Md. Afrooz Zaman Khan

Afrooz
Md. Afrooz Zaman Khan. Powered by Blogger.
RSS

BANGLALINK PLAY



banglalink play is a package for the young guns. to keep you connected, the package offers 18 fnf to all operators, and the best rate 0.5 paisa/sec to a special banglalink number. type “p” & send free sms to 9999 and start playing!

banglalink play highlights

  • 18 fnf (any operator) with best fnf rates in the market
  • one special fnf @ 0.5 paisa/sec
  • sms to fnf and special fnf number: 29p/sms
  • mms to all banglalink number: 29p/mms
  • special data pack-5 MB @ tk. 2/day
  • data pack gifting between members of this package
  • subscribers can now enjoy 5 MB at tk. 2 by purchasing 3G starter pack, along with 5 sms and 5 mms (banglalink to banglalink only) completely free!
  • to activate the daily starter pack at tk. 2 and get 5 MB internet, 5 sms & 5 mms dial *5000*513#

frequently asked questions

01. how can i enjoy this package?
ans: if you are a prepaid customer (excl. e-voucher), you can enjoy this package just typing p and sending sms to 9999 (free) or you can also dial *999*1*147# (free).
02. what is the tariff plan of banglalink play?
ans:
call typetime windowtariff
banglalink to banglalink12 am to 4 pm15 paisa/10sec
4 pm to 12 am25 paisa/10sec
banglalink fnf12 am to 4 pm0.7 paisa/sec
4 pm to 12 am1 paisa/sec
banglalink special fnf24 hours0.5 paisa/sec
to other operators12 am to 4 pm15 paisa/10 sec
4 pm to 12 am25 paisa/10sec
other operator fnf24 hours11 paisa/10 sec
* 15% vat & govt. 3% supplementary duty will be applicable
sms typetime windowpaisa/ sms
fnf and special fnf24 hours29
other local sms24 hours50
* 15% vat & govt. 3% supplementary duty will be applicable
mms typetime windowtaka/ mms
banglalink (with fnf and special fnf)24 hours0.29
other operators24 hours5
* 15% vat & govt. 3% supplementary duty will be applicable
03. is the internet pack p9 still active?
ans: the limited time offer for the internet pack p9 has ended. through this offer the subscribers could enjoy 18 MB at tk. 2 instead of 5 MB. as this offer has ended, the subscribers can now purchase the p9 pack at tk. 8 (15% vat & govt. 3% supplementary duty will be applicable).
04. how many fnf and special fnf can i set?
ans: you can add 18 numbers of any local mobile operator as fnf and 01 banglalink special fnf.
05. how can i add fnf and special fnf?
ans: to add fnf dial *166*11*number# and to add special fnf dial *166*7*number#.
06. how can i replace fnf and special fnf?
ans: to replace fnf number dial *166*12*old number*new number#. to replace special fnf number dial *166*8*old number*new number#.
07. how can i remove my current fnf or special fnf numbers?
ans: to remove fnf number dial *166*13*number#, and to remove special fnf number dial *166*9*number#
08. how can i check my current fnf and special fnf numbers?
ans: to check fnf number dial *166*14# and to check special fnf number dial *166*10#.
09. how can i enjoy free facebook browsing?
ans: from your handset’s default browser dial 0.facebook.com. in case of using other proxy rendering browsers like opera or blackberry browser data charge will be applicable. in case of viewing any rich content (photo, videos etc.) and in case of going to another website link from facebook data charges will apply.
10. how can i enjoy daily 300 sms at tk. 5 per day and daily 5 mb at tk. 2 per day?
ans: to subscribe for 300 sms at tk. 5 paisa dial *222*4# and to subscribe 5 mb at tk. 2 dial *5000*513#. to unsubscribe from sms pack dial *222*5# and dial *222*2*7# for internet pack.
11. how can i send internet pack gift to a friend? what is the charge?
ans: you need to dial *132*15*receiver number#. you will be charged tk 2 (15% vat & govt. 3% supplementary duty will be applicable) for this but your friend will not be charged anything. you can only send to another member of banglalink play package.
12. can i enjoy other offers from this package?
ans: to enjoy other special tariff (except raater kotha) and new sim recharge bonus you need to migrate to other package.
13. how frequently can i change this package?
ans: once every 7 days.
14. how frequently can i change fnf and special fnf?
ans: each fnf or special fnf can be changed once every 15 days.
15. how can i check remaining sms and data balance?
ans: to check sms balance dial *124*3#, to check data balance dial *222*3#.










  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

বিতর্কের বীর




জুবায়ের আহমেদতিনি খেলা আর বিতর্ককে মাপেন একই পাল্লায়! জুতসই যুক্তিও রয়েছে তাঁর সে নিক্তির স্বপক্ষে, ‘বিতর্ক আমার কাছে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক খেলা মনে হয়। প্রতিপক্ষকে যুক্তি দিয়ে হারানোর যে আনন্দ, আমার কাছে তা খেলায় জয়ী হওয়ার মতোই ব্যাপার!’ বিতর্ককে খেলা হিসেবে নেওয়া মানুষটির নাম জুবায়ের আহমেদ। ইংরেজি সাহিত্যে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। জুবায়ের সভাপতি হিসেবে হাল ধরেছেন চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির।
শুধুই যে হালটি জাপটে ধরে আছেন এমন নয়, নিজের বিতর্ক দলকে নিয়ে গেছেন জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড কাপ ডিবেটে দলনেতা হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন নিজের ক্লাবই শুধু নয়, পুরো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কেই। শুধু এ বছরই নয়, এর আগেও অংশ নিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। যেমন ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়া-এশিয়ান ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপে।
এ তো গেল আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার গল্প। দলনেতা হিসেবে জাতীয় পর্যায়েও রয়েছে তাঁর সাফল্যের ধারাবাহিকতা। ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চুয়েট আয়োজিত বি৶টিশ পার্লামেন্টারি ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপে। সেরা পুরস্কারটিই নিজের দখলে নিয়েছিলেন ডেইলি স্টার বিজ ডায়ালেটিক ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতাতেও ছিনিয়ে এনেছেন চ্যাম্পিয়নের পুরস্কার।
বিতর্ক চর্চা সম্পর্কে জুবায়ের বলেন, ‘আমার বিতর্ক চর্চা শুরু গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর আর সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকেই। সে চর্চা আরও শাণিত হয়েছে কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময়।’ তুখোড় শব্দের সঙ্গে মেধাবী শব্দটির যতটা ঘনিষ্ঠতা, ঢের বেশি ঘনিষ্ঠতা কিনা বিতার্কিক ও তাঁর নিজ নামের!
শুধুই বিতর্ক নয়, জুবায়ের যুক্ত আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে। সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অংশ হিসেবে ভারতীয় হাইকমিশনের নিমন্ত্রণে বাংলাদেশি তরুণদের যে দলটি ২০১৪ সালে সে দেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, জুবায়েরও ছিলেন সে দলে।
নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলোতে ধারাবর্ণনা করতে জুবায়ের হাতে তুলে নেন মাইক। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনে উপস্থাপক হিসেবেও নামডাক রয়েছে তাঁর। শুধু কি বিশ্ববিদ্যালয়? জুবায়ের বলেন, ‘আমি অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে আয়োজিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেছি।’
জুবায়ের স্বপ্ন দেখেন কূটনীতিক হওয়ার। যেমনটি তিনি বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় যেমন তাঁর দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন, আমার ছোটবেলার খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন থেকে তেমনি আমিও চাই আমার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে। নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে একজন বিতার্কিক হিসেবে কূটনীতিক হওয়াটা বড় সুযোগ।’








  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

শুধু প্রতিভা দিয়েই সাফল্য লাভ করা যায় না




এবি ডি ভিলিয়ার্সদক্ষিণ আফ্রিকার আলোচিত ক্রিকেটার আব্রাহাম বেনজামি ডি ভিলিয়ার্স, এবি ডি ভিলিয়ার্স নামেই ক্রিকেট বিশ্ব যাকে চেনে। জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়াতে ১৯৮৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। এক দিনের ক্রিকেটে দ্রুতগতির অর্ধশতক (১৬ বল), দ্রুতগতির শতক (৩১ বল), দ্রুতগতির ১৫০ রানের মালিক (৬৪ বল) এবি ডি ভিলিয়ার্স।
আমি মনে হয় দুর্ঘটনাবশত ক্রিকেটার হয়ে গেছি। কিশোর বয়সে স্বপ্ন দেখতাম ক্রিকেট খেলব। সেই স্বপ্নের জোরেই আমি এখন ক্রিকেটার। প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে পৃথিবীসেরা খেলোয়াড় হওয়া। যদি এই স্বপ্ন না থাকে, তাহলে বলতে হবে, সেই ক্রিকেটার ভুল কোনো কারণে ক্রিকেট খেলে। আমি অবসরে গিয়ে শুনতে চাই, ‘আমি ভালো ক্রিকেটার ছিলাম।’ আমি চাপ নিয়ে খেলতে ভালোবাসি। খেলার মাঠে প্রবল উত্তেজনার সময় আমি নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলি। সব চাপ নিজের মধ্যে নিয়ে সামনে তাকাই। লক্ষ্যের দিকে ছুটে যাই। হাফ সেঞ্চুরি থেকে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। স্বপ্নের সীমানাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কোন বাধার সামনেই আমি পরাস্ত হতে চাই না। নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যেতে চেষ্টা করি। নিজের পিছে নিজে তাড়া করে বেড়াই। নিজেই হয়ে উঠি নিজের সবচেয়ে ভয়ানক প্রতিদ্বন্দ্বী।
গত কয়েক বছরে আমার খেলার ধরন বেশ বদলেছে। কিন্তু আমার বিশ্বাস একটুও বদলায়নি। আমি সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করি। আমি সব ধরনের পরিবেশে খেলতে চাই, নিজেকে সেভাবে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। আমার লড়াই বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে নয়, নিজের সঙ্গে। আমি নিজে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করি, আর সেই চ্যালেঞ্জের পিছে ছুটে যাই। আমি বড় পরিসংখ্যান আর রেকর্ড করা কোনো ক্রিকেটার নই, কিন্তু আমি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সর্বোচ্চ রান করেছি। এটা আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। স্বপ্নের মতো অবিশ্বাস্য সেই রেকর্ডের মালিক আমি। রেকর্ড করার পরে রেকর্ড দেখতে বেশ ভালো লাগে। কিন্তু মাঠে রেকর্ডের জন্য নামা বোকাদের কাজ।
আমি যখন কিশোর ছিলাম, তখন গ্যারেজে ক্রিকেট খেলতাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করতাম। আমি বিশ্বাস করি, মানুষ নিজেই তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সে মানুষ। আমি ক্রিকেট খেলায় হারতে ঘৃণা করি। ভীষণভাবে ঘৃণা করি। আমি রান করার পরেও আমার দল হারলে আমি ভীষণ হতাশ হই।
ক্রিকেট ছাড়াও আমি টেনিস আর গলফে ভালো ছিলাম একসময়। কিশোর বয়সে আমি সব খেলাই খেলতাম। হাইস্কুলে পড়ার সময় আমি বুঝতে পারি, ক্রিকেটই আমার সব। টেনিস খেলার কারণে আমার বল দেখতে বেশ সুবিধা হয় ক্রিকেটে। ১৬ বছর বয়স থেকে আমি নিয়মিত ক্রিকেট খেলা শুরু করি। ১৭ বছর বয়সে আমি এসএ কোল্ট দলে খেলার সুযোগ পাই। আর ১৮ বছর বয়সে আমি অনূর্ধ্ব ১৯ দলে সুযোগ পাই। যেদিন প্রথম আমি জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাই, সেদিনের কথা এখনো আমার মনে আছে। আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। আমার মনে হয়েছিল, পরের দিনই কোনো হাই ভোল্টেজ ম্যাচ আছে। আমি সকালে ঘুম থেকে উঠেই নেট প্র্যাকটিসে চলে গিয়েছিলাম। সেই দিনের রোমাঞ্চ এখনো অনুভব করি। অবসরে আমি গান আর মাছ ধরা নিয়েই ব্যস্ত থাকি। আমি তো গিটারও বাজাতে পারি। আমি বেশ কটি গানও লিখেছি। আমি অবসরে গেলে গান-বাজনার জগতে ঢুকে যাব। ক্রিকেটের খ্যাতি গানের দুনিয়াতে কাজে লাগবে তখন।
আমি নিজেকে নিজের লক্ষ্য ঠিক করে দিই। আমার কাছে জীবনটা হলো দৌড়। সব সময় দৌড়াতে হবে। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে থাকলেও দৌড়াতেই হবে। ইনজুরিতে পড়লেও আমাদের দৌড়াদৌড়ি করেই সেই ইনজুরি কাটাতে হয়। মানুষ মাত্রই যোদ্ধা, সংগ্রাম ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা সবাই নিজ নিজ ভুবনে যোদ্ধা। আমাদের নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে সামনে এগিয়ে যেতে হয়।

শুধু প্রতিভা দিয়েই মানুষ সাফল্য লাভ করতে পারে না। নিজের ওপর বিশ্বাস, আর কঠিন শ্রমই পারে আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। বড় কিছু করার জন্য সুযোগ এলেই তা ধরে কাজে লাগাতে হবে। অন্য কেউ আপনার হয়ে কাজ করে দেবে না, নিজের কাজ নিজেই করতে হবে। নিজের ওপর দৃঢ় বিশ্বাসই মানুষকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। পথে নামলে বাধা আসবেই। ব্যর্থতার মধ্য দিয়েই আমরা সামনে এগিয়ে যাই। সাময়িক বাধায় হতাশ না হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল আয়ত্ত করতে পারলেই সবকিছু সহজ হয়ে যায়। প্রতি মুহূর্তকেই নিজের জন্য কাজে লাগাতে হবে। সব বল যে ব্যাটে লাগাতে হবে—এমন কোনো কথা নেই। ছুটে যাওয়া বল দেখাও একধরনের কৌশল। সময় নিয়ে বলের গতি বুঝে বলে আঘাত করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আমাদের জীবনটাই এমন। সময় আর ধৈর্য নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। নিজের শক্তি আর সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস রেখে খেলে যাওয়াই প্রথম কাজ। সুযোগ প্রতীক্ষা বসে থাকার সময় নিজের শক্তি বাড়ানো যোদ্ধাদের সত্যিকারের কাজ।











  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

মানুষ মানুষের জন্য



হৃদয় থাকলে, মনুষ্যত্ব থাকলে সাধারণের পক্ষেও অসাধারণ কীর্তি করা যে সম্ভব, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন চট্টগ্রামে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পল্টু বড়ুয়া। তিনি পথে জন্মানো এক নবজাতকের আশ্রয় হয়েছেন, তার অপ্রকৃতিস্থ মায়ের চিকিৎসা ও আশ্রয় জুটিয়েছেন। চারপাশের অমানবিকতার পঙ্কিল স্রোতে তিনি যেন এক মানবতার দ্বীপ। তাঁকে জানাই অভিবাদন।

পাথরেও ফুল ফোটে, শহর চট্টগ্রামের ফুটপাতেও জন্মে সুন্দর এক মানবশিশু। অপ্রকৃতিস্থ এক নারী, যাঁর কোনো আশ্রয় নেই, একা একাই সন্তান প্রসব করতে হয় তাঁকে। আর সেই দৃশ্য গোল হয়ে ঘিরে দেখে নিরাবেগ পথচারীরা। কিন্তু একজনের হৃদয়ে আলোড়ন ওঠে। সেই তিনি পল্টু বড়ুয়া মা ও শিশুকে নিয়ে যান হাসপাতালে। নিজেই অভিভাবক হয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। শুধু তা-ই নয়, পরদিন সুস্থ মা ও শিশুটিকে নিয়ে যান আপন সংসারে।
পুলিশের একজন এএসআইয়ের এতটুকু করার সামর্থ্য থাকার কথা নয় এই বাজারে। তারপরও তিনি করেছেন। নিজের তিন সন্তান, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সংসার তাঁর। তাই বলে সাময়িক উদারতা করে থামেননি; নিজের এক নিঃসন্তান আত্মীয়ের কোলে তুলে দেন নবজাতককে। কেননা, অপ্রকৃতিস্থ মায়ের পক্ষে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না। এরপর মাকেও তাঁর মতো থাকার বন্দোবস্ত করে দেন। এর থেকে আর কী ভালো হতে পারে? কী হতে পারে অধিকতর মহৎ ও সুন্দর!


আমাদের একটি মানুষও যদি সামান্য সদয় ও মানবিক হয়, তাহলে সমাজটা আরও মানবিক ও সুস্থ হয়। গৃহকর্মীর প্রতি, শ্রমজীবীর প্রতি, আশ্রয়হীন দরিদ্রের প্রতি, অসহায় শিশুর প্রতি এবং সহনাগরিকের প্রতি সামান্য সদয়ের যোগফলে হতে পারে অসামান্য মানবিকতার জয়। পল্টু বড়ুয়া শুধু আমাদের শেখালেনই না, পুলিশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করলেন। শুভকাজকে পুরস্কৃত করার ঐতিহ্য তাঁর বেলাতেও প্রযুক্ত হোক। স্বীকৃতি মানুষকে শুভকাজে উৎসাহিত করে।






  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

মানুষ মানুষের জন্য



হৃদয় থাকলে, মনুষ্যত্ব থাকলে সাধারণের পক্ষেও অসাধারণ কীর্তি করা যে সম্ভব, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন চট্টগ্রামে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পল্টু বড়ুয়া। তিনি পথে জন্মানো এক নবজাতকের আশ্রয় হয়েছেন, তার অপ্রকৃতিস্থ মায়ের চিকিৎসা ও আশ্রয় জুটিয়েছেন। চারপাশের অমানবিকতার পঙ্কিল স্রোতে তিনি যেন এক মানবতার দ্বীপ। তাঁকে জানাই অভিবাদন।
পাথরেও ফুল ফোটে, শহর চট্টগ্রামের ফুটপাতেও জন্মে সুন্দর এক মানবশিশু। অপ্রকৃতিস্থ এক নারী, যাঁর কোনো আশ্রয় নেই, একা একাই সন্তান প্রসব করতে হয় তাঁকে। আর সেই দৃশ্য গোল হয়ে ঘিরে দেখে নিরাবেগ পথচারীরা। কিন্তু একজনের হৃদয়ে আলোড়ন ওঠে। সেই তিনি পল্টু বড়ুয়া মা ও শিশুকে নিয়ে যান হাসপাতালে। নিজেই অভিভাবক হয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। শুধু তা-ই নয়, পরদিন সুস্থ মা ও শিশুটিকে নিয়ে যান আপন সংসারে।
পুলিশের একজন এএসআইয়ের এতটুকু করার সামর্থ্য থাকার কথা নয় এই বাজারে। তারপরও তিনি করেছেন। নিজের তিন সন্তান, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সংসার তাঁর। তাই বলে সাময়িক উদারতা করে থামেননি; নিজের এক নিঃসন্তান আত্মীয়ের কোলে তুলে দেন নবজাতককে। কেননা, অপ্রকৃতিস্থ মায়ের পক্ষে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না। এরপর মাকেও তাঁর মতো থাকার বন্দোবস্ত করে দেন। এর থেকে আর কী ভালো হতে পারে? কী হতে পারে অধিকতর মহৎ ও সুন্দর!
আমাদের একটি মানুষও যদি সামান্য সদয় ও মানবিক হয়, তাহলে সমাজটা আরও মানবিক ও সুস্থ হয়। গৃহকর্মীর প্রতি, শ্রমজীবীর প্রতি, আশ্রয়হীন দরিদ্রের প্রতি, অসহায় শিশুর প্রতি এবং সহনাগরিকের প্রতি সামান্য সদয়ের যোগফলে হতে পারে অসামান্য মানবিকতার জয়। পল্টু বড়ুয়া শুধু আমাদের শেখালেনই না, পুলিশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করলেন। শুভকাজকে পুরস্কৃত করার ঐতিহ্য তাঁর বেলাতেও প্রযুক্ত হোক। স্বীকৃতি মানুষকে শুভকাজে উৎসাহিত করে।





  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

হার্ভার্ডের সমাবর্তনে



হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে লেখক (বাম থেকে তৃতীয়)চার বছরের পথচলা। শেষ? না, শেষের শুরু? প্রতিদিন ক্লাসে যাওয়ার দৌড়াদড়ি, নানা দেশের নানা মতের বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা। পড়াশোনা, গবেষণা, ঘুরে বেড়ানো, জানাশোনার চেষ্টায় জাদুঘর-লাইব্রেরি এখানে-সেখানে বই নিয়ে আর পড়তে হবে না। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, এলিয়ট হাউসের ডাইনিং, বারান্দায় বৃষ্টি, তুষার আর রৌদ্রঝলক দেখার সমাপ্তের ঘণ্টা বেজে গেছে। হাউস মাস্টার ডাগ মেল্টনের নিয়মকানুনের কথা সব সময় মনে থাকে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২৮ মে। বাংলাদেশের একমাত্র গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী হিসেবে এই সমাবর্তনে আমি অংশ নিই। আমি ছাড়াও পিএইচডি পর্যায়ে রেজওয়ান হক নামের আরেকজন বাংলাদেশিও অংশ নেন। ১৬ মে আমার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি। দেশ থেকে আমার পুরো পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে এসে হাজির। শুধু আমিই নই, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সব শিক্ষার্থীর পরিবার-পরিজনদের মেলা বসে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের টারসেন্টেনারি থিয়েটারে শুরু হয় সমাবর্তন–যজ্ঞ। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে হার্ভার্ডের ম্যাসাচুসেটস অ্যাভিনিউ, কুইন্সি স্ট্রিট, ব্র্যাটেল স্ট্রিট, ব্রডওয়ে, কেমব্রিজ স্ট্রিটে কালো গাউন আর হ্যাট পরে ২০১৫ সালের গ্র্যাজুয়েটদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে। ক্লাস ডে স্পিকার হিসেবে এ বছর বক্তব্য দেন হলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী নাটালি পোর্টম্যান। পোর্টম্যান হার্ভার্ড কলেজে সাইকোলজি বিষয়ে ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি সমাবর্তন বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৯৯ সালে আমি ফ্রেশম্যান হিসেবে হার্ভার্ডে পা রাখি। এখানে আসার আগে আমি কোনো দিন ১০ পাতা লেখার চর্চা করিনি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েই আমি সপ্তাহে এক হাজার পাতা পড়ার চর্চা করতাম, আর তাতেই শেষ পর্যন্ত ৫০ পাতার থিসিস নিজে লিখেছিলাম। আমার বিশ্ববিদ্যালয়জীবন ছিল দারুণ অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। আজ সব মনে পড়ছে।’ নাটালির মতোই অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার সব শিক্ষার্থীর মনে যেন গেল চার বছরের সব ঘটনার টুকরো টুকরো ফ্ল্যাশব্যাক চলছিল।
২৭ মে আয়োজন করা হয় ক্লাস ডে পিকনিক। সেদিনে বিকেলে ছিল ক্লাস ডে এক্সারসাইট। এখানে এমেস অ্যাওয়ার্ড, হার্ভার্ড ও আইভি ওরেশনস ও ক্লাস ওড হিসেবে ‘ফেয়ার হার্ভার্ড’ গাওয়া হয়। ২৮ মে সকালে ছিল মর্নিং এক্সারসাইজ। গ্র্যাজুয়েটরা ক্যাপ আর গাউন পরে ছিল ছবি তোলায় মহা ব্যস্ত। ৩২ হাজারের বেশি মানুষ হাজির ছিল এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব হাজির হয়েছিল এই রঙিন আয়োজনে। ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকেও এদিন দেখা গিয়েছিল হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে। মার্ক জাকারবার্গ-পত্নী প্রিসিলার বোন মিশেলও এবারের সমাবর্তনে অংশ নেন বলে জাকারবার্গকে ক্যাম্পাসে দেখা যায়।
আমরা বন্ধুরা ছিলাম ভীষণ উত্তেজিত। সামনে নতুন জীবন, পেছনে আলোকিত স্মৃতি। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল লাৎসকি, কার্ল গাও, ভারতের রিষভ মুখার্জি, অ্যান্ড্রু লিও, অর্পন রাকসিতসহ অনেক বন্ধুর সঙ্গে ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমি ইবেতে ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে যোগদান করছি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আর হয়তো শিক্ষার্থী হিসেবে আসা হবে না। এখানকার শিক্ষা আর শক্তি নিজ কর্মক্ষেত্রে প্রমাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্থকতা প্রমাণ করতে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করি।











  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

ঝুঁকি নিতে দ্বিধা কোরো না



টাইটানিক, টার্মিনেটর আর অ্যাভাটার-এর মতো দুনিয়াজুড়ে আলোড়ন তোলা চলচ্চিত্রের পরিচালক জেমস ক্যামেরন। পেয়েছেন অস্কার, গোল্ডেন গ্লোবসসহ অসংখ্য পুরস্কার। তাঁর জন্ম ১৯৫৪ সালে কানাডার অন্টারিওর একটি গ্রামে। তিনি নাসা উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য।
জেমস ক্যামেরনআমার ছোটবেলা কেটেছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি পড়ে। হাইস্কুলে পড়ার সময় প্রতিদিন বাসে করে স্কুলে যেতে-আসতে আমার দুই ঘণ্টা লাগত। পুরো সময়টা আমি সায়েন্স ফিকশনের বিভিন্ন বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে কাটিয়ে দিতাম, এ যেন এক অন্য জগতে হারিয়ে যাওয়া। স্কুলের সময়ের বাইরে বাকি সবটুকু সময় আমার কাটত জঙ্গলে ঘুরে। ব্যাঙ, সাপ, পোকামাকড়, এমনকি পুকুরের পানি—সবকিছুর একটু করে নমুনা বাড়িতে নিয়ে এসে আমি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রেখে দেখার চেষ্টা করতাম। একদম খুদে বিজ্ঞানী বলতে যা বোঝায়, আমি ঠিক তাই ছিলাম। আমি পৃথিবীকে বুঝতে চাইতাম, দেখতে চাইতাম সম্ভাবনার সীমা কোথায়।
আমি ছবিও আঁকতাম। তখনকার দিনে তো ভিডিও গেমস ছিল না। চলচ্চিত্র দেখার সুযোগও ছিল সীমিত। তাই নিজের চিন্তায় যা খেলা করত তা নিজেই এঁকে ফেলতাম। দেখা যেত অঙ্ক ক্লাসে বসে বসে খাতার পেছনে ভিনগ্রহ, ভিনগ্রহের প্রাণী, রোবট, স্পেসশিপ—এসব আঁকিবুঁকি করছি। ১৫ বছর বয়সে আমি ঠিক করলাম সমুদ্রে স্কুবা ডাইভিং করব। কিন্তু আমি থাকতাম কাডার এক গ্রামে, সেখানে থেকে সাগর ৬০০ মাইল দূরে। কিন্তু আমি হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলাম না। অবশেষে বাবা নিউইয়র্কে এক ডাইভিং শেখার ক্লাসের খোঁজ পেলেন, আর সেখানকার পুলে প্র্যাকটিস করতে করতেই আমি সার্টিফিকেটধারী স্কুবা ডাইভার হয়ে গেলাম! তারপর থেকে গত ৪০ বছরে আমি প্রায় তিন হাজার ঘণ্টা পানির নিচে কাটিয়েছি। গভীর সমুদ্রের তলদেশে জীবনের যে অবিশ্বাস্য বৈচিত্র্য আমি দেখেছি, তা আমার কল্পনাকেও হার মানায়। সমুদ্রের জলরাশির সঙ্গে সেই যে আমার ভালোবাসার শুরু, তা আজও ঠিক প্রথম দিনের মতোই অটুট।
ক্যারিয়ার হিসেবে যখন চলচ্চিত্র নির্মাণকে বেছে নিলাম, তখন ছোটবেলায় আঁকা ছবি আর বইয়ে পড়া গল্পগুলোকে এক সুতোয় বাঁধার দারুণ সুযোগ এল। স্বাভাবিকভাবেই ছবির গল্প হিসেবে আমার পছন্দ ছিল সায়েন্স ফিকশন, যেমন টার্মিনেটর, অ্যালিয়েনস আর অ্যাবিস। একদিন আমি স্টুডিওতে গিয়ে বললাম, আচ্ছা রোমিও জুলিয়েটের কাহিনি যদি জাহাজের প্রেক্ষাপটে বানাই তাহলে কেমন হয়? এক দারুণ রোমান্টিক ছবি, আবেগে ভরপুর। আসলে আমি মনে মনে চাইছিলাম, সাগরের তলদেশে ডুবে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ নিজের চোখে দেখতে। সত্যি বলতে কি, সাগরতলে ডুব দেওয়ার সেই আকাঙ্ক্ষা থেকেই টাইটানিক চলচ্চিত্রের জন্ম। স্টুডিও তো আর আমার মনের খবর জানে না! আমি তাদের বোঝালাম যে আমরা একদম কাছ থেকে ধ্বংসাবশেষের চিত্রগ্রহণ করব আর ছবির শুরুতেই তা দেখানো হবে। ছবির প্রচারণার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, দারুণ কাজে দেবে। অবশেষে তারা সাগরের তলদেশে অভিযানের ব্যয়ভার বহন করতে রাজি হলো। তার ঠিক ছয় মাস পর আমি নিজেকে আবিষ্কার করি উত্তর আটলান্টিকের আড়াই মাইল গভীরে, সত্যিকারের টাইটানিকের সামনে। ছবি নয়, কল্পনা নয়, বাস্তবের টাইটানিক! জানি শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। কিন্তু এভাবেই মানুষ কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেয়, অসম্ভব বলতে কোনো কিছু নেই।

ছোটবেলায় আমি ছিলাম সায়েন্স ফিকশনের ভক্ত আর এখন আমি যা করি তা সত্যিকারের বিজ্ঞান চর্চা। কল্পনার পৃথিবী থেকে বাস্তবের পৃথিবীকে জানার এই যে যাত্রা, এ যাত্রায় আমি অনেক কিছু শিখেছি। বিজ্ঞান তো শিখতে হয়েছেই, সঙ্গে সঙ্গে শিখতে হয়েছে কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়। অনেকে হয়তো মনে করবে, এ আর এমন কী। একজন পরিচালককে তো নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেই হবে। কিন্তু ব্যাপারটি এত সহজ নয়। চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে আমি নেতৃত্ব দিতে শিখিনি, শিখেছি প্রামাণ্যচিত্র বানাতে গিয়ে। সেগুলোর দর্শক খুবই সীমিত। আহামরি খ্যাতি, গৌরব, পরিচিতি কিছুই নেই। আর্থিকভাবেও লাভজনক হওয়া তো দূরের কথা, খরচ তুলে আনতেই কষ্ট হয়। এমন অবস্থায় নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলাম, ‘এসব কী করছি? কেন করছি? কী পাওয়ার জন্য করছি?’ আসলে কাজগুলো ছিল চ্যালেঞ্জিং, সফলভাবে সেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়াটাই আমাকে অনুপ্রাণিত করত।
যখন অ্যাভাটার নির্মাণে হাত দিলাম, সেখানে নেতৃত্বের কিছু নীতি কাজে লাগানোর চেষ্টা করলাম। যেমন তুমি যদি তোমার দলের সদস্যদের শ্রদ্ধা করো, তবেই তারা তোমাকে শ্রদ্ধা করবে। এর ফলাফল ছিল অবিশ্বাস্য। প্রামাণ্যচিত্রের মতো এখানেও আমাদের দলটা ছিল খুব ছোট, আর আমরা যা করতে চাইছিলাম তার জন্য দরকারি প্রযুক্তিও হাতের কাছে ছিল না। নিজেদের তাগিদেই আমাদের প্রযুক্তি তৈরি করে নিতে হয়েছিল। দারুণ রোমাঞ্চকর, দারুণ চ্যালেঞ্জিং একটা কাজ। আর সাড়ে চার বছর ধরে একসঙ্গে সেসব করতে গিয়ে আমরা একটি পরিবারে পরিণত হয়েছিলাম।
দলের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া শ্রদ্ধা ও সম্মান পৃথিবীর সব পুরস্কারকে হার মানায়। আমার কাছে অনেক তরুণ নির্মাতা উপদেশ চাইতে আসেন। আমি তাঁদের বলি, ‘নিজের সামর্থ্যের ওপর আস্থা রাখো। ঝুঁকি নিতে দ্বিধা কোরো না।’

নাসায় একটি কথা প্রচলিত আছে যে এখানে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। তবে শিল্পকলা আর অভিযানের ক্ষেত্রে ব্যর্থতাকে আলিঙ্গন করে শেখাটা জরুরি। কারণ, এখানে বিশ্বাস করে অনেক বড় বড় ঝুঁকি নিতে হয়। ঝুঁকি না নিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা যায় না। তাই আমার শেষ কথা হলো, ব্যর্থতাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কিন্তু ঝুঁকি নিতে ইতস্তত করলে চলবে না। ব্যর্থ হলে হতে পারো, কিন্তু কখনো কোনো কাজকে ভয় পেয়ো না।

তথ্যসূত্র: যুক্তরাষ্ট্রের টেড সম্মেলনে জেমস ক্যামেরনের বক্তৃতা।
ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ












  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

দুশ্চিন্তা নয়, চিন্তা করো


অস্কারজয়ী হলিউডের অভিনেত্রী নাটালি পোর্টম্যান। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনীর জন্ম ১৯৮১ সালের ৯ জুন। ২০১০ সালে ব্ল্যাক সোয়ান চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার জয় করেন। ২০১৫ সালের ২৭ মে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে তিনি এই বক্তব্য দেন।
নাটালি পোর্টম্যান২০১৫ সালের সব শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন। আমি তোমাদের সামনে দাঁড়াতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। শিক্ষক-অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাই। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কথা বলা নিশ্চয়ই দারুণ রোমাঞ্চকর ঘটনা। আমাদের সময় বক্তা ছিলেন অভিনেতা উইল ফেরেল। সেদিন আমরা বেশির ভাগই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সেই বক্তব্য শুনেছিলাম। সেই ১২ বছর আগের ঘটনা আমার এখনো মনে পড়ে। সেই তখনকার মতোই আমি এখনো আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। আমার কী হবে?
১৯৯৯ সালে আমি শিক্ষার্থী হিসেবে হার্ভার্ডের প্রাঙ্গণে পা রাখি। সেই সময় তোমরা বেশির ভাগই কিন্ডারগার্টেন স্কুলে মোজা পরে যেতে! সেই সময়টায় ভবিষ্যৎ নিয়ে যেভাবে চিন্তা করতাম, এখনো সেই চিন্তা করি। তখন করতাম দুশ্চিন্তা, আর এখন শুধুই চিন্তা।
জীবনটা আসলে নিজেকেই তৈরি করতে হয়। অন্যকে অনুসরণ বা অনুকরণ করে বেশি দূর যাওয়া যায় না। জ্ঞান-বুদ্ধি আর পড়াশোনার মধ্য দিয়ে নিজেকে বদলাতে হয়। পার্কে খেলার সময় শিশুরা তাদের বলের দিকে সব মন দিয়ে দেয়, তোমাদের ভবিষ্যতের দিকে সেভাবেই মন দিতে হবে। সাফল্য আসুক, না আসুক, সেই শিশুর মতো বল খেলে যাও।

আমি একটি পাবলিক হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছি। তখন মাত্র ইন্টারনেটের বিকাশ শুরু হয়েছে। অন্য সব কিশোরীর মতোই আমার হাইস্কুল জীবনটা ছিল ভীষণ এলোমেলো। এখন বুঝি সময়টা তখন রঙিন ছিল, কিন্তু আমার এলোমেলো কাজে রঙিন জিনিসই আমার কাছে বিরক্ত লাগত।
আমি ১১ বছর বয়স থেকে নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছি। আমার কাছে তখন অভিনয় তেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। আমার পুরো পরিবার ছিল শিক্ষানুরাগী, যে কারণে আমাকে পড়াশোনাকে গুরুত্বের চোখে দেখতে হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা আর দুনিয়া নিয়ে ভাবনা আমার ধ্যানধারণা বদলে দেয়। আমার কাছে জীবন মানে অভিনয়, আর অভিনয় মানে মানুষের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া।

আমি ছোটবেলা থেকেই চাইতাম এমন কিছু করতে, যেখানে অন্যদের গল্প বলা যায়, শোনা যায়, দেখা যায়। নিজের থেকে কিছু করতে চাইতাম দেখেই অভিনয়ের দুনিয়াতে আমার পা রাখা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি আমাকে আমার দুনিয়াকে বড় করে দেখতে আর ভাবতে শিখিয়েছে।
আমাদের যে সবকিছুতে অভিজ্ঞ হয়ে কাজে নামতে হবে, তা ঠিক না। চেষ্টা করে যাওয়া, লেগে থাকার প্রত্যয় থাকলেই যেকোনো কাজে সফল হওয়া যায়। আমাদের সব বিষয়ে জ্ঞান না-ও থাকতে পারে, এই না থাকাটাকে শক্তি হিসেবে ধরে নিয়ে অনেক বড় কাজ করা যায়। নিজের মধ্যে যা নেই, তা নিয়ে না ভেবে, যা আছে তাই নিয়ে কাজে ডুবে যাওয়া উচিত সবার। ব্ল্যাক সোয়ান সিনেমা করার সময় আমাকে ভীষণ পরিশ্রম করতে হয়। ব্যালে নাচ নিয়েই ছিল সেই সিনেমা। আমি টুকটাক নাচ পারতাম, কিন্তু পেশাদার ছিলাম না। আমি যদি আমার সীমার মধ্যে কাজ করার চেষ্টা করতাম, তাহলে আমি ঝুঁকি নিতাম না, অভিনয় করতে চাইতাম না। আমি ঝুঁকি নিয়ে অভিনয় করি, আর সেই ঝুঁকির জন্যই আমি আমার জীবনের অন্যতম সম্মান অঅস্কার পুরস্কার জয় করি।

আমি কাজের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সঙ্গ উপভোগ করি। মানুষের সঙ্গে গল্প করলে, আড্ডা দিলে অনেক কিছু শেখা যায়, জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি অভিনয়ের সঙ্গে ভালো পড়াশোনা করার চেষ্টা করি। আমি নিউরো বায়োলজি আর হিব্রু সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শুরু করি। আমার মধ্যে সব সময় চেষ্টা করার মানসিকতা রাখি আমি। সাফল্য আসুক, না আসুক, আমি পরিশ্রম করে আনন্দ পাই। কাজের আনন্দ নিয়ে কাজ করতে হয়। সম্মান আর খ্যাতি নিয়ে ভাবলে কাজ করা হয় না। আমাকে এখনো অনেক সিনেমার জন্য অনেকেই প্রশংসা করে। আমি কিন্তু ভালো অভিনয়ের চেষ্টা করি, লেগে থাকার মানসিকতাই আমাকে ঘাড় উঁচু করে চলার শক্তি দেয়। নিজেকে তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
গুনে গুনে হিসাব করে কিছু করা যায় না। কাজ করতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। নিজের দুনিয়াকে যারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তারাই সবচেয়ে বেশি জীবন উপভোগ করে। আমি আরেকটা কথায় বিশ্বাসী, অন্যের জীবন বদলে দেওয়ার মধ্যে অনেক আনন্দ আছে। আফ্রিকার শিশুদের শিক্ষার জন্য আমি কাজ করি, কত শিশুর জীবন বদলে গেছে, তা ভাবতেই আমার ভীষণ আনন্দ লাগে। মানব সভ্যতা কিন্তু এভাবেই সামনে এগিয়ে যায়। একে অন্যকে এগিয়ে না নিয়ে গেলে সভ্যতা সামনে এগিয়ে যেতে পারে না।
দার্শনিক আব্রাহাম জুসোয়া হেশেলের একটা কথা আমি সব সময় বিশ্বাস করি। ‘কী হবে আর কী না হবে’ তা প্রশ্ন না করে ‘কী করতে হবে আর কীভাবে করতে হবে’ তাই আমাদের ভাবতে হবে। আমি অপেক্ষা করব, তোমরা কীভাবে পৃথিবী বদলে দেবে, তা দেখার জন্য। সবাইকে ধন্যবাদ।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট। ২০১৫ সালের ২৭ মে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দেওয়া বক্তব্যের নির্বাচিত অংশের অনুবাদ







  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

বড় চিন্তা করো


ফেসবুকের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) ও সামাজিক সাম্য আন্দোলন ‘লিন ইন’-এর উদ্যোক্তা শেরিল স্যান্ডবার্গ। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনীর জন্ম ১৯৬৯ সালের ২৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে।২০১৪ সালে ফরচুন ম্যাগাজিন তাঁকে পৃথিবীর ১০ম ক্ষমতাধর নারীর স্বীকৃতি দেয়।
শেরিল স্যান্ডবার্গ২০১৫ সালের স্নাতক সব শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-অভিভাবকদের অভিনন্দন। যখন আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়, আমি ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলাম যে কীভাবে আমার চেয়ে বয়সে ছোট আর টগবগে একদল তরুণের সঙ্গে কথা বলব? আসলে প্রতিদিনই ফেসবুকে আমাকে এই কাজ করতে হয়। মার্ক জাকারবার্গ আমার চেয়ে ১৫ বছরের ছোট, ফেসবুকের বেশির ভাগ কর্মীই আমার চেয়ে বয়সে ছোট আর তরুণ। আমার চারপাশ তরুণেরা ঘিরে রাখে। আমাকে তারা হতভম্ব করে জিজ্ঞেস করে, ‘মুঠোফোনবিহীন আমাদের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কেমন ছিল?’ আবার কেউ কেউ আরও বিপদে ফেলে জিজ্ঞেস করে, ‘শেরিল, আমাদের নতুন পদ্ধতি বয়স্করা কেমন পছন্দ করবে তা তোমার কাছ থেকে জানতে চাই!’
আমি ১৯৯১ সালে কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করি আর বিজনেস স্কুলকে বিদায় জানাই ১৯৯৫ সালে। সেই সময়টা বেশি আগের না। কিন্তু গত ২৫ বছরে পৃথিবী আমূল বদলে গেছে। আজকে যে পৃথিবীতে বাস করছি, তা ২৫ বছর আগে কল্পনারও বাইরে ছিল। তোমরা কিন্তু ভাগ্যবান। আজ থেকে ২৫ বছর পরের প্রজন্মের জন্য তোমরা অনেক কিছু করতে পারো।
আমার মতে, দেশ নেতৃত্ব দিতে পারে না, নেতৃত্ব দেয় আসলে মানুষ। স্নাতক শেষে তোমার যাত্রা শুরু হবে। কোন ধরনের নেতা হবে তুমি, তা তোমাকেই ঠিক করতে হবে। ফেসবুক অফিসে আমরা দেয়ালে নানা ধরনের পোস্টার ঝুলিয়ে রাখি। এর একটি হচ্ছে ‘বড় চিন্তা করো।’ আজ তোমাদের নেতৃত্বের জন্য চারটি অর্থবহ গুণের কথা তোমাদের জানাতে চাই।
প্রথমত, সাহসীরা সৌভাগ্যের দেখা পায়। ফেসবুক টিকে আছে মার্ক জাকারবার্গের একটা বিশ্বাসের জোরেই। সেই বিশ্বাসের কারণেই সে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ড্রপআউটের তালিকায় নাম লেখায়। মার্ক আসলে যা করেছে তা ভাগ্যজনিত কিছু না, সে যা করেছে তা নিজের সাহসে করেছে।
মার্ক যে বয়সে ফেসবুক গড়েছে, সেই বয়সে আমার এতটা সাহস ছিল না। ২০০১ সালে সিদ্ধান্ত নিই সরকারি চাকরি ছেড়ে সিলিকন ভ্যালিতে আসার। বছর খানেক প্রচেষ্টার পরে চাকরি পাই। প্রথম ইন্টারভিউয়ে আমাকে এক প্রযুক্তি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী বলেছিলেন, ‘আপনার মতো সরকারের কাজ করা কাউকে আমি নিয়োগ দিতে পারব না।’ আমি লেগে ছিলাম, প্রযুক্তি কোম্পানিতে কাজ করতেই হবে। সেই লেগে থাকা থেকেই আমি এখনো কাজ করে যাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, তুমি যদি তোমার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য লেগে থাকো, তাহলে একদিন তোমার লক্ষ্যে পৌঁছাবেই।
নেতৃত্বের দ্বিতীয় গুণ হলো, অন্যের মতামতকে সম্মান দেওয়া। সত্যিকারে নেতা তিনি, যিনি মতামত দিতে পারেন এবং অন্যের মতামত গ্রহণ করতে পারেন। মন দিয়ে কথা বলা আর কথা শোনা—দুটোই অনন্য মানবীয় গুণ।
তৃতীয় গুণটি হলো, সব কিছুকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা। আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে যাঁরা নেতৃত্ব দেন, তাঁদের দেখে ভাবতাম, ‘তাঁরা কত সৌভাগ্যবান, সবকিছুই তাঁদের নিয়ন্ত্রণে।’ বিজনেস স্কুলে পড়ার সময় আমার ভুল ভাঙে। সত্যিকারের নেতারা অন্যদের মন জয় করতে পারেন অন্যদের কাজকে গুরুত্ব দিয়ে। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ফ্রান্সিস ফ্রেইয়ের একটি কথা আছে, ‘নেতৃত্ব আসলে অনন্য সেই গুণ, যা তোমার উপস্থিতিতে শুধু অন্যদের উৎসাহ দেয় না অনুপস্থিতেও তোমার প্রভাব অন্যদের ওপর ফেলে।’
সবাইকে একসঙ্গে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ই নেতৃত্বের সর্বশেষ গুণ। চীনা প্রবাদে বলে, নারীরা অর্ধেক আকাশ আগলে রাখেন। নারীদের ভূমিকা আর কাজের অবদানের কথা সবাই স্বীকার করলেও দেশ পরিচালনায় নারী নেতৃত্ব কম দেখা যায়। হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া পৃথিবীর সব দেশেই পুরুষেরা নেতৃত্বে রয়েছেন। পৃথিবীর বড় বড় কোম্পানির মধ্যে ৬ শতাংশের কম প্রতিষ্ঠান নারীরা পরিচালনা করেন। সব ক্ষেত্রেই নেতৃত্বে নারীদের সংখ্যা কম। আমরা ধরে নিই, নেতা মানেই পুরুষ। নারীরা যেন শুধু অন্যদের কথা শোনার জন্যই কাজ করেন। আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবী আরও উন্নত হবে সেদিন, যেদিন অর্ধেক পুরুষ গৃহস্থালির কাজ করবে আর অর্ধেক নারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবে।
আমি পরিষ্কারভাবে সবাইকে জানাতে চাই, সাম্য শুধু নারীর জন্য নয়, নারী-পুরুষ সবার জন্য মঙ্গলজনক। আমি বিশ্বাস করি তোমাদের প্রজন্ম কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষে আরও বেশি সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। আজকের দিনটি তোমাদের জন্য প্রতিজ্ঞা নেওয়ার সময়। আজকেই ঠিক করে নাও কেমন নেতা হতে চাও তুমি। অন্যকে কাজে উৎসাহ দাও। অন্যকে অনুপ্রাণিত করো। সাম্য প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করো। সামনে এগিয়ে যাও! সবাইকে অভিনন্দন।
সূত্র: ২৭ জুন ২০১৫ চীনের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ইকোনমিকস
অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টে দেওয়া শেরিল স্যান্ডবার্গের সমাবর্তন বক্তৃতা। ইংরেজি থেকে নির্বাচিত অংশের অনুবাদ  











  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

উচ্চশিক্ষার সারথি





ছবিতে বাঁ থেকে শরীফ, মনজিমা, নেয়ামা, মুনতাসীর, তাসনিমা ও অনিন্দ্য। ছবিসূত্র: ইউএস এম্বাসি ঢাকার ফেসবুক পেজযুক্তরাস্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য হাজারো শিক্ষার্থীর প্রতীক্ষার যেন শেষ নেই। সেই দেশে পড়াশোনার জন্য অন্যতম সম্মানজনক এক বৃত্তির নাম ‘ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম’। বিশ্বের অন্যতম নামকরা এ বৃত্তিপ্রাপ্ত ৫৩ জন জয় করেছেন নোবেল পুরস্কার আর ৭৮ জন পেয়েছেন পুলিৎজার পুরস্কার। ফুলব্রাইট প্রোগ্রামে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের ফি থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়া-যাতায়াতসহ যাবতীয় খরচ দেওয়া হয়। এ বছর বাংলাদেশ থেকে ছয়জন তরুণ গবেষক ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পেয়েছেন। শোনা যাক এই ছয় তরুণের উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরণের গল্প।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে একই বিভাগে শিক্ষকতা করছেন অনিন্দ্য কিশোর দেবনাথ। অনিন্দ্য জর্জিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সিটি অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং বিষয়ে মাস্টার্সে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। অনার্সের সময় বিভাগের সেরা থিসিস সম্মাননা পেয়েছিলেন অনিন্দ্য। সেই ধারাবাহিকতায় ভালো ফলের জন্য ২০১০ সালে পেয়েছিলেন বিভাগের প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক। আইডিয়াল স্কুল আর নটর ডেম কলেজে পড়ে পুরোপুরি শহরের মানুষ অনিন্দ্য। বাংলাদেশের শহর নিয়ে খুব আগ্রহ তাঁর। উচ্চশিক্ষা শেষে দেশের নগর আর শহরগুলো নিয়ে পড়াশোনা আর গবেষণা করবেন বলে জানান তিনি। একই বিভাগ থেকে বৃত্তির সুযোগ পেয়েছেন মো. মুনতাসীর। মুনতাসীর ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ে মাস্টার্স করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার শুরু থেকেই উন্নয়ন ক্ষেত্রে কাজ করার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, উচ্চশিক্ষা শেষে দেশে ফিরে উন্নয়ন খাতে কাজ করতে চাই। নিজের মেধার সর্বোচ্চটাই দেশকে দিতে চাই।
ছোটবেলা থেকে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তাসনিমা আফরিন। বর্তমানে পেশাও তাঁর শিক্ষকতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) প্রভাষক হিসেবেই কাজ করছেন। তাসনিমা নিউইয়র্কের রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। শেয়ারবাজার নিয়ে গবেষণায় বেশ আগ্রহ তাসনিমার। তাঁর ভাষ্য, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ভিন্ন আর বড়। সেখানে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের অস্থিতিশীল শেয়ারবাজারে কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করে আইবিএতে এমবি করেন তাসনিমা।
তাসনিমার মতোই ফুলব্রাইট বৃত্তি পেয়েছেন মনজিমা হক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন মনজিমা। তিনি জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।
বর্তমানে পেশায় গবেষক শরীফ আবদুল ওয়াহাব। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সহযোগী শরীফের অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ থেকে। শরীফ ওহাইও বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অধ্যয়ন নিয়ে মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন। শহরের দরিদ্রতা নিয়েই পড়াশোনা আর গবেষণায় আগ্রহ শরীফের। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শহরে দরিদ্রতার হার বাড়ছে। বাংলাদেশের এ সমস্যা কীভাবে কাটানো যায়, তা নিয়ে গবেষণা করতে চাই।’
শৈশব আর কৈশোরের পুরো সময়টা সৌদি আরবে কাটিয়েছেন নেয়ামা নজরুল ইসলাম। নেয়ামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে পড়াশোনা শেষে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে ব্র্যান্ড ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন। নেয়ামা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসন কলেজে এমবিএ করার সুযোগ পেয়েছেন। নেয়ামার আগ্রহ উদ্যোক্তা আর উদ্যোগ নিয়ে।
এই ছয় শিক্ষার্থীর সবার গন্তব্য এখন যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা আর গবেষণা শেষ করে প্রত্যেকেই দেশে ফিরে যাঁর যাঁর কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবেন। উচ্চশিক্ষার অভিজ্ঞতা থেকে রাঙাবেন নিজ জীবন আর বাংলাদেশ।
ফুলব্রাইটের আবেদন তথ্য 
বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী ও কমপক্ষে দুই বছর কর্ম-অভিজ্ঞতা আছে, এমন মেধাবী শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারেন। আবেদনকারীর বয়সসীমা ২৪ থেকে ৩০ বছর। প্রতিবছর ছয় থেকে সাতজন শিক্ষার্থী ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচন করা হয়। অনলাইনের মাধ্যমে বৃত্তির জন্য আবেদন করতে হয়। আবেদনের সময় অনলাইনে আবেদনপত্র ও সব অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও সার্টিফিকেটের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হয়। এ ছাড়া তিনটি লেটার অব রেফারেন্সও আপলোড করতে হয়। এ ছাড়া টোয়েফল স্কোর ও জিআরই/জিম্যাট স্কোর জমা দিতে হয়। আবেদনকারী টোয়েফল স্কোর ও জিআরই/জিম্যাট স্কোর ছাড়াই প্রাথমিক আবেদন করতে পারেন, কিন্তু প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পরে অবশ্যই স্কোর জমা দিতে হবে। সাধারণত, এপ্রিল-মে-জুন মাসে এই প্রোগ্রামের জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হয়। ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য ঢাকাস্থ আমেরিকান সেন্টারে যোগাযোগ করা যেতে পারে। বিস্তারিত জানা যাবে: foreign.fulbrightonline.org ওয়েবসাইট এবং http://dhaka.usembassy.gov/programs_for_undergrad_grad_students.html লিংক থেকে। এ ছাড়া goo.gl/ySZo06 লিংক থেকে অনলাইনে কীভাবে আবেদন জমা দিতে হয় ধারণা পাওয়া যাবে।













  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

আজ যা কল্পনা তা আগামীর বাস্তবতা

সুন্দর পিচাইসুন্দর পিচাই গুগল–এর নতুন সিইও। জন্ম ১৯৭২ সালের ১২ জুলাই ভারতের চেন্নাইতে। আইআইটি থেকে পড়াশোনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। তিনি অ্যানড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, ক্রোম ব্রাউজারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আমি সব সময় উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ভক্ত। সাধারণ মানুষের জন্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজ করার আনন্দ অন্য রকম হয়। গুগল ইনকরপোরেটেডের মাধ্যমে আমরা এ কাজটি সারা বিশ্বে করে যাচ্ছি। গুগলের মূল আদর্শই হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছানো।
আমার জন্ম চেন্নাইতে। আমি আইআইটি থেকে পড়াশোনা শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে আসি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার অন্যতম আগ্রহ ছিল কম্পিউটার। গুগলে কাজের সুযোগ পেয়ে আমি সেই আগ্রহের জায়গায় কাজ করার অনেক সুযোগ পেয়েছি। আমি ছোটবেলায় সংখ্যা মনে রাখতে পারতাম অনেক। অনেক ফোন নম্বর মুখস্থ করতে পারতাম। আমার চাচা মাঝেমধ্যেই আমাকে ফোন দিয়ে হারানো অনেক নম্বর জিজ্ঞেস করতেন। ২০০৪ সালে আমি গুগল অফিস গুগলপ্লেক্সে চাকরির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে যাই। সেদিন গুগল জিমেইল চালু করে। এপ্রিলের প্রথম দিন দেখে আমি ভেবেছিল জিমেইল আসলে গুগলের কোনো রসিকতা হবে।
তরুণদের ওপর আমার ভরসা অনেক বেশি। আমি নিজেও তরুণ বয়সে অনেক কিছু করার স্বপ্ন দেখতাম। এখনকার তরুণদের সাহস দেখে আমি শক্তি পাই। আমার মনে হয় আগামীর ই-কমার্স দুনিয়ার পুরোটার নেতৃত্ব দেবে তরুণেরা।
প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দুই দিকই আছে। টেলিভিশন থেকে শুরু করে মুঠোফোন—সবারই মন্দ দিক আছে। মন্দ দিক এড়িয়ে প্রযুক্তিকে উন্নয়নের জন্য কাজে লাগানোই হবে কাজের কাজ। এখন আমাদের হাতের মুঠোয় দুনিয়া চলে আসছে। স্মার্টফোন আসলে একেকটি কম্পিউটারের কাজ করে, যা আমাদের পকেটে ঘুরছে সব সময়। প্রযুক্তি দিয়ে দুনিয়া বদলে দেওয়া সম্ভব এখন। মুঠোফোন আসার আগে আমি একসঙ্গে অনেক কাজ করতে পারতাম না। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন মিটিং আর ই-মেইল একসঙ্গে করতে পারছি আমরা। দুনিয়া সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
মানুষের বুদ্ধিমত্তা বাড়ছে। সেই হিসেবে প্রযুক্তির দক্ষতা আর সক্ষমতাও এগিয়ে চলছে। মানুষের বুদ্ধি আর প্রযুক্তির দক্ষতা যেন এখন একটা বড় আনন্দময় ভ্রমণ। আগামীকাল কী প্রযুক্তি আসবে, তা মানুষ বুদ্ধি দিয়ে আগেই জেনে নিচ্ছে। আজ যা কল্পনা তা আগামীর বাস্তবতা।
গুগলে আমি একটাই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষকে আরও বেশি প্রযুক্তি সংযোগ আর কানেক্টিভিটিতে আনা যায় তা নিয়ে ভাবি আমি। মুঠোফোন দিয়ে মানুষকে ইন্টারনেটে বেশি মাত্রায় সংযোগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির মাধ্যমে বদল আনতে সব সময় আমরা ভাবি। চালকবিহীন গাড়ি থেকে শুরু করে গুগল গ্লাস, এ সবের মাধ্যমে প্রতিদিনকার জীবনে প্রযুক্তির ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।
আমাদের সামনে সমস্যা কী আমরা জানি, সমস্যা কীভাবে সমাধান করতে হয় সেটাও আমরা বুঝি। সাধারণ মানুষের নানা সমস্যার সমাধান করা বেশ কষ্টকর হলেও প্রযুক্তিবিদেরা সমস্যার সমাধান নিয়েই সময় কাটান। ভারতসহ পৃথিবীর অনেক জায়গায় এখনো ইন্টারনেট সবার জন্য সহজলভ্য হয়নি। এই বিশাল সংখ্যার মানুষকে কানেক্টিভিটির আওতায় আনলে সারা পৃথিবীরই সার্বিক উন্নয়ন হবে।
এই পৃথিবীতে চার শ কোটির বেশি মানুষ এখনো ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে আছে। আমরা এ অবস্থা বদলাতে চাই। আমরা সবাইকে ইন্টারনেটের ছাতার নিচে আনার জন্য ‘লুন’ নামের বিশাল একটি কর্মসূচি নিয়েছি। প্রায় দুই বছর আগে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছি। তখন এই বেলুন তিন দিনের জন্য আকাশে উড়তে পারত, প্রযুক্তির দারুণ কৌশলে এই বেলুন এখন টানা ছয় মাস আকাশে ভেসে থ্রিজি সেবা দিতে পারছে।
তরুণ প্রকৌশলীদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে সব সময় বেশি চিন্তা না করা। আমি নিজে প্রকৌশলী হিসেবে সবাইকে যার যা করতে ভালো লাগে, তাই করার উৎসাহ দিই। আগ্রহের জায়গায় কাজ করলে অনেক আনন্দ পাওয়া যায়। বড় মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলে তা কাজে লাগানো উচিত। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। তোমার যদি কোনো কিছুর মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়, তা নিয়েই কাজ করা উচিত। আমি সারা জীবনই এই আদর্শে কাজ করে যাচ্ছি।

সূত্র: ইন্টারনেট। দ্য ভার্জ, এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকার অবলম্বনে 

  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

প্রত্যাখ্যানের পর প্রত্যাখ্যান হয়েছি




জ্যাক মা অনলাইনভিত্তিক পৃথিবীর অন্যতম বড় কোম্পানি আলিবাবা ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। তাঁর আসল নাম মা ইয়ুন, জন্ম চীনের জিজিয়াং প্রদেশে ১৯৬৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেবে জ্যাক মা পৃথিবীর ৩৩ তম শীর্ষ ধনী, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে তিনি এই বক্তব্য দেন।
জ্যাক মাপ্রতিদিন আমাদের সাইটে কয়েক কোটি ক্রেতা প্রবেশ করেন। আমরা চীনে প্রায় ১৪ মিলিয়ন নতুন চাকরি তৈরি করেছি। আমাদের শুরুটা ছিল মাত্র ১৮ জন মানুষ দিয়ে। এখন আমরা ৩০ হাজার মানুষ কাজ করি। ছোট একটি রুম থেকে শুরু করে আমাদের এখন কয়েক গুণ বড় অফিস হয়েছে। ১৫ বছর আগে আমরা কিছুই ছিলাম না। ১৫ বছর আগের কথা ভাবলে আমরা এখন বেশ বড় কোম্পানি, কিন্তু আগামী ১৫ বছর পরের কথা চিন্তা করলে আমরা এখনো শিশু, ছোট বাচ্চা। আমার বিশ্বাস, ১৫ বছর পর মানুষ ই-কমার্সের কথা ভুলে যাবে। তাদের কাছে ই-কমার্সের অস্তিত্ব বিদ্যুতের মতো স্বাভাবিক মনে হবে।
আমাদের কোম্পানি আলিবাবার আইপিওর মূল্যের পরিমাণ বেশ ছোটই, মাত্র ২৫ বিলিয়ন। আমরা সারা পৃথিবীর অন্যতম বড় মার্কেট ক্যাপিটাল কোম্পানি এখন। আমার দল আর আমাকে আমি মাঝেমধ্যেই বলি, এটা কি সত্য কিছু? আমরা ততটা বড় নই, যতটা দেখায়। বছর খানেক আগেও মানুষ বলত, আলিবাবার ব্যবসার মডেল ভয়ংকর। আমাদের চেয়ে অ্যামাজন ভালো, গুগল অসাধারণ বলে সবাই ভাবত। আসলে তখন আলিবাবার মতো ব্যবসার মডেল যুক্তরাষ্ট্রে ছিল না বলেই আমাদের নিয়ে সবাই এমনটা বলত। আমি নিজেকে ও অন্যদের বলতাম, লোকজন যা ভাবে, আমরা তার চেয়ে ভালো। কিন্তু এখন সবাই বদলে গেছে, আমাদের অনেক বড় বলে ভাবে সবাই। আমি সবাইকে বলতে চাই, আমরা বড় কেউ নই। আমরা ১৫ বছরে পা রাখা একটি কোম্পানি মাত্র। এই কোম্পানির জন্য ২৭ বা ২৮ বছরের কিছু তরুণ এমন কিছু কাজ করছেন, যা কিনা মানুষ এর আগে কখনো চেষ্টা করেনি।
১৯৬৪ সালে আমার জন্ম। চীনে তখন সবে সাংস্কৃতিক আন্দোলন শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে পরীক্ষা দিতে হয়, আমি সেখানে তিনবার ফেল করেছিলাম। আমি আরও অনেকবারই ফেল করেছি। প্রাইমারি স্কুলে পরীক্ষার সময় দুবার ফেল করেছিলাম। মাধ্যমিক স্কুলেও তিনবার ফেল করেছি। আমার শহর হাংজুতে মাত্র একটি মাধ্যমিক স্কুল ছিল। বেশ খারাপ ছাত্র ছিলাম দেখে আমাদের প্রাথমিক স্কুল থেকে পড়া কাউকে মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি করতে চাইত না কেউ। বারবার ভর্তিতে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বেশ উপকারই হয়েছিল আমার!
এখনো আমাকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে আমি চাকরির জন্য চেষ্টা করেছিলাম। সেখানেও আমাকে ৩০ বারের মতো প্রত্যাখ্যাত হতে হয়। যখন চীনে কেএফসি আসে, তখন ২৪ জন লোক চাকরির জন্য আবেদন করেন। সেখানে ২৩ জন মানুষ চাকরির সুযোগ পান। শুধু একজনই বাদ পড়েন, সেই মানুষটি আমি। এমনও দেখা গেছে, পাঁচজন মানুষের মধ্যে চারজনের চাকরি হয়েছে, আর বাকি একজন আমি নেই। প্রত্যাখ্যানের পর প্রত্যাখ্যানই দেখেছি আমি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যও আবেদন করেছিলাম, সেখানে আমাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। ১০ বার লিখেছিলাম, ‘আমি ভর্তি হতে চাই।’ ১০ বার আবেদন করেছি, আর প্রতিবারেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছি।

আমি ১২–১৩ বয়স থেকে ইংরেজি শেখা শুরু করি। চীনে তখন ইংরেজি শেখার সুযোগ ছিল না। কোনো ইংরেজি বইও পাওয়া যেত না। আমি যে হোটেলে বিদেশি পর্যটক আসত, সেখানে গিয়ে বিনে পয়সায় পর্যটকদের গাইডের কাজ করতাম। এরপর নয় বছর এই কাজ করে গেছি। তাতেই আমি পশ্চিমা ঢঙে ইংরেজি বলা শিখেছি। বিদেশি পর্যটকদের সঙ্গে ঘোরাফেরা আমার মনকে অনেক বড় করে দিয়েছে। স্কুল আর মা-বাবার কাছ থেকে যা শিখতাম, আর পর্যটকদের কাছ থেকে যা জানতাম, তা ছিল ভিন্ন। সে জন্যই আমি নিজের জন্য ভিন্ন এক অভ্যাস গড়ে তুলি নিজের মধ্যে। আমি যা দেখি, যা পড়ি, তা মন দিয়ে পড়ি-চিন্তা করি।
১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পরে সিয়াটলে আমি প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাই। ইন্টারনেটের গতি ছিল তখন ভীষণ ধীর। আমার বন্ধু আমাকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেয়। ভয়ে কম্পিউটার স্পর্শ করিনি সেদিন। চীনে কম্পিউটারের দাম ছিল অনেক, নষ্ট হয়ে গেলে তখন দাম দিতে পারতাম না। বন্ধুর উৎসাহে ইন্টারনেটে সার্চ করি। সেবারই প্রথম ই-মেইল শব্দটি শুনি।
আমি ইন্টারনেটভিত্তিক কিছু করার চেষ্টা শুরু করি। সেই সময়টায় বেশ জনপ্রিয় একটি নাম ছিল ইয়াহু। আমাদের কোম্পানির নাম আলিবাবা দিতে চেয়েছিলাম। ১০ থেকে ২০ জনের বেশি মানুষকে জিজ্ঞেস করি, আলিবাবাকে তারা চিনে নাকি? সবাই বলেছিল ‘হ্যাঁ’। ‘আলিবাবা ও ৪০ চোর’ গল্পের কারণে সবাই আলিবাবাকে চিনে। তাই আমি এই নামই গ্রহণ করি।

শুরু থেকেই আমরা অনলাইনে বিশ্বাসের একটি জায়গা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষ একে অন্যকে কম বিশ্বাস করে। এমন একটা পরিস্থিতিতে আমরা প্রতিদিন ৬০ মিলিয়ন বার লেনদেন করি। অনলাইনে মানুষ একজন আরেকজনকে চেনে না। আমি আপনাকে চিনি না, কিন্তু আমি আপনাকে পণ্য পাঠাই। আপনি আমাকে চিনেন না, কিন্তু আপনি আমাকে টাকা ঠিকই পাঠান। বিশ্বাসের জায়গাটা বড় করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আলিবাবার সাফল্যের অন্যতম লুকানো সূত্র হচ্ছে আমাদের এখানে অনেক নারী কাজ করেন। শুধু আলিবাবায় ৪৭ শতাংশ কর্মী হচ্ছেন নারী। আমাদের সব অফিস মিলিয়ে ৫৩ শতাংশ কর্মী নারী। আমাদের ম্যানেজমেন্টে ৩৩ শতাংশ হচ্ছেন নারী, আরও উচ্চপর্যায়ে আছেন ২৪ শতাংশ। একুশ শতকে আপনাকে জিততে হলে অন্যকে স্বাবলম্বী করতে হবে। নারী-পুরুষ সবাইকে নিয়ে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। আপনি অন্যের অবস্থা উন্নতি করতে পারলেই আপনি সফল। চীনের ৮০ শতাংশ তরুণ সফল হয়েছেন শুধু কাজের গুণে। তাঁদের বড়লোক বাবা নেই বা ব্যাংকের লোন নেই; শুধু কাজ করেই তাঁরা সফল। জীবনে সফল হতে গেলে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হয়।
শুরুর দিকে আমাকে সবাই পাগল বলত। টাইম ম্যাগাজিনে আমাকে পাগল জ্যাক বলা হয়েছিল। আমার মনে হয় পাগল হওয়া ভালো। আমরা পাগল, কিন্তু আমরা নির্বোধ নই। কোনো একদিন আমি স্কুলের শিশুদের আমার কথা বলতে যাব। আমি তাদের বলতে চাই, নিজের মনকে বড় করো, নিজের সংস্কৃতিকে বড় করো। নিজের মূল্যবোধকে শক্ত করো, নিজের বুদ্ধির বিকাশ ঘটাও। তুমি যদি কিছু করতে চাও, তাহলে প্রত্যাশা করা শিখতে হবে।
সূত্র: ইন্টারনেট। ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ সুইজারল্যান্ডে দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘অ্যান ইনসাইট, অ্যান আইডিয়া উইথ জ্যাক মা’ নামের বিশেষ সেশনে দেওয়া বক্তব্যের নির্বাচিত অংশের অনুবাদ 








  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

একের ভেতরে তিন



চ্যাম্পিয়ন শিরোপাসহ মানস চৌধুরীতিনি সংগীতশিল্পী, তিনি তরুণ দন্ত চিকিৎসক। তিনি খেলোয়াড়। নাম তাঁর মানস চৌধুরী। সর্বশেষ জাতীয় টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মানস। এটি তাঁর টানা চতুর্থ শিরোপা। তবে টিটি খেলোয়াড় হওয়ার শুরুর দিনগুলো এত মসৃণ ছিল না মানসের।
ছোটবেলায় চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের অগ্রণী সংঘ ও নবীন মেলায় টেবিল টেনিস খেলতেন মানস চৌধুরী। পড়ালেখা হেলায় ফেলে টেবিল টেনিস নিয়ে পড়ে থাকায় অভিভাবকদের অনেক কটুকথাও শুনতে হয়েছে তখন। ‘প্র্যাকটিসের কোনো জায়গা নেই, টেবিল নেই। অনেক কষ্ট করে অনুশীলন করতাম। এখনো ফ্রেন্ডস ক্লাব, নবীন মেলায় দুই–চারটা টেবিল রয়েছে। ওসবই এখন চট্টগ্রামের টিটির একমাত্র ভরসা।’—বললেন মানস।

কিশোর মানস ১৯৮৮ সালে প্রথম ঢাকায় খেলতে যান। ১৯৯০ সালে প্রথম জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রথম জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন। এর আগে চট্টগ্রাম থেকে এ কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি কেউ। ১৯৯২ সালে ভারতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ দলে জুনিয়র হিসেবে সুযোগ পান সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণ মানস। স্বপ্নের পথে মানসের যাত্রা শুরু তখন থেকেই।


মানস সার্ক এশিয়ান টিটি ও দক্ষিণ এশিয়ান টিটিতে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন। এ ছাড়া তিনি বিশ্বকাপ টিটি, ওয়ার্ল্ড টিম টিটি, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমস টিটিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বাবা প্রয়াত সংগীতশিল্পী প্রবাল চৌধুরী ছেলেকে খেলাধুলায় সব সময় উৎসাহ জোগাতেন। মানস বলেন, ‘বাবা কি খেলাধুলা, কি গান—সবকিছুতে আমাকে উৎসাহ দিতেন।’

হ্যাঁ, মানস চৌধুরী সংগীতশিল্পীও। তাঁর গানের অ্যালবাম বের হয়েছে, প্লেব্যাকও করেছেন। বাবা প্রবাল চৌধুরী ও পিসি উমা খানের গান শুনতে শুনতে মানসের শিল্পী হয়ে ওঠা। গানের জগতে মানসের নাম রঞ্জন চৌধুরী। ২০০১ সালে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম বের হয়।
পড়ালেখার ক্ষেত্রেও অগ্রগামী মানস। পেশায় তিনি দন্ত চিকিৎসক। কিন্তু নেশাজুড়ে টেবিল টেনিস। তাই তো এখনো প্রতিদিন ছুটে যান সবুজ টেবিলের টানে বিভিন্ন ক্লাবে। প্রতিদিন সকালে কিংবা বিকেলে দুই ঘণ্টা ঘাম ঝরান প্র্যাকটিসে।

কিছুটা অভিমানীও মানস। একটা সময় তিনি খেলা ছেড়েও দিতে চেয়েছিলেন। পরে সিনিয়রদের অনুরোধে ২০০৭ সালে আবার খেলায় ফেরেন। সে বছর ঢাকা জেলার হয়ে দলগত ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হন। একই বছর কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে ২৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ হয় ১৫তম।
এত সাফল্যে
র পরও কোনো স্বীকৃতি নেই। নেই কোনো প্রচার। এই জায়গাতেই মানসের মতে, ‘টেবিল টেনিসে বাংলাদেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এই খেলায় আরও মনোযোগ দেওয়া দরকার।’
মানস নিজেও এই খেলাকে এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখেন।











  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS

শীর্ষে ফারজানা



ফারজানা মুবারককৃতিত্ব গড়া যেন তাঁর ছোটবেলার স্বভাব। সেই যে স্কুলের বিতর্ক মঞ্চ কিংবা সাংস্কৃতিক আয়োজন থেকে জানান দিয়েছিলেন নিজের প্রতিভার। আরেকটু বড় হয়ে ক্লাস ক্যাপ্টেন হয়ে যে আভা ছড়িয়েছেন নিজের চারপাশে, তা কী বন্ধু বা নিকটজনদের কাছে ভবিষ্যৎ-বার্তা ছিল না? আর এসবই যেন পূর্ণতা পেল সেদিন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে নেওয়া ‘চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল’ পুরস্কারটি হাতে পেয়ে। বলছি ফারজানা মুবারকের কৃতিত্বের কথা।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স বিভাগের এ শিক্ষার্থীর কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন ‘চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল’ পুরস্কার। ফারজানা স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৪-এ ৪-ই পেয়েছেন।
উচ্ছ্বাসভরা কণ্ঠে ফারজানা জানান, ‘ছোটবেলা থেকে আমার ইচ্ছা ফার্মাসিস্ট হওয়ার। তাই ফার্মেসি বিষয় নিয়ে পড়েতে আসা। এটি আমার স্বপ্ন পূরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।’
বাকি আর রইল কোথায়, ফার্মাসিস্ট হতে এখন তো শুধু নিবন্ধনটাই বাকি! ফারজানার সোজাসাপ্টা জবাব, ‘আমি চাই হসপিটাল ফার্মাসিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে। এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়তে যেতে চাই।’

কথা বলতে বলতে ফারজানার কাছে জানা গেল, জন্ম তাঁর ঢাকায় হলেও বাবা মুবারক হোসেন খানের কর্মস্থল কুয়েতে হওয়ায় সেখানেই শৈশব ও কৈশোর কেটেছে তাঁর। আর কুয়েতের ইন্ডিয়ান সেন্ট্রাল স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

স্কুলে বেশ নেতা গোছের ফারজানা দশম শ্রেণিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্লাস ক্যাপ্টেন। তারও আগে বিতর্কে হাতেখড়ি ফারজানার। নিজের স্কুলকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায়। গানের গলাও তৈরি সেই ছোটবেলা থেকেই। স্কুলের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনে গান গাইতে মঞ্চে ওঠা তাঁর জন্য ছিল অবধারিত।
ফারজানা জানান, ‘আমাদের স্কুলের হয়ে বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে, এ ছাড়া সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায়ও অংশ গ্রহণ করেছি।’ শুধুই কি অংশগ্রহণ! এসব বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় সেরা ও রানারআপ হয়ে নিজের ঝুলিতে পুরেছেন নানা পুরস্কারও।

শুধু নিজের জন্যই নয় ফারজানা ভাবেন সাধারণ মানুষের কথাও। ফারজানা জানান, ‘আমাদের দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান সাধারণ মানুষকে ভুল ও ভেজাল ওষুধ খাওয়ায়। স্বেচ্ছাসেবী কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভেজাল ওষুধ শনাক্তকরণ নিয়েও কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।’










  • Digg
  • Del.icio.us
  • StumbleUpon
  • Reddit
  • RSS