অবহেলা
..............................SR_SPORTS
বিকেলে
নরম
রোদের
মধ্যে
পুকুর
পাড়ে
একটি
কদম
গাছে
হেলান
দিয়ে
বসে
আছি।
টেস্ট
পরীক্ষা শেষ
হয়েছে
সেই
কবে।
মনটা
খুব
ভাল
নেই।
হঠাৎ
করে
সেই
একটি
বিদঘুটে চিন্তা
মাথায়
এসে
উঁকি
দিল।
প্রায়
দুই
বছর
পার
হয়ে
গেল
এখনও
ফাইনাল
পরীক্ষা হওয়া
তো
দূরে
থাক
তারিখও
পড়েনি।
তাহলে
অনার্স
শেষ
করবো
কবে?
চার
বছরের
কোর্স
শেষ
করতে
প্রায়
সাত
বছর
লেগে
যাবে?
এ
আবার
কেমন
কথা।
এখন
আমরা
যুবক।
আমাদের
জীবনের,
সময়ের
মূল্য
কি
এতই
কম
যে,
অনার্স
শেষ
করতে
সাতটি
বছর
অপেক্ষা করতে
হবে?
এসব
চিন্তা
হয়তো
আমি
করলেও
অনেকে
করে
না।
বিশেষ
করে
যারা
আমাদের
নীতি
নির্ধারক। তারা
করলে
হয়তো
আমরা
যারা
কলেজ
স্টুডেন্ট তাদের
কপালে
এমন
দুর্দশা হতো
না।
যাই
হোক,
এসব
চিন্তা
মাথায়
খেলা
করছে,
এমন
সময়
বন্ধু
খোকন
পেছন
থেকে
বলে
উঠল,
কিরে
রবি
এত
আনমনে
কি
ভাবছিস?
ওর
কথায়
সম্বিৎ
ফিরে
পেয়ে
হাসির
চেষ্টা
করে
বললাম
কখন
এলি?
আয়
বস।
সে
বলল,
এই
তো
এক্ষুণি। হাইস্কুল থেকে
আমরা
দু’জন খুব ভালো
বন্ধু।
ফুল
আর
গন্ধ
যেমন
একই
সাথে
থাকে,
ঠিক
তেমনি
আমরা
দু’জন পাশাপাশি থাকতে
পছন্দ
করি।
খোকন
এবার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি
হয়েছে।
কি
একটা
ছুটিতে
বাসায়
এসেছে।
আমরা
দু’জন ঘুরতে পছন্দ
করি।
তাই
এবারও
ঠিক
করেছে
একটা
পুরাতন
কুটুম
বাড়ি
যাবে।
ছোট
বেলায়
নাকি
ওর
বাবার
হাত
ধরে
সেখানে
গিয়েছিল। আমি
বললাম
তুই
তো
চিনতে
পারবি
না।
সে
বলল
‘‘মুখ
যার
মুল্লুক তার’’
একটা
প্রবাদ
আছে
জানিস
না?
ওর
কথা
শুনে
হেসে
বললাম
ওহ!
ঠিক
তাই।
চল
কালকেই
যাই।
পরদিন
পুরাতন
কুটুম
বাড়ির
উদ্দেশ্যে বের
হলাম।
ত্রিশ
মাইল
পৌঁছে
ব্যাটারি চালিত
ভ্যান
হতে
নামলাম
দু’জন। ওখান থেকে
মানিকহার পর্যন্ত ভ্যানে
(পায়ে
চালানো)
যেতে
হবে।
২৫
টাকা
ভাড়া
একটি
ভ্যান
ঠিক
করলাম।
হোটেল
হতে
মিষ্টি
কিনে
ভ্যানে
উঠে
বসলাম।
ভ্যান
যখন
চলতে
শুরু
করল,
তখন
হঠাৎ
চালকের
ডান
হাতের
দিকে
আমার
দৃষ্টি
গেল।
দেখলাম
হাতটি
পঙ্গু।
বল
পায়
হয়তো
সামান্য। ভ্যান
চলছে
ধীর
গতিতে।
বললাম
ভাই,
আপনার
হাত
তো
অকেজো।
তা
সরকারের পক্ষ
থেকে
প্রতিবন্ধী হিসেবে
কিছু
পান
না?
তিনি
কষ্টের
নিঃশ্বাস ছেড়ে
বললেন,
নাহ!
আমার
মতো
মানুষের দেবে
কেন,
যাদের
সাথে
চেয়ারম্যান, মেম্বরদের ভালো
সম্পর্ক তাদের
দেয়।
অথচ
তাদের
হাত-পা আমার মতো
পঙ্গু
নয়।
তার
শেষের
কথা
কান্নার মতো
শুনালো। চালকের
মুখে
পায়ের
কথা
শুনে
তার
পায়ের
দিকে
তাকিয়ে
দেখি
আর
এক
যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য।
আমার
চোখ
যেন
বিশ্বাস করতেই
চাইছে
না।
বুকের
ভেতর
এক
অজানা
ব্যথা
মোচড়
দিয়ে
উঠল।
তার
ডান
পাও
প্রায়
অকেজো।
কত
কষ্ট
করে
দু’মুঠো ভাতের জন্য
ভ্যান
টানছে।
দেখলেই
অবাক
হতে
হয়।
আমার
মুখ
দিয়ে
কথা
বের
হতে
চাইছে
না।
অনেক
কষ্টে
কিছুক্ষণ পর
বললাম
ভাই,
আপনি
ইউনিয়ন
কাউন্সিলে আবার
যাবেন।
চেয়ারম্যানকে ভালো
করে
আপনার
সমস্যার কথা
বলবেন।
দেখবেন,
অবশ্যই
আপনার
একটি
ব্যবস্থা করে
দেবেন।
এতটা
শক্ত
মনের
মানুষ
কেউ
হতে
পারে
না
যে,
আপনার
মতো
পঙ্গু
মানুষের প্রতি
একটু
দয়া
করবে
না।
এর
পর
আরো
অনেক
কথা
বললাম,
সাধ্য
মতো
পরামর্শ দেয়ার
চেষ্টা
করলাম।
দুপুর
১-২০ মিনিটে আমরা
আমাদের
গন্তব্যের প্রায়
কাছে
পৌঁছলাম। ভ্যান থেকে
নেমে
খোকনকে
বললাম
ভাড়া
ছাড়া
কিছু
টাকা
বেশি
দিতে।
সে
১০০
টাকার
একটি
নোট
বের
করে
দিল।
টাকাটা
পেয়ে
ভ্যানচালক বেশ
খুশি
হলেন।
তার
হাতে
হাত
রেখে
বললাম
ভাই
আমরা
ছাত্র,
আমাদের
জন্য
দোয়া
করবেন।
বিদায়
নিয়ে
আল্লাহ
হাফেজ
বলে
পিছনে
ফিরলাম। নিজেকে
মনে
মনে
ধিক্কার দিলাম।
ভাবলাম,
কেন
এমন
আমাদের
এ
সমাজ।
এখানে
গরিবদের কেন
এত
অবহেলা
করা
হয়।
এ
সব
ভাবতে
কখন
যেন
দু’চোখে পানি এসে
গিয়েছিল বুঝতেই
পারিনি।
বাসা
থেকে
যে
আমেজ
নিয়ে
বের
হয়েছিলাম সেই
আনন্দময় মনটি
ছুটে
পালিয়েছে ভ্যান
চালকের
করুণ
অবস্থা
দেখে।
গুমরা
মুখ
নিয়েই
আমরা
যার
বাড়ি
যাব
তার
নাম
বলে
এক
ব্যক্তির কাছে
ঠিকানা
জিজ্ঞাসা করলাম।
আমরা
যার
বাড়ি
যাচ্ছি,
তিনি
একজন
মাদরাসার শিক্ষক। এলাকায়
বেশ
পরিচিতি। তাই
ঠিকানা
জানতে
কষ্ট
হলো
না।
জানলাম
এখনও
পনের
মিনিট
হাঁটতে
হবে।
শুরু
করলাম
হাঁটা।
মেঠে
পথ।
রাস্তায় মাঝে
মাঝে
কাদা।
পাঁচ
মিনিট
হাঁটার
পর
খোকনকে
বললাম
কিরে
খোকা,
এখন
গেলে
খেতে
দেবে
তো?
ও
দুষ্টুমির হাসি
হেসে
বলল
দেবে
না
মানে।
তিন
শত
টাকার
মিষ্টি
নিয়ে
যাচ্ছি,
জামাই
আদরে
রাখবে
দেখিস।
ওর
মুখে
এমন
কথা
শুনে
কষ্টের
মাঝেও
এক
ঝাঁক
মিষ্টি
হাসি
আমার
ঠোঁটে
এসে
হাজির
হল।