ্যপূর্ণ ও ইতিহাস-সমর্থিতভাবে। কিন্তু তথ্যের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েনি কখনো। এই অভিনব কারণেই আনন্দময় পাঠানুভূতির ভেতর দিয়ে বইটি একবৈঠকে পড়ে ওঠা যায়।

বিদ্যাসাগর, সমকালে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় ছিলেন, তেমনি নিন্দুকদের উৎপীড়ন আর প্রতিরোধে কম অতিষ্ঠ হননি। কিন্তু তবু, মেধা ও পাণ্ডিত্যের সমন্বয়ে মানবিক গুণাবলির অতুলনীয় উদাহরণ তিনি। শিক্ষা-সমাজ সংস্কার এবং নেতৃত্বেও। এমন দৃঢ়চেতা, সাহসী ও মানবিক মানুষ অত্যন্ত বিরল। ফলে তাঁর জীবন ও ভাবনাসমুচ্চয় সময়-সমাজকে ছাড়িয়ে ভারতবর্ষের চিরকালীন সম্পদ।

লেখক আবুল মোমেন আড্ডা বা মঞ্চে যেভাবে আটপৌরে ভাষায় কথা বলেন, এই বই লেখার ক্ষেত্রেও বহাল রেখেছেন সেই ভাষাটিই। এ গ্রন্থের বয়নকৌশল মুগ্ধকর।

‘কীর্তিমান বাঙালি’ সিরিজের এই বইয়ে বিদ্যাসাগরের জীবনকে দূর থেকে নয়, যেন বা খুব কাছ থেকে বৈচিত্র্যময়ভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। এর মাধ্যমে গ্রন্থকারের অনুসন্ধিৎসু ও সংবেদী মানসব্যাপ্তি টের পাওয়া যায়, মনের প্রসারতাটুকুও।
তৎকালীন সমাজে বিদ্যাসাগরের গুরুত্ব কেমন ছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য থেকে সেটি অনুধাবন করা যায়, ‘তিনি বিজ্ঞ, শাস্ত্রজ্ঞ, দেশহিতৈষী এবং সুলেখক, ইহা আমরা বিস্মৃত হই নাই। বঙ্গদেশ তাঁহার নিকট অনেক ঋণে বদ্ধ। এ কথা যদি আমরা বিস্মৃত হই, তবে আমরা কৃতঘ্ন।’

কিন্তু দু শতক আগে, অনগ্রসর ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন যুগে একজন বিদ্যাসাগর যে মানবিক-সামাজিক-নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করলেন, স্বচেষ্টায় দেশকালকে ছাপিয়ে হয়ে উঠলেন অতুলনীয় ও কীর্তিমান—পুরো ব্যাপারটি ভাবলে বিস্ময় জাগে! আমাদের প্রযুক্তির ঝলমলে সময়ে, এখন বিদ্যাসাগরীয় দূরে থাকুক, তাঁর ছায়াতুল্য ব্যক্তিত্বের গড়ে ওঠাটুকুও দুর্লভ হয়ে পড়েছে। ও শুধু বইয়ে লেখা গল্প। রূপকথা। এই সমাজ ও সময়ে যথেষ্ট মননশীল, চিন্তাশীল, মুক্তমনের মানবিক, তাত্ত্বিক মানুষ কেন তৈরি হচ্ছে না! ভাবি, ভাবনাটুকু দীর্ঘশ্বাস হয়ে  ফিরে আসে।




  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

মুস্তাফিজ.....




মুস্তাফিজুর রহমান: বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন বিস্ময় 

আর দশটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো তাঁর মা-বাবারও স্বপ্ন ছিল ছেলে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হোক, সফল হোক। কিন্তু শিশুকাল থেকে ছেলেটির মন পড়ে থাকত ক্রিকেটের ব্যাট আর বলের দিকে। এতে পরিবারের সবার ছিল ঘোর আপত্তি। ব্যাট-বল কেড়ে নিয়ে তাঁকে জোর করে বসানো হতো পড়ার টেবিলে। খেলতে না দিলে কান্নাকাটি করে সবাইকে অস্থির করে তুলতেন তিনি। সেই ছেলেটিই বাংলাদেশের ক্রিকেটের বিস্ময় বালক মুস্তাফিজুর রহমান। ১৮ জুন ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে নিজের অভিষেকেই ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের বিজয় নিশ্চিত করেন, হন ম্যান অব দ্য ম্যাচ।
সাতক্ষীরা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কালীগঞ্জ উপজেলার তারালি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে মুস্তাফিজের বাড়ি। তাঁর বাবা ব্যবসায়ী আবুল কাশেম আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে এখন আর আমার নাই, ও এখন ১৬ কোটি মানুষের সন্তান। ওর ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়া লাগবে না, ও ক্রিকেটই খেলুক।’



আবুল কাশেম গাজী: মুস্তাফিজের বাবা

মুস্তাফিজের জন্ম ১৯৯৫ সালে সেপ্টেম্বরে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। পরিবারের সব প্রতিকূলতার মধ্যে মুস্তাফিজের পাশে এসে দাঁড়ান তাঁর সেজো ভাই মোখলেছুর রহমান। তিনিই নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন আজকের মুস্তাফিজকে।
এই প্রতিবেদককে মোখলেছুর রহমান জানান মুস্তাফিজের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার গল্প। তিনি ও মেজো ভাই জাকির হোসেন গ্রামে টেনিস বলে ক্রিকেট খেলতেন। ১০-১২ বছর বয়স থেকে মুস্তাফিজও তাঁদের সঙ্গী হন। গ্রামের তেঁতুলিয়া মাঠের এক খেলায় তাঁরা তিন ভাই-ই খেলছিলেন। তখন মুস্তাফিজ ব্যাটিং করতে ভালো বাসতেন। প্রতিপক্ষের একজন ব্যাটসম্যানকে কিছুতেই আউট করা যাচ্ছে না। মুস্তাফিজের হাতে তিনি তুলে দিলেন বল। প্রথম বলেই মুস্তাফিজ প্রতিপক্ষের সেই অপ্রতিরোধ্য ব্যাটসম্যানকে আউট করেন। তারপর বোলার হওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েন। বরেহা মিলনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করার পরপরই যাতে বাইরে খেলাধুলা করতে যেতে না পারেন, এ জন্য বাড়িতে দেওয়া হলো চারজন প্রাইভেট শিক্ষক। কিন্তু স্কুল পালিয়ে তিনি চলে যেতেন ক্রিকেট মাঠে। মোখলেছুর বলেন, ‘আমার বন্ধু মিলনের পরামর্শে সাতক্ষীরা গণমুখী ক্লাবের ক্রিকেট কোচ আলতাফ ভাইয়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো। আলতাফ ভাইয়ের পরামর্শে মুস্তাফিজ সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৪ প্রাথমিক বাছাই উত্তীর্ণ হয়। তারপর সাতক্ষীরায় ক্রিকেট একাডেমির মুফসসিনুল ইসলামের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু হয়।’


মোখলেছুর রহমান: মুস্তাফিজের সেজভাই

মোখলেছুর রহমান প্রতিদিন ভোর রাতে তেঁতুলিয়া থেকে ৪৫ কিলোমিটার দুরে মোটরসাইকেলে করে সাতক্ষীরা নিয়ে আসতেন প্রশিক্ষণের জন্য। অনূর্ধ্ব-১৪ হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলে ধারাবাহিকভাবে সফল হয়েছেন মুস্তাফিজ। এরপর এলেন ঢাকার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফাস্ট বোলিং ক্যাম্পে ট্রায়াল দিতে। সেখানে এসে কোচদের নজর কাড়েন। এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ খেলেছেন নিয়মিত।
বাংলাদেশ দলে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে সবাই চেনে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামে। অভিষেকেই আলো ছড়ানো ক্রিকেটের নতুন বিস্ময় মুস্তাফিজকে কি তবে ডাকা যায় ‘সাতক্ষীরা





  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

গল্পে শোনা বাবা


মনে পড়ছে, মা ও নানার সঙ্গে কাটানো ছোটবেলার কথা। একটা আমগাছের নিচে বসে আমার চুলে হাত বোলাতে বোলাতে নানির কাছে শোনা বাবার গল্প। আমার ছোটবেলা জুড়ে ছিল এক অকল্পনীয় সারল্য। আশপাশের মানুষের মধ্য থেকে যে সারল্য হারিয়ে গেছে অনেক আগেই।

আমার শ্বেতাঙ্গ মা ও কৃষ্ণাঙ্গ বাবা অনেক বেশি জানতেন, অনেক কিছু দেখেছিলেন তাঁরা। আফ্রিকান আর আমেরিকান মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি তাঁদের হৃদয়ে মিশে ছিল। যারা আমাকে চিনত না, আমার পরিচয় আবিষ্কার করে (আবিষ্কার বলছি এ জন্য যে ১২-১৩ বছর বয়সে আমি কেবল আমার মায়ের কথাই বলে যেতাম, যাতে আমাকে শ্বেতাঙ্গদের একজন বলে মনে হয়) সেটা হজম করে নিতে তাদের কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা করতে হতো। তারা আসলেই আর আমাকে বুঝে উঠতে পারত না। মিশ্র বংশপরিচয়, মানসিক দ্বন্দ্ব আর দুই মেরুর বিপরীত অনুভূতি তাদের বোঝানো যেত না। আমি মানুষকে তাদের সন্দিহান মনের জন্য দোষ দিই না। আমি অনেক আগেই আমার ছোটবেলার গল্প থেকে নিজেকে আলাদা করে নিতে শিখেছিলাম। অনেক পরে, যখন আমি আফ্রিকার লালচে মাটিতে আমার বাবার কবরের পাশে বসে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি, কেবল তখন আমার শৈশব আমার কাছে ফিরে এসেছিল। তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম, কত দীর্ঘ সময় ধরে আমি আমার জীবনের গল্প নতুন করে লিখতে চেয়েছি। আমার ইতিহাসকে নতুন করে সাজাতে চেয়েছি। আমার দুর্বলতা, ব্যর্থতা লুকিয়ে নিজের শৈশব আর পরিবারকে আগলে রাখতে চেয়েছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেকে বাঁচিয়ে চলার আপ্রাণ চেষ্টা, পিতার খোঁজে এক ছেলের অন্তহীন যাত্রা এবং একজন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানের সংগ্রামের গণ্ডি থেকে আমি বের হতে পারিনি।

.



বাবা যখন মারা যান, তখন তিনি আমার কাছে ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে আসা একটা অস্তিত্ব। তিনি হাওয়াই ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন সেই ১৯৬৩ সালে, আমি তখন দুই বছরের শিশু। তাই ছোটবেলায় বাবার স্মৃতি বলতে মা আর নানা-নানির বলা গল্পগুলোই ছিল সম্বল।
‘তোমার বাবা একটু কর্তৃত্বপরায়ণ ছিল ঠিকই’, মা অল্প হেসে বলতেন, ‘কিন্তু প্রচণ্ড সৎ ছিল বলেই এমন করত, সবকিছু মুখ বুজে মেনে নেওয়া তার স্বভাবের মধ্যে ছিল না।’
বাবাকে নিয়ে মায়ের প্রিয় গল্প ছিল, যখন বাবা একটা বড় অনুষ্ঠানে জিনস আর চিতার ছাপওয়ালা একটা পুরোনো শার্ট পরে পুরস্কার নিতে এসেছিলেন! ‘কেউ তাকে বলেনি এত জমকালো একটা অনুষ্ঠান হবে, সে এত বড় সম্মান পেতে যাচ্ছে। সে গটগট করে ভেতরে ঢুকে দেখে, রুমভর্তি সব মানুষ ডিনারের জ্যাকেট পরে এসেছে! জীবনে আমি সেই একবারই তাকে লজ্জিত হতে দেখেছি।’
‘কিন্তু একটা জিনিস জানো ব্যারি, তোমার বাবা, যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে পারত, তা যা-ই হোক না কেন। আর এ জন্যই সবাই তাকে পছন্দ না করে পারত না।’
গল্প শেষে নানা মাথা নাড়তে নাড়তে উঠে যেত, আর বলত, ‘বাবার কাছ থেকে একটা জিনিস তোমার শেখা খুব দরকার। আত্মবিশ্বাস। সফল হতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই।’
এভাবে আমি বসে বসে বাবার গল্প শুনতাম। তাঁর কিছু সাদা-কালো ছবি ছিল, আলমারির ভেতর রাখা। আমি একটু বড় হয়ে গেছি যখন, তত দিনে মায়ের সম্পর্ক শুরু হয়েছে আর একজনের সঙ্গে, যাকে পরে মা বিয়ে করেন। আমাকে কেউ না বললেও আমি বুঝতাম, কেন বাবার ছবিগুলো আলমারির ভেতর ফেলে রাখা হয়। কালেভদ্রে আমি আর মা মেঝেতে পা ছড়িয়ে বসে ধুলোমাখা অ্যালবামটা দেখতাম। আমি একদৃষ্টে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকতাম, হাসিতে ভরা একটা মুখ, চওড়া কপাল আর চোখে পুরু চশমা, তাতে বয়সের চেয়েও বড় দেখায়। এই মানুষটাই আমার বাবা।
বাবা ছিলেন আফ্রিকান, আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, কেনিয়ার লুও গোত্রের। তার জন্ম হয়েছিল ভিক্টোরিয়া লেকের পাশে, অ্যালেগো নামে একটা জায়গায়। বাবার গ্রামের লোকজন ছিল বেশ গরিব, কিন্তু আমার দাদা হুসেইন ওনিয়াঙ্গো ওবামা ছিলেন খুব বড় চাষি, গোত্রের প্রধানের প্রায় সমকক্ষ। বাবা ছোটবেলায় ছাগল চরাত আর স্থানীয় স্কুলে পড়ত। স্কুলটা ছিল ব্রিটিশদের বানানো, খুব ভালো রেজাল্ট করে ওখান থেকেই স্কলারশিপ পেয়ে নাইরোবিতে পড়ার সুযোগ পান। কেনিয়া স্বাধীন হওয়ার কিছু আগে বাবা সুযোগ পান যুক্তরাষ্ট্রে এসে পড়াশোনা করার। বাবা ছিলেন প্রথম কয়েকজনের একজন, যাঁদের দেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয় পশ্চিমা প্রযুক্তি শিখে এসে নতুন আফ্রিকা গড়ার জন্য।
১৯৫৯ সালে বাবা ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ে এসে পৌঁছান। তিনি ছিলেন এখানকার প্রথম কালো শিক্ষার্থী। ইকোনোমেট্রিক্স নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। অসম্ভব মেধাবী বললে ভুল হবে না। প্রচণ্ড মনোযোগ দিয়ে কাজ করে তিন বছরের মাথায় গ্র্যাজুয়েশন করেন, তাও আবার ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তুলতে তিনি সহায়তা করেন, আর সেখানকার প্রথম সভাপতিও নির্বাচিত হন। একটা রাশিয়ান কোর্সে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় এক লাজুক মার্কিন মেয়ের, বয়স মাত্র ১৮। তাঁরা একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেন। মেয়েটির বাবা-মা প্রথমে খুবই চিন্তিত ছিলেন, কিন্তু ছেলেটির ব্যক্তিত্ব আর বুদ্ধি দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁরা আর না করতে পারেননি। খুব শিগগিরই তাঁদের বিয়ে হয়, এক ছেলেরও জন্ম হয়। নিজের নামে ছেলের নাম রাখেন তিনি ‘বারাক’। তারপর আরেকটা স্কলারশিপ পান হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করার জন্য, কিন্তু নতুন পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক সংগতি ছিল না। আলাদা হয়ে যান তাঁরা। পড়াশোনা শেষে বাবা আফ্রিকায় ফিরে যান, মায়ের সঙ্গে একমাত্র ছেলে থেকে যায় বহুদূরে। কিন্তু দূরত্ব যতই হোক, ভালোবাসা থেকে যায়।

সূত্র: বারাক ওবামার ড্রিমস ফ্রম মাই ফাদার বইয়ের প্রথম অধ্যায়। ইংরেজি থেকে নির্বাচিত অংশ.










  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

10 Secret To Remove Anger Behavior


If you have anger behavior, don't worry. ALL TOP SECRET (ATS) presents "Something About Anger" and "10 Secret To Remove Anger Behavior". Use these Secrets and live anger free life..........                            

                      Something About Anger


                AK1 


1- The sharpest sword is a word spoken in wrath. - Gautama Buddha

2- Anger makes you smaller, while forgiveness forces you to grow beyond what you are. - Cherie Carter-Scott

3- Anger at lies lasts forever. Anger at truth can't last. - Greg Evans

4- Don't hold to anger, hurt or pain. They steal your energy and keep you from love. - Leo Buscaglia


             AK2

5- Anger is an acid that can do more harm to the vessel in which it is stored than to anything on which it is poured. - Mark Twain

6- Holding on to anger is like grasping a hot coal with the intent of throwing it at someone else; you are the one who gets burned. - Buddha
7- Bitterness is like cancer. It eats upon the host. But anger is like fire. It burns it all clean. - Maya Angelou

         10 Secret To Remove Anger Behavior



              AK3



1- Before you open your mouth, stop and think about how and what you will say. Say what you mean, and mean what you say. Never, raise your voice.
2- Give up your bad habits. Give up drinking. Give up take drugs, cigarettes, tobacco. Alcohol use is associated with anger and violence.
3- Exercise is the good way to give up angry habits. You can practice deep-breathing exercises, yoga, morning walk and other positive physical activities.
4- You can also listen to music, imagine a relaxing scene, write in a journal and read positive thinking books and other positive mental activities.
5- Forgiveness is a powerful tool. if you can forgive someone who angered you, you might both learn from the situation. It's unrealistic to expect everyone to behave exactly as you want at all times.


             AK4
6- Sometimes, which is our surroundings, give us cause for irritation and fury. Problems and responsibilities can weigh on you and make you feel angry. Give yourself a break. Make sure you have some "personal time" in your busy day and use this time for creative and positive activities.
7- Do not drag anything on for the sake of “winning”. it’s not healthy for anyone involved.
Take action and solve problem. Be positive proactive and thoughtful.
8- For removing your anger habits, you can do positive activities, think only positive. positive thinking creates positive energy and use these energy for removing anger.
9- If you are feel every time anger and can not control yourself day by day, go to your family doctor for medication. Inability to control anger is often a real physical disorder.
10- At last point, for removing your anger, you can pray, you can meditation and you can resort spirituality to calmness.
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 



  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

Vocabulary Study



Fall dawn পড়ে যাওয়া
downfall পতন
Fit out সাজানো
Outfit সমস্ত আসবাবপত্র ও পোশাক পরিচ্ছদ
Go out নিভে যাওয়া
Outgo ব্যায়
Grow out জন্মানো
Outgrow বেশি বেড়ে যাওয়া
Hold up উপরে তোলা
Uphold রক্ষা করা
Hold with একমত হওয়া
Withhold স্থগিত করা
Holiday ছুটির দিন
Holy day পবিত্র দিন









  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

3 Secret Of Successful Life ― Word, Time And Action



Everyone wants to be success in life and live a better life. If we go in life by adopting some secrets then we can be easily success. 
Use these secrets and find a big success in life.....


increasing-ivf-success1111


1- No Difference Between Words And Actions

If you want to be a big success in your life then you should not be any difference between your words and actions. If both the difference between "what we say" and "what we do" will be finished in this world then the most problem of the world and people will be finished. In present time, there is a big problem in the world that a lot of people who have a big difference between their words and actions therefore they become fail in every part of life. If you have much difference in your words and actions then you will find much difference between success and yourself. If you have minimum difference in your words and actions then you will find minimum difference between success and yourself. Thus if you have no difference in your words and actions then you will find no difference between success and yourself. This is a universal truth. All the people who reached the pinnacle of success, they have not difference between their words and actions. People who have no difference between their words and actions, they are success in every part of life and thousands of people believe on them.

Some words about this-

“Don’t tell me about your god with your words. Show me about your god with your actions.” ― Steve Maraboli

“Well done is better than well said.”― Benjamin Franklin

“It has been noted that actions speak louder than words. Truth is, I have found that during many situations in life, words are just noise... and actions are the ONLY things that speak.” ― Steve Maraboli

“At the Day of Judgement we shall not be asked what we have read and say but what we have done.” ― Thomas à Kempis

“To assess the quality of thoughts of people, don't listen to their words, but watch their actions.” ― Amit Kalantri

"Great thoughts speak only to the thoughtful mind, but great actions speak to all mankind." ― Theodore Roosevelt


2- If You Start Any Good Work, Make Sure To Complete It

If you want to be success then whatever you do, make sure to complete it. Many people start many good work but leave it in the middle because they have much energy in the beginning time but the passage of time, they can not keep much energy and they give up work in the middle. People do often this process and do not find success in life. But those people who begin good work and don't leave it in the middle because they have much energy till end and find success in every part of life. So when you start any good work, make sure to complete it. For this, you can work in pieces and complete a piece of work then you can enjoy it then your energy will not be finished in middle. Thus you can create much energy between the work process and complete work. So when you start work, always do complete it and make sure to success in life.

Some words about this-

“Do work step by step and the work is done.” ― Charles Atlas

“Always do your best. What you plant now you will harvest later.”― Og Mandino

"Keep looking up! I learn from the past, dream about the future and look up. There's nothing like a beautiful sunset to end a healthy day." ― Rachel Boston

"Every day is a new opportunity. You can build on yesterday's success or put its failures behind and start over again. That's the way life is, with a new game every day." ― Bob Feller

"Start every day off with a smile and get it over with." ― W. C. Fields

"Do not be embarrassed by your failures, learn from them and start again." ― Richard Branson


3- Always Use Time Management In Life

If you want to be success in your life then you must use time management in life. Without this you can never start any work on right time and finish any work on right time. All exam of our life be started with a certain time and be finished with a certain time. "Time" is the most important component of all over life. People who do work on time, always be success in life. People who do not work on time, always be fail in life. Work plan is most important in our life and every work plan is based on time management. Without work plan, we can not any work correctly and on time. The secret to modern life is finding the measure in time management. Modern life have lot of work. Time management is the best way to complete all work easily. So use time management in life and be success in every part of life.

Some words about this-

 “A goal without a plan is just a wish.” ― Antoine de Saint-Exupéry

“Time is money. you delay, but time will not.time lost is never found again.” ― Benjamin Franklin

"The ability to concentrate and to use your time well is everything if you want to succeed in life." ― Lee Iacocca

"Time = life; therefore, waste your time and waste of your life, or master your time and master your life." — Alan Lakein

"Ordinary people think merely of spending time. Great people think of using it." — Author Unknown

"Don’t say you don’t have enough time. You have exactly the same number of hours per day that were given to Helen Keller, Pasteur, Michelangelo, Mother Teresa, Leonardo da Vinci, Thomas Jefferson, and Albert Einstein." — H. Jackson Brown

"Time is the coin of your life. It is the only coin you have, and only you can determine how it will be spent. Be careful lest you let other people spend it for you." — Carl Sandburg














  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS